
Cholesterol-Triglyceride: কোলেস্টেরল আর ট্রাইগ্লিসারাইড গুলিয়ে ফেলবেন না, তফাৎ চিনে নিন
কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড (Cholesterol-Triglyceride) বেড়ে গেলে দুটোই হার্টের মারাত্মক ক্ষতি করে। দুই ধরনের লিপিড রক্তে বাড়তে শুরু করলে তা থেকে হাজারটা রোগের জন্ম হয়। কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ে, ওবেসিটি, স্ট্রেস, হাইপারটেনশন বেড়ে যায়। সুস্থ শরীর রাখতে গেলে এই দুই লিপিডের লেভেল মাজে মাঝেই চেকআপ করিয়ে নিয়ে হয়।
অনেকেই ভাবেন কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসিরাইড এক। আসলে তা নয়। বিস্তর ফারাক আছে। শরীরে রোগভোগের জন্য কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের ভূমিকা অনেকটা একই। তবে দুই লিপিডের কাজ করার পদ্ধতি ও উৎস আলাদা।
কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের (Cholesterol-Triglyceride) মধ্যে ফারাক কোথায়?
কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড দুটোই আলাদা রকমের লিপিড। কোলেস্টেরল শরীর নিজে থেকে তৈরি করে। প্রতি গ্রাম কোলেস্টেরল তৈরিতে একটা গোটা দিন সময় নেয় যকৃত। প্রতি দিনের খাবার থেকেও সামান্য পরিমাণ কোলেস্টেরল শরীর পায়। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরলের যতটা প্রয়োজন, ততটা স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়ে যায়৷ তাই অনিয়মের হাত ধরে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ট্রাইগ্লিসারাইড আসে বাইরের খাবার কিংবা অতিরিক্ত ক্যালোরি থেকে। শরীর ট্রাইগ্লিসারাইডে (cholesterol- triglyceride) রূপান্তর করে মেদকোষে শক্তি হিসেবে জমা রাখে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী এই ট্রাইগ্লিসারাইড বেরিয়ে এসে শরীরে শক্তির চাহিদা মেটায়। কিন্তু নানা কারণে শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বা পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, তখনই সমস্যা তৈরি হয়। রক্তে ভাল কোলেস্টেরল (HDl)-এর মাত্রা কমলে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যায়।
কোলেস্টেরল কোষ এবং নির্দিষ্ট হরমোন তৈরি করে। ভিটামিন ডি ও পিত্ত তৈরিতে সাহায্য করে।
ট্রাইগ্লিসারাইড অব্যবহৃত ক্যালোরি সঞ্চয় করে রাখে এবং শরীরকে শক্তি সরবরাহ করে।
‘লিপিড প্রোফাইল’ বলে যে রক্ত পরীক্ষাটি করানো হয়, সেটা দিয়েই ট্রাইগ্লিসারাইড আর কোলেস্টেরলের পরিমাপ জানা যায়।
রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে গেলে প্যানক্রিয়াটাইটিস, ফ্যাটি লিভার হতে পারে।
দুই লিপিডই নিয়ন্ত্রণে রাখুন, না হলেই বিপদ
কোলেস্টেরল স্বাভাবিক হলেও ট্রাইগ্লিসারাইড (Cholesterol-Triglyceride) বেশিমাত্রায় থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি হওয়া মানে ধরে নিতে হবে শরীর ঠিক মতো তার শক্তিক্ষয় বা শক্তিসঞ্চয় করছে না।
দুই লিপিড কমাতেই লাইফস্টাইল মডিফিকেশনের ওপর জোর দিতে হবে। জীবনযাত্রায় অনিয়ম দূর করলে ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবেয
ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে হলে-– সাধারণ কার্বোহাইড্রেট, যেমন চিনি এবং সাদা ময়দা বা ফ্রুক্টোজ দিয়ে তৈরি খাবার ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়াতে পারে। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
প্যাকেটজাত খাবার, জাঙ্ক ফুড থেকেই সমস্যা তৈরি হয়। এগুলো খাওয়া চলবে না।
অতিরিক্ত ক্যালোরি ট্রাইগ্লিসারাইডে (Cholesterol-Triglyceride) রূপান্তরিত হয় এবং চর্বি হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়। কাজেই ওজন কমাতে হবে।
অ্যালকোহলে ক্যালোরি এবং চিনি বেশি থাকে, তাই অ্য়ালকোহলের মাত্রা কমাতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে পারে।
কোলেস্টেরল কমাতে–কোলেস্টেরল বেড়ে গেলেই প্রথমেই পরিবর্তন আনতে হয় রোজকার ডায়েটে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিয়মিত শরীরচর্চারও প্রয়োজন আছে। শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। শরীরে মেদ জমলেই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে, আর ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। তেল-মশলা জাতীয় খাবারের আধিক্য, কম নড়াচড়া, শরীরচর্চায় অনীহা, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল, মানসিক চাপ, ট্রান্স ফ্যাটের বাড়াবাড়ি ইত্যাদি কারণে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। তাই কোলেস্টরল না কমালে পরবর্তীতে নানারকম শারীরিক সমস্য়া দেখা দেবে।