
রাতে ডিনারের পরে গরম দুধ (Milk) খাওয়ার রেওয়াজ থাকে অনেক পরিবারেরই। ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া করেন যাঁরা তাঁরা অনেকেই রাত ৮টার মধ্যে ডিনার সেরে নেন, ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ খেয়ে নেন। বয়স্করা বেশিরভাগই রাতে দুধ খেয়ে ঘুমোতে যান। এখন কথা হল, ঘুমোতে যাওয়ার আগে গরম দুধ খাওয়া ভাল না খারাপ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুধ (Milk) সকলের জন্য সমান উপকারি নয়। অনেকের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, ফলে তারা দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য খেতে পারেন না। এ ছাড়াও বহু মানুষের সমস্যা, দুধ খেলে গ্যাস হয়ে যাওয়া, হজমের গোলমাল হওয়া। বিশেষত বয়স্কদের এই সমস্যা খুব বেশি দেখা যায়। আবার যাঁরা দুধ হজম করতে পারেন তাঁদের জন্য রাতে ঘুমোবার আগে উষ্ণ গরম দুধ খুবই উপকারি। চলুন দেখে নেওয়া যাক, রাতে দুধ খাওয়ার ভাল আর খারাপ দিক।
কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
দুধে (Milk) থাকে ল্যাকটোজ। এই ল্যাকটোজ হল এক ধরনের মিল্ক সুগার। আমাদের মানবশরীরের ইনটেস্টিনাল বা অন্ত্রে ল্যাকটেজ নামক একটি এনজাইম বা উৎসেচক থাকে। এই উৎসেচক দুধের ল্যাকটোজকে ভাঙতে সাহায্য করে। শরীরে যদি এই ল্যাকটেজ উৎসেচক কম পরিমাণে থাকে, তাহলে দুধ হজম হয় না। সঙ্গে গ্যাস, পেট ব্যথার মতো সমস্যা দেখা যায়।
একটা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, দুধ হজম করার এই উৎসেচক ‘ল্যাকটেজ’ দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের শরীরে প্রাকৃতিকভাবেই খুব কম, তাই এসব দেশে দুধ খেয়ে সমস্যাও বেশি।
বয়স্কদের কেন দুধ খেলেই গ্যাস হয়?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ল্যাকটেজের পরিমাণ কমতে শুরু করে। উৎসেচকের ঘাটতির ফলে দুধ (Milk) এক্কেবারে হজম হতে চায় না। উল্টে গ্যাস তৈরি হয়ে বিপত্তি শুরু হয়। তাই বয়স বাড়লে দুধ খাওয়ার বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। তা ছাড়া, বয়স হলে অনেকেই মনে করেন, রাতে শোওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিলে পরের দিন শরীর চাঙ্গা লাগবে, বয়সের ভারে নুইয়ে পড়তে হবে না। কিন্তু এমনটা করা উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। দুধ ঠিকমতো হজম না হলে পেটে অস্বস্তি, গ্যাস হয়ে রাতে ঘুমের বারোটা বাজতে পারে। যার ফলাফল আরও খারাপ।
বিশেষজ্ঞরা সবসময় পরামর্শ দেন- দুধ খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না। এতে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস— দু’ধরনের সমস্যাই হয়। রাতে দুধ খেলে অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করে তার পর ঘুমোতে যান। বয়স্করা চেষ্টা করুন রাতে দুধ না খেতে। আর খেলেও পরিমাণে কম। দুধে যাঁদের খুব সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের দুধ না খাওয়াই শ্রেয়।
ভাল দিক
দুধে (Milk) থাকে কেসিন ট্রিপটিক হাইড্রোলাইসেট নামে একটি উপাদান। এর প্রভাবে শরীরে ক্লান্তি ও মানসিক চাপ দূর হয়। তাড়াতাড়ি গাঢ় ঘুম আসে। এর পাশাপাশি, দুধে এমন কিছু প্রোটিন আছে যা মানসিক উদ্বেগ কমায়। শরীর ও মন শান্ত করতে সাহায্য করে। এর প্রভাবে ঘুমও দ্রুত আসে।