
ডায়েট মানে হল ব্যালান্সড চার্ট। মানে যার শরীরে যতটা সয়, তাকে ঠিক ততটাই খাবার দেওয়া। ডায়েটে যেমন কী খাবেন তা গুরুত্বপূর্ণ, কতক্ষণ অন্তর খাবেন, তা মেনে চলাও সমান জরুরি। কিটো, ইন্টারমিটেন্ট এই ধরনের ডায়েট এক মাস বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করতে দেওয়া হয় (Dukan Diet)। অনির্দিষ্ট কালের জন্য নিজের ইচ্ছেমতো এই ধরনের ডায়েট মানা যায় না। ঠিক তেমনই হল ডিউক বা ডিউকান ডায়েট। প্রতি সপ্তাহে ওজন ঝরবে ঠিকই, কিন্তু খাদ্য়তালিকা থেকে বাদ যাবে অনেককিছুই।
কিটো, ইন্টারমিটেন্ট, ডিউক এইসব ডায়েটকে ঠিক ব্যালান্সড ডায়েট বলা যায় না। কারণ এতে সবকিছু খেয়ে শরীরকে সেই মতো অভ্যস্ত করে ওজন কমানো হয় না। বরং কঠোরভাবে বেশ কিছু খাবার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। খাবার পরিমাণ, সময় সবই নির্দিষ্ট থাকে। এই ধরনের ডায়েট খুব কঠোরভাবে মানতে হয়। আজ করছি, কার করব না, মনোভাব থাকলে লাভ তো হবেই না উল্টে শরীরের ক্ষতি হবে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ডায়েট করা ঠিক নয়।
ডিউক ডায়েট (Dukan Diet) কী?
আজকাল ফিল্মস্টাররা এই ডায়েটের দিকে ঝুঁকেছেন। মডেলিং করেন যাঁরা তাঁরাও এই ডায়েট মানেন। বিদেশে ডিউকান ডায়েট বা ডিউক ডায়েট (Dukan Diet) বেশ জনপ্রিয়। আমাদের মতো ভাত-মাছের বাঙালিদের পক্ষে মানা একটু কঠিন ঠিকই, তবে যদি ডায়েটিশিয়ানের চার্ট মেনে চলা যায় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমে। অনেক অসুখবিসুখও সেরে যায়।
ডিউক ডায়েটের (Dukan Diet) নিয়ম হল কার্বোহাইড্রেট একদম ছোঁয়া যাবে না। কোনও মিষ্টি, শর্করা জাতীয় খাবার দাঁতেও কাটা যাবে না। পুরোপুরি প্রোটিন ডায়েট। সারাদিনের খাদ্য তালিকায় মূলত প্রোটিন থাকে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ নির্ভর এই ডায়েট। আর সঙ্গে থাকে খানিকটা শাক-সব্জি।

ফরাসি ডায়েটিশিয়ান পিয়েরে ডিউক এই ডায়েট তৈরি করেছিলেন ২০০০ সালে। তাঁর নাম অনুযায়ী এই ডায়েট চার্টের নাম দেওয়া হয় ডিউক বা ডিউকান ডায়েট। যদিও এই ডায়েট নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। ডাক্তারেরা বলেন, ডিউক ডায়েট ঠিকমতো মানতে না পারলে তাতে শরীরে নানা উপাদানের ঘাটতি হতে পারে।
ডিউক ডায়েট কীভাবে করে? কী কী খাওয়া যায়
লিন প্রোটিন, ওটস, দুধ, খাওয়া যায় এই ডায়েটে। তাছাড়া দিনে ২০ মিনিট অন্তত হাঁটতে বা জগিং করতে হবে। কার্বোহাইড্রেট খাওয়া যাবে না।
হাই-ফ্যাট ডায়েট বাড়াচ্ছে অবসাদ, ডিমেনশিয়ার শিকার হচ্ছেন বয়স্করা
এই ডায়েটের চারটি পর্যায় আছে—
১) অ্যাটাক ফেজ—১-১০ দিন শুধু লিন প্রোটিন (মাছ, মাংস) খেতে হবে, তার সঙ্গে দেড় চামচ মতো ওটস খাওয়া যাবে। দিনে ৬ গ্লাস জল খেতেই হবে।
২) ক্রুজ ফেজ—এটা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। স্টার্চ কম আছে এমন শাকসব্জি খেতে হবে আর তার সঙ্গে হাফ চা চামচ ওটস।
৩) কনসোলিডেশন ফেজ—আগের দুটো পর্যায় ঠিক মতো মানলে তৃতীয় পর্বে এসে ওজন অনেকটাই কমে যাবে। তখন রোজ শাকসব্জি খেতে পারবেন, তার সঙ্গে এক টুকরো ফল, ব্রাউন ব্রেন ২ পিস সামান্য চিজ দিয়ে খেতে পারবেন (Dukan Diet)।
এই পর্বে দু’বার পছন্দমতো খাবার বা চিট-মিল খাওয়ার সুযোগ পাবেন।
৪) স্টেবিলাইজেশন ফেজ—ওজন ঝরে যাওয়ার পরে নর্মাল ডায়েটে ফিরতে পারেন, তবে ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া চলবে না। দিনে ৩ চামচ ওটস, সবুজ সব্জি ও ফল খেলে ভাল। সেই সঙ্গে সপ্তাহে একদিন পুরোপুরি কার্বোহাইড্রেট বন্ধ রেখে প্রোটিন-ডায়েট করতে পারেন। প্রতিদিন ২০ মিনিট করে ব্যায়াম করতেই হবে যাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।