
বেশি ওজনে সংকট বাড়াচ্ছে করোনা, চল্লিশের নীচে বড় শত্রু ওবেসিটি
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বয়স চল্লিশ ছোঁয়নি। অথচ ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেশি? তাহলে সময় থাকতে সতর্ক হয়ে যান। কোভিডের বিষদাঁতের কামড় হয়তো আপনার ক্ষেত্রে ভয়াবহ চেহারা নিতে পারে। কোনও আলটপকা অনুমান নয়। একদল ব্রিটিশ গবেষকদের গবেষণার রিপোর্ট অন্তত এমনটাই জানাচ্ছে।
কাদের ক্ষেত্রে কোভিডের সংক্রমণের হার ঝুঁকিপূর্ণ? মহিলারা কি তুলনায় কম সংক্রামিত হচ্ছেন? ধূপমান করলে কি মারণ ভাইরাসের নাগাল থেকে রেহাই পাওয়া যায়? কোভিডের হানাদারির শুরু থেকেই এমন হাজারো বিষয় নিয়ে বিস্তর কাঁটাছেড়া চলেছে। উঠে এসেছে পক্ষে-বিপক্ষে জোরালো মতামত। এবার সেই খাতায় নাম লেখাল করোনা সংক্রমণে দৈহিক স্থূলত্ব সংক্রান্ত বিতর্ক। বিশেষজ্ঞদের মতে, যা আগামী দিনে তরুণদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে চলেছে।
বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেট। সম্প্রতি সেখানেই প্রকাশিত হয়েছে করোনা সংক্রমণের এই নয়া তত্ত্ব। গবেষকদের দাবি, নতুন ভাইরাসের চরিত্র অনেক দিক থেকেই প্রথম দফার ভাইরাসের থেকে আলাদা। চলতি ঢেউয়ে তরুণদের একটা বড় অংশ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। যেটা ফার্স্ট ওয়েভের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।
কিন্তু বিপদ এখানে থেমে নেই। অনূর্ধ্ব চল্লিশ বয়স যাঁদের, তাঁদের দেহের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে যত বেশি হবে, সংক্রমণের সম্ভাবনাও সেই হারে বাড়তে থাকবে। গবেষণার রিপোর্টে সাফ জানানো হয়েছে, বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক তরুণের ক্ষেত্রে তার স্বাভাবিক ঊর্ধসীমা ২৩। এই সূচকাঙ্কের একচুল ওদিকে পা বাড়ানো মানেই আগ বাড়িয়ে বিপদকে ডেকে আনা!
বিষয়টা এতটাই গুরুতর যে, গবেষকেরা বলছেন, এক পয়েন্ট বিএমআই বেড়ে যাওয়া মানেই আপনার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা এক ধাক্কায় ৫℅ বেড়ে গেল। সেই সঙ্গে ইন্টেনসিভ কেয়ার অ্যাডমিশনের সম্ভাবনাও চড়ে গেল ১০%!
বেশ কিছুদিন ধরে এই ব্রিটিশ গবেষকেরা ইংল্যান্ডের ৭ মিলিয়ন বাসিন্দাদের উপর সমীক্ষা চালান। তারপরই উঠে আসে এই তথ্য। এর পাশাপাশি বর্ণ ও জাতিভিত্তিক উল্লেখযোগ্য ফলাফল তাঁদের নজরে এসেছে। গবেষকদের মতে, শুধু স্থূলকায় তরুণেরাই নয়, কোভিডের নয়া ধাঁচের নিশানায় বেশি করে রয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গেরা। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে সংক্রমণের হার তুলনায় অনেক কম। সেই সঙ্গে আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, যাঁদের দৈহিক ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি, তাঁরা কিন্তু করোনা থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ, অতিমারীর দিনে স্থূলত্ব তাঁদের কাছে অভিশাপ নয়, বরং আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে।