
আমাদের আশেপাশে এমন বহু মানুষ রয়েছেন যারা রক্ত দেখলেই ভয় পান, অনেক সময় অজ্ঞানও হয়ে পড়েন। ফলে যেখানে সেখানে ঘটতে পারে বিপত্তি। গোটা পৃথিবীতে এই সমস্যা খুব একটা বিরল নয়। বিশ্বের প্রায় তিন শতাংশ মানুষ এমন সমস্যার শিকার। চিকিৎসা পরিভাষায় এই রোগের নাম হিমোফোবিয়া (Hemophobia)।
বিশেষজ্ঞদের মতে হিমোফোবিয়া (Hemophobia) একধরনের জিনগত সমস্যা। পরিবারে কারও হিমোফোবিয়া থাকলে তা স্থানান্তরিত হয় পরবর্তী প্রজন্মেও। তবে পরিবারে না থাকলেও হিমোফোবিয়া হতে পারে।
হিমোফোবিয়ায় (Hemophobia) আক্রান্ত লোকেরা রক্তদান করতে পারেন না। এমনকি শারীরিক পরীক্ষার জন্য রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলেও এঁরা জ্ঞান হারাতে পারেন। অদ্ভুত ভাবে স্রেফ হিমোফোবিয়া থাকার কারণে প্রচুর ছাত্র ছাত্রী চিকিৎসার পেশায় নিয়োজিত হতে পারেন না।
রক্ত দেখলেই হিমোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যেতে পারে। যার ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। ফলবশত সেই ব্যাক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এমনটা যে শুধু রক্ত দেখলেই হয়, তা নয়। ইনজেকশন সিরিঞ্জ, লাল রঙের কোনও তরল, ব্যান্ডেজ করা অংশ দেখলেও হিমোফোবিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি জ্ঞান হারাতে পারেন।
অনেকের ক্ষেত্রে আবার ঠিক উল্টোটা ঘটে। রক্ত দেখার পর হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়। ফলে চরম উৎকণ্ঠা বা প্যানিক অ্যাটাক হয়। প্যানিক অ্যাটাক সামলাতে না পারলে আবার শ্বাসকষ্টও শুরু হতে পারে।
হিমোফোবিয়া থাকলে মুক্তির জন্য চিকিৎসকের সাহায্য নিতে পারেন। রক্তে ভয় ব্যাপারটা অনেকটাই মানসিক। তাই বারবার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে রক্ত দেখে এই ভয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন।
হঠাৎ কোথাও রক্ত দেখলে যদি মনে হয় আপনি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন, তবে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। শুতে না পারলে অন্তত কোথাও বসে পড়ুন। এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হবে। অজ্ঞান হওয়ার বা প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনা কমবে। তবে হিমোফোবিয়া বাড়াবাড়ি আকার নিলে অবহেলা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্তে ভীতি কাটানোর উপায় খুঁজুন।