
ঘি (Ghee), মাখন নৈব নৈব চ।
খুব কষে ডায়েট করে রোগা হওয়ার চেষ্টা করছেন যাঁরা, তাঁরা এমনটাই বলবেন। মিনি স্কার্ট, হাই হিলের যুগে নাদুসনুদুস, মোটাসোটা চেহারা কেউই ঠিক পছন্দ করেন না। আগে মায়েরা সকালে ঘি দিয়ে মাখোমাখো করে ভাত মেখে খাইয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দিত। এখন এক চামচ ঘি দেখলেও আধুনিকারা চমকে ওঠেন। ডালিয়া, ওটসের সময়ে তাই ঘি মোটামুটি বাতিলের তালিকায় চলে গেছে। নেহাতই বাড়িতে কোনও স্পেশাল রান্না হল, তখন হয়ত ঘি ফোড়ন দিয়ে দায়সারা কাজ সারা হল। জবজবে ঘি দিয়ে মাখোমাখো রান্না একন আর কতজনের বাড়িতেই বা হয়।
তবে ঘি-এর (Ghee) কিন্তু বেশ ভালই পুষ্টিগুণ আছে। পুষ্টিবিদেরাই বলছেন, ট্রান্সফ্যাট আছে বলে ঘি-কে ব্রাত্য় করে দেওয়ার কোনও মানেই হয় না। বরং শরীরে যতটুকু ফ্যাট দরকার তা পুষিয়ে নিয়েও ঘি খাওয়া যেতে পারে। এক চামচ ঘিয়ের মধ্যে থাকা ১৫ গ্রাম ফ্যাটের মধ্যে ৯ গ্রামই হল স্যাচুরেটেড ফ্যাট। সারা দিনে যত ক্যালোরি খাওয়ার কথা, তার ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসা উচিত ফ্যাট থেকে। তার মধ্যে ১০ শতাংশের কম যদি স্যাচুরেটেড ফ্যাট থেকে আসে, তা হলে ক্ষতি নেই। বরং তা উপকারই করবে। সারাদিনে দু’চামচ ঘি খেলে উপকারই হবে বেশি। আর সকালে যদি খালি পেটে এক চামচ ঘি খাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। সারা শরীর দিনভর সতেজ থাকবে, রোগ প্রতিরোধ বাড়বে, ওজন কমবে শুধু নয়, হজমশক্তিও তড়তড় করে বাড়বে।
দুধের মাঠা তুলে দেশি ঘি হোক বা ভাল ব্র্যান্ডের বোতলবন্দি ঘি, উপকার অনেক
সকালে খালি পেটে এক চামচ ঘি (Ghee) খেলে ওজন কমে, কারণ ঘি-তে আছে কনজুগেটেড লিনোলেইক অ্যাসিড। ডায়াবিটিস ঠেকানোর পাশাপাশি ওজন কম রাখতেও সাহায্য করে এই অ্যাসিড।
খারাপ কোলেস্টেরল নয় বরং ঘি খেলে বাড়বে ভাল কোলেস্টেরল। এতে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে যায় প্রায় ২৩ শতাংশ।
ঘি-তে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে এবং কোলিন। হার্ট, লিভার ভাল রাখে, ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
ঘি খেতে হবে তবে পরিমাণ বুঝে। দিনে দু’চামচ যদি খাওয়া যায় তাহলে তার উপকার অনেক। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রান্নাতেও ঘি দিন পরিমাণ মতো, এর থেকে ভিটামিন পাওয়া যাবে।
Breast Cancer: স্তনে ক্যানসার ছড়াচ্ছে কিনা খুঁজে বের করবে চুম্বকীয় তরল, বড় আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের
ঘিয়ের স্মোক পয়েন্ট ৪৮৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। রান্নার সময় এর উপাদান ভেঙে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি করে না।
দুধে যাঁদের অ্যালার্জি আছে, ঘি খেলে তাঁদের সমস্যা হয় না। কারণ দুধ থেকে ঘি বানানোর সময়, অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলো চলে যায়।
ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বা হাইপারটেনশন থাকলেও ঘি খেলে উপকার মেলে, তবে পরিমাণমতো।
বাড়িতেই দুধের মাঠা তুলে যদি ঘি বানিয়ে নেওয়া যায় তাহলে উপকার অনেক বেশি হবে।