অ্যালার্জি নিয়ে ভয় নেই, শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার এই ত্রুটিকে সারিয়ে তোলা অসম্ভব নয়

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছোট থেকে বড় প্রায় প্রত্যেকেই জীবনে এক না একবার অ্যালার্জিতে ভুগেছেন। কোনও দিনও অ্যালার্জি হয়নি, এমন মানুষ দুনিয়ায় বিরল। করোনা মহামারীর সময়ও আমরা দেখছি, যেখানে গোটা বিশ্বব্যাপী করোনা ঠেকাতে মাস-ভ্যাকসিনেশনকে পন্থা ভাবা হচ্ছে, সেখানে কিছু মানুষ অ্যালার্জির ভয়ে ভ্যাকসিন নিতেই ভয় পাচ্ছেন।

কিন্তু একটু ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখা যেতে পারে, অ্যালার্জি কি প্রাণঘাতী?‌ করোনার থেকেও ভয়াবহ?‌ ১৩–১৯ জুন চলছে বিশ্ব অ্যালার্জি সপ্তাহ‌। অ্যালার্জি নিয়ে সচেতনতায় তাই এইবার আরও বিশেষ জোর দিচ্ছেন দেশ-বিদেশের চিকিৎসকেরা।

অ্যালার্জি আসলে কী?‌

চিকিৎসার পরিভাষায়, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ত্রুটিই হল অ্যালার্জি। এই ক্ষেত্রে প্রতিরোধ ব্যবস্থা অতি সক্রিয় হয়ে ওঠার ফলে ক্ষতিকর নয়, এমন কোনও বহিরাগত বস্তুর (‌‌অ্যালার্জেন)‌ বিরুদ্ধেও শরীর প্রতিক্রিয়া জানায়। তারই ফলশ্রুতি অ্যালার্জি। দেখা যায়, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তারা একাধিক বস্তুর প্রতি সংবেদনশীল হয়।

মূলত কী কী থেকে অ্যালার্জি হয়?‌

  • ‌বিশেষ কোনও খাদ্যবস্তু থেকে হতে পারে
  • প্যাকেটজাত খাবারের প্রিজারভেটিভ থেকে হতে পারে
  • খাবারের কালারিং এজেন্ট বা ফ্র‌্যাগনেন্স থেকে হতে পারে
  • কোনও প্রাণীর সংস্পর্শে হতে পারে
  • জেনেটিক কারণে হতে পারে
  • ধুলো বালি থেকে হতে পারে
  • ছোটখাটো পোকামাকড় থেকে হতে পারে
  • কোনও গাছ বা ফুলের রেণুও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে
  • ঋতু পরিবর্তনের কারণে হতে পারে
  • কোনও রাসায়নিকের সংস্পর্শে হতে পারে
  • অতিরিক্ত জল ঘাঁটা থেকে হতে পারে

দেখুন কী বলছেন ডাক্তারবাবু।

উপসর্গ কী হতে পারে?‌

  • অ্যালার্জির ধরণ অনুযায়ী উপসর্গ ভিন্ন হতে পারে। তবে কয়েকটি সাধারণ উপসর্গ হল—
  • সর্দি বা বন্ধ নাক
  • হাঁচি
  • চোখ লাল হয়ে যাওয়া
  • ত্বকে চুলকানি বা র‌্যাশ হওয়া
  • দমবন্ধ বোধ করা
  • ত্বক শুষ্ক লাগা
  • ছুলি হওয়া
  • ঠোঁট ফুলে যাওয়া
  • মুখ, গলা, জিভ ফুলে যাওয়া
  • বমি পাওয়া
  • পেট ব্যথা করা ইত্যাদি

বেশ কিছু জটিল অ্যালার্জির সমস্যায় রোগীর শ্বাসকষ্ট, প্রেশার বেড়ে যাওয়া বা অজ্ঞান হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। সে ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পৌঁছনো ভীষণ জরুরি।

চিকিৎসা কী?‌

  • কী থেকে অ্যালার্জি হচ্ছে অর্থাৎ অ্যালার্জেন বস্তুটি কী, সেটা চিহ্নিত করা সবার আগে জরুরি। সেগুলোকে এড়িয়ে চললে অনেকটা উপশম মেলে।
  • অ্যালার্জেন নিজে থেকে চিহ্নিত করতে না পারলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। তাঁরাই বিভিন্ন টেস্ট করার পরামর্শ দিতে পারেন, সেই টেস্ট রিপোর্ট থেকে সহজেই অ্যালার্জির কারণ খুঁজে বের করা যায়।
  • প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসকের দেওয়া বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে অ্যালার্জির উপসর্গ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে অ্যালার্জির চিকিৎসা করা হয়।
  • কিছু কিছু অ্যালার্জি প্রাণঘাতী হতে পারে। সে ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।