
অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়েটা (alopecia areata) বা টাকপোকা (Hair loss) এক ধরনের চুলের রোগ। এই রোগে চুলের গোড়া বা হেয়ার ফলিকল নষ্ট হয়ে গেলে চুল উঠে মাথার কোনও কোনও অংশ ফাঁকা হয়ে যায়। টাক পড়তে শুরু করলে অনেকেই বলেন টাকপোকায় ধরেছে। কিন্তু কোনও পোকার সঙ্গে দূরদূরান্তে এর কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে এটা একটা অসুখ। পোকা চেটে দেওয়া সংক্রান্ত ধারণা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ও ভিত্তিহীন।
অ্যালোপেশিয়া এক ধরনের অ্যালার্জি বা অটোইমিউন রোগ, যাতে হেয়ার ফলিকল বা যা থেকে চুলের বৃদ্ধি হয় , সেগুলো একেবারে গোড়া থেকে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাথার কিছু কিছু অংশে গোল গোল চাকার মতো চুল–শূন্য দাগ বা প্যাচ তৈরি হয়।
শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক, পুরুষ থেকে মহিলা – যে কেউ এই ‘টাকপোকা’ অসুখটির শিকার হতে পারেন। যাদের অ্যাটোপিক অ্যালার্জি থাকে, তাদের এই রোগ হওয়ার প্রবণতা একটু বেশি। ভিটিলিগো বা শ্বেতি থাকলেও অ্যালোপেশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। বাড়তি স্ট্রেসও কিন্তু এই রোগের অন্যতম কারণ হতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লুপাস অথবা আলসারেটিভ কোলাইটিস আছে তাঁদের এই সমস্যা কিছুটা বেশি দেখা যেতে পারে।
সমাধান কীসে
অনেক সময় দেখা যায়, মাথার ওই সাদা সাদা প্যাচ থেকে ৬–১২ সপ্তাহের মধ্যে আপনা আপনিই চুল গজিয়ে যায়। তবে সে ক্ষেত্রে চুলের রঙ ধূসর বা হালকা রঙের হতে পারে।পরে ধীরে ধীরে চুলগুলোতে রঙ ধরে। তবে যদি নিজে থেকেই চুল না গজায়, তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।
ওষুধের সাহায্যেও এর প্রতিকারের চেষ্টা করা হয়। সেক্ষেত্রে মাথার ত্বকের ফাঁকা অংশে ইরিটেশন তৈরি করা হয়। এর ফলে হেয়ার ফলিকল সক্রিয় হয়ে নতুন করে চুল গজায়। অনেক সময় চিকিৎসকরা ৫% মিনক্সিডিল লাগিয়ে দেন। তবে এর সঙ্গে আরও কিছু ওষুধ লাগাতে হতে পারে। অ্যানথ্রালিন নামক এক বিশেষ ওষুধ শর্ট কন্ট্যাক্ট থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শও দেন অনেক চিকৎসকরা। তবে এই অসুখে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।