
ভ্যাপসা গরমের সঙ্গেই তাপপ্রবাহে (Heatwave) নাজেহাল বাংলা। গত কয়েকমাস ধরে গরমের জ্বালা সইতে হয়েছে বঙ্গবাসীকে। বাংলা শুধু হয়, গোটা উত্তরভারত জুড়েই তীব্র তাপপ্রবাহ চলেছে। হিটস্ট্রোকে অসুস্ত হয়েছেন, মারাও গেছেন অনেকে। গরমে শারীরিক সমস্যা বেড়েছে, অসুস্থ হয়েছে বাচ্চারাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহ শুধু হিটস্ট্রোকের কারণ তা নয়, তাপদাহ সরাসরি ধাক্কা দেয় লিভার-পাকস্থলীকে। শরীরের পেশি, হার্টেও এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
তাপদাহের ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ে লিভার-পাকস্থলী-পেশিতে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহের (Heatwave) কারণে ডিহাইড্রেশন হয়ে যায়। পেট খারাপ, বমি হতে থাকে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পার করে গেলে সমস্যা আরও বাড়ে। বাইরের তাপমাত্রা শরীর সইতে না পারলে হজমের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ঘন ঘন হজমের সমস্যা হয়। এর মধ্য়ে বাইরের খাবার বা জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে তা থেকে ডায়রিয়া হয়ে যেতে পারে। এমনও দেখা গেছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে টাইফয়েড হয়েছে রোগীর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোদে বেশি হাঁটাহাঁটি বা দৌড়োদৌড়ি করলে শরীরের জল শুকিয়ে যায়। প্রচণ্ড গরমে একটানা কাজ করলেও এমনটা হয়। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। বাইরের তাপ আর শরীরের ভেতরের তাপের মধ্যে ভারসাম্য থাকে না। যার কারণেই শরীর আনচান করতে থাকে, নানা রকম অস্বস্তি শুরু হয়।
এটা হল প্রাথমিক দিক। এর পরের ধাপে দমবন্ধ হয়ে আসতে শুরু করে। যদি এই সময় বেশি করে জল বা ফলের রস খাওয়া যায় বা ঠাণ্ডা ঘরে বিশ্রাম নেওয়া যায় তাহলে বিপদের সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু যদি তা না নয়, তাহলেই পরের ধাক্কায় শরীরে অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। অস্বস্তি বাড়ে। শরীর বুঝিয়ে দেয় বাইরের প্রচণ্ড তাপ সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে। দরদর করে ঘাম হতে থাকে। আচমকাই ব্ল্যাক আউট হয়ে যায়। জ্ঞান হারান রোগী।
পেশির শক্তিও কমতে থাকে প্রচণ্ড তাপদাহে (Heatwave)। পেশিতে ব্যথা, হিট ক্র্যাম্প হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে রক্ত ঘন হতে থাকে। মাথায় রক্তচাপ বাড়ে। শরীরের স্বাভাবিত তাপমাত্রা আর রক্তচাপের মধ্যেও সামঞ্জস্য থাকে না। যার কারণেই স্ট্রোক হয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে হিট স্ট্রোকের (Heat Stroke) ঝুঁকি বেশি। যাদের হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, কিডনির রোগ রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে বিপদের ঝুঁকি বেশি।
রোদে শরীরে জল কমে গেলে হিট ক্র্যাম্প হতে পারে। এতে পেশিতে টান ধরে, মাথা ঘুরে জ্ঞান হারাতে পারেন। পাশাপাশি ১০২ ডিগ্রির কাছাকাছি জ্বর আসতে পারে। শরীরে নানা জায়গায় হিট র্যাশ হতে পারে বা ফুলে যেতে পারে।
বেশি রোদে তেতেপুড়ে গিয়ে এসি-তে ঢুকলে বিপত্তি বাড়বে। অনেক সময় বিনবিনে ঘাম হয়, এসি-তে থাকলেও গরমের অস্বস্তি কাটে না। ঘাম, চোখে-মুখে অন্ধকার দেখে রোগী, রক্তচপ বেড়ে যায়, হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।