
বৃষ্টির পালা চুকেছে। আবারও ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল অবস্থা। এই সময় ঘন ঘন পেট গরম, পেট খারাপ, হজমের গোলমাল লেগেই আছে। তাছাড়া সবসময় এসি ঘরে থাকার ফলে ঠান্ডা-গরম লেগে সর্দি-হাঁচি, ঘুষঘুষে জ্বরও হচ্ছে। এই সময় আবার নানারকম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ভাইরাল ফিভারও হানা দিয়েছে।
গরম পড়লেই আমাদের শরীরে নানা রকম অস্বস্তি শুরু হয়। একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কেন এগুলো হচ্ছে এবং কী করলে এই সমস্যাগুলোর হাত থেকে মুক্তি পাবেন, জেনে নিন।
ক্লান্তি বাড়ছে, শরীরে অস্বস্তি
বাইরে চড়া রোদ। ঘরেও ভ্যাপসা গরম। যানবাহনে ভিড়ে দমবন্ধ দশা। এমন অবস্থায় আমাদের শরীর মেলাটোনিন উৎপাদন কমিয়ে দেয়। ফলে শরীরের ক্লান্তিভাব বেশি হয়। তাছাড়া এই সময় ডিহাইড্রেশনও বেশি হয়। তাই বাইরে বেরলে ছাতা নিয়ে বেরোবার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। চোখে রোদচশমা ব্যবহার করতে পারেন। আর সবসময়েই সঙ্গে জল বা লেবুর শরবত রাখতে হবে। শরীর আর্দ্র রাখা খুব দরকার।
কী কী নিয়ম মানলে শরীর তরতাজা থাকবে
ফ্রিজের ঠান্ডা জল খাওয়া আগে বন্ধ করুন। শরীরের জন্য ভীষণ খারাপ। আগে বাড়িতে কুঁজো বা মাটির কলসিতে জল রাখা হত। এখন আমরা বোতলে ভরে ফ্রিজে জল রাখতেই অভ্যস্ত। ঠান্ডা জল যদি খেতেই হয় তাহলে মাটির কলসি, কুঁজোতে জল রেখে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
অল্প সময়ের ব্যবধানে অল্প খাওয়ার অভ্যাস করুন। একেবারে খুব বেশি খাবার খাবেন না। বার বার খান এবং পরিমাণে কম খান। এই ভাবে খেলে আমাদের হজমে সুবিধা হয়। ফলে বদহজম,অ্যাসিডিটি প্রভৃতি হজমজনিত সমস্যা দূরে থাকে। পেট গরম হওয়াও ঠেকানো যায়।
দিনের মধ্যে এক বার অন্তত দই-ভাত খান। বিকেল ৪টে থেকে ৬টার মধ্যে খেলেই সবচেয়ে ভাল। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে দই-ভাত।
অতিরিক্ত তেল, মশলাদার, ভাজা খাবার এই গরমের সময়টায় এড়িয়ে চলুন। তেল মশলাযুক্ত, ভাজা খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয়। পাশাপাশি পেট খারাপ, গ্যাস, অ্যাসিডিটি প্রভৃতি সমস্যা তৈরি করে।
গরমে নিয়মিত ফল খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ ও হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। এ সময়ের মরসুমি ফল, যেমন তরমুজ, লিচু, জামরুল, শসা খান বেশি করে। এগুলো প্রত্যেকটাই জলে পরিপূর্ণ। তাই এগুলো খেলে শরীরের বাড়তি জলের চাহিদা পূরণ হয়। সঙ্গে শরীর ভাল রাখার মূল উপাদান ভিটামিন, খনিজের চাহিদাও মেটে।
প্রচণ্ড গরম থেকে ফিরে কোল্ড ড্রিঙ্কস নয়, বরং লেবু বা বেলের শরবত বা ডাবের জল খেতে পারেন। ডিহাইড্রেশনের হাত থেকে মুক্তি পেতে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে এগুলো দারুণ উপকারী। তবে খুব বাড়াবাড়ি হলে ইলেকট্রোলাইট মিশ্রণ খেতে হবে।
বাড়িতে থাকলে আমরা বেশিরভাগই এসি ঘরেই থাকি। সেখান থেকে হঠাৎ যদি চড়া রোদে বেরোন, তাহলেই গণ্ডগোল। আপনার শরীর চট করে বাইরের তাপমাত্রার ফারাকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। তাতেই জ্বর, ঠান্ডালাগা, মাথাধরার মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়। তাই দিনেরবেলা বাইরে বেরনোর অন্তত্য ১০-১৫ মিনিট আগে আপনার এসি মেশিনটি বন্ধ করে দিতে হবে।
নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিটের শরীরচর্চা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। কিছু না করতে পারলে স্রেফ হাঁটুন। তবে যদি প্রায়শই হজমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে যোগাসন করতে পারেন। যোগাসন আমাদের হজশক্তি বৃদ্ধি করতে বিশেষ কার্যকর।