
খিদে পায়নি অথচ গপগপ করে যা খুশি খেয়ে ফেলছেন, এই অভ্যাস মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। আবার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, এদিকে খালি পেটে রয়েছেন সেই অভ্যাসও অস্বাস্থ্যকর।
এখন কথা হল, পুষ্টিবিদরা বলেন, খিদে পেলে তবেই খান, জোর করে খাওয়া ঠিক নয়। আবার পুষ্টিবিদরা এমনও বলেন যে ঘড়ির কাঁটা ধরে সময়ে সময়ে খাওয়া উচিত। এর মধ্যে কোনটা ঠিক, সে প্রশ্ন কি আপনার মাথাতেও ঘুরছে?
ভাল করে ভেবে দেখলেই বুঝতে পারবেন, দুটোই সঠিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন খিদে পাবে বুঝতে হবে শরীর ক্যালোরি চাইছে, পাকস্থলীও হজমের জন্য তৈরি, তখনই খাওয়া উচিত। তবে চোখের খিদে নয় কিন্তু, একেবারে চনচন করে খিদে পাওয়া যাকে বলে।
ঘড়ির সময় ধরে খাওয়াতেও ভুল নেই। তবে এই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে মানলে তবেই লাভ হবে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, সময় ধরে দিনে ছোট ছোট ৬টা মিল খেলে বেশি ক্যালোরিও ঢুকবে না আবার ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। হজমপ্রক্রিয়া ভালভাবে হবে। এই ঘড়ির কাঁটা ধরে খাওয়ার নিয়ম আছে। বিশেষজ্ঞরাই বলে দেন, কোন সময়ে কী খেতে হবে। ব্রেকফাস্ট যদি ভারী হয়, তাহলে লাঞ্চে খাবার হবে হাল্কা, বিকেলের জলখাবার আরও হাল্কা। কাজেই সঠিক সময় ধরে খেলে খিদেও সেই অনুপাতেই হবে। যদি সময় ধরে বারে বারে বেশি খেতে শুরু করেন, জাঙ্ক ফুড দেখলেই আপনার মন খাই খাই করে ওঠে এবং যা খুশি খেয়েও ফেলেন, তাহলে কোনও উপকার হবে না। উল্টে ওজন বাড়তে থাকবে দ্রুত গতিতে।
খাবার সময়ে কিছু নিয়ম মানতেই হবে। যখনই খাবার খাবেন, সেটা গরম-গরম খাওয়াই ভাল। সদ্য রান্না করা বা গরম খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। ফ্রিজ থেকে বার করা খাবার কিংবা ঠান্ডা, অনেকদিনের বাসি খাবার খেলেই বাধে বিপত্তি! তাই গরম খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
খিদে পায়নি অথচ ডায়েট বজায় রাখতে গিয়ে একবারে প্রচুর ফল খেয়ে ফেলছেন, ভুলেও এই কাজটি করবেন না। যতটা খিদে পেয়েছে, ততটাই খান। আর খিদে না পেলে একেবারেই তখন খাবেন না। পেটে খিদে না থাকা অবস্থায় খেলে কিন্তু সমস্যা বাড়ে। তখন হজমের সমস্যা বাড়বে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু কোনটার পরে কোনটা খাওয়া উচিত বা কার সঙ্গে কী খেলে ভাল সেটে জেনে নিন আগে। মাংস খেয়েই দুধ খেয়ে ফেললে বদহজম হতে বাধ্য। আবার টকজাতীয় খাবার খাওয়ার আগে বা পড়ে দুধ খাবেন না। টক খাবারে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিডের উপস্থিতি দুধকে জমাট বাঁধায়। এর ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বুকজ্বালা ও পেট খারাপ হতে পারে। এমনকি অ্যালার্জি, বুকের কফ জমা ও সর্দি-কাশিও হতে পারে।
দুধের সঙ্গে অথবা দুধ খাওয়ার আগে বা পরে তরমুজ খাবেন না। দুটো মিশিয়েও খাবেন না। তরমুজ খাওয়ার সময়ে বা আগে-পরে দুধ খেলে শরীরে টক্সিন তৈরি হতে পারে। এর ফলে ফুড অ্যালার্জি, ডায়েরিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।