
হাত-পা-জিভ অসাড়, মুখ বেঁকে যাচ্ছে একদিকে, স্ট্রোকের লক্ষণ বুঝলে রোগীকে বাঁচাবেন কী করে?
গুড হেলথ ডেস্ক
দিব্যি সুস্থ মানুষ। আচমকাই হাত-পা অবশ, আটকে যাচ্ছে কথা, বেঁকে যাচ্ছে মুখ। এটাই অ্যালার্মিং। তখনই বুঝতে হবে স্ট্রোক হয়েছে। আচমকা স্ট্রোক (Stroke) বড় বিপদ ডেকে আনে। ধরুন আপনি বাড়িতে একা। আপনারই কোনও আপনজনের এমন অবস্থা হল, সেই সময় প্যানিক না করে ঠিক কী কী করা উচিত সেটা জেনে রাখা দরকার। সিদ্ধান্তের সামান্য ভুল বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
স্ট্রোক (Stroke) সাধারণত দুই রকমের হয়। হেমারেজিক ও ইস্কিমিক স্ট্রোক। হেমারেজিক স্ট্রোকে ব্রেনের শিরা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তপাত হয়। ইস্কিমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আগে বয়স্ক লোকেদেরই বেশি হত। এখন লাইফস্টাইলে বদল, অতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণে কমবয়সিরাই বেশি আক্রান্ত। এখন বয়স বাছবিচার করে স্ট্রোক (Stroke) হয় না। আর সাইলেন্ট স্ট্রোক তো আরও মারাত্মক। জানান দিয়ে আসে না। তাই স্ট্রোক থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত, কোন কোন অভ্যাস ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
আগে লক্ষণ চিনুন
- সবচেয়ে আগে বডি ব্যালান্স হারিয়ে যাবে। একদম সুস্থ মানুষ যদি আচমকা শরীরের ব্যালান্স হারিয়ে ফেলে, হাঁটাচলা করতে গিয়ে পড়ে যায় বা টাল খেতে থাকে তখন বুঝতে হবে বিপদ আসন্ন।
- দ্বিতীয়ত হাত-পায়ের সাড় চলে যাবে। শরীরের কোনও একদিক হঠাৎ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
- ফেসিয়াল প্যারালাইসিসও স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ। মুখের একদিক বেঁকে যাবে, জিভ আড়ষ্ট হয়ে যাবে, কথা জড়িয়ে যাবে।
- চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এলেও সতর্ক হতে হবে। যদি দৃষ্টি ক্ষীণ হতে শুরু করে, ডবল ভিশন হয় তাহলে সেটা অ্যালার্মিং।
- কথা বলতে বলতে ভুলে যাবেন। ঘন ঘন মুড সুয়িং, কিছুই মনে থাকবে না। চিন্তাভাবনা করতে সমস্যা হবে।
- প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
ডাক্তার না আসা অবধি বা হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে অবধি কী করবেন?
সেলফ মেডিকেশন সবক্ষেত্রে (Stroke) বিপজ্জনক হতে পারে। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখলেই যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।
স্ট্রোক (Stroke) হওয়ার পর সাড়ে চার ঘণ্টা হল গোল্ডেন আওয়ার। এর মধ্যে ইন্টারভেনশন পদ্ধতির সাহায্যে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করে দিতে পারলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বাড়বে।
যতক্ষণ না ডাক্তার আসছে বা হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছচ্ছেন ততক্ষণ কিছু ব্যবস্থা আপনিও করতে পারেন। যদি দেখেন রোগীর জ্ঞান আছে, তাহলে এক পাশ করে শুইয়ে দিন। শরীরের যে অংশটা অবশ হয়ে গেছে বুঝবেন সেই অংশটা যেন ওপরে থাকে, সুস্থ রয়েছে শরীরের যে ভাগ সেটা বিছানা বা মাটির সংস্পর্শে থাকবে।
রোগীর মাথা একটি বা দুটি বালিশে রেখে উঁচু করে রাখতে হবে। অবশ্যই মাথা ও প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়া হাত বা শরীরের সেই ভাগটা সাপোর্ট দিয়ে রাখবেন।
স্ট্রোক হয়েছে বুঝলে রোগীকে কিছু খাওয়াবেন না, জলও নয়।
টাইট জামাকাপড় পরানো থাকলে তা খুলিয়ে হাল্কা কিছু পরিয়ে দিন। রোগীর যেন শ্বাস নিতে সমস্যা না হয়।
রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং পালস চেক করুন। যদি পালস ঠিক থাকে তাহলে ভয় কম। যদি পালস পাওয়া না যায় তাহলে সিপিআর দেওয়া যেতে পারে। কীভাবে সিপিআর দিতে হয় তা জানা না থাকলে কোনও বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন।