হাই-ফ্যাট ডায়েট বাড়াচ্ছে অবসাদ, ডিমেনশিয়ার শিকার হচ্ছেন বয়স্করা

গুড হেলথ ডেস্ক

আপনি কি ঝালমশলাদার খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন? তাহলে সতর্ক হয়ে যান। বয়স যদি ৪ বছরের বেশি হয় তাহলে খাবার খেতে হবে বয়স মেপে ও শরীর বুঝে। ষাটোর্ধ্বদের আরও বেশি খেয়াল রাখতে হবে (Inflammatory Diet)। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, হাই-ফ্যাট ডায়েট বা ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। শরীরে ও মস্তিষ্কে প্রদাহ হয়। নানা অসুখবিসুখ বাসা বাঁধতে থাকে শরীরে।

জাঙ্ক ফুড, রাস্তা থেকে কেনা বেশি মশলা দেওয়া খাবার, প্যাকেটবন্দি খাবার, প্রসেসড ফুড, ডিপ ফ্রায়েড মাংস বা বার্গার-সসেজ-সালামি এবং নানা রকমের নরম পানীয়ও শরীরে ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ তৈরি করতে পারে (Inflammatory Diet)। এই ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হলে তা শরীরে হরমোন ক্ষরণে তারতম্য তৈরি করে। হ্যাপি হরমোনের ক্ষণ কমে যায়, ফলে অবসাদ বাড়তে থাকে। বয়স্কদের স্মৃতিনাশের মতো রোগ ধরা দিতে পারে ভবিষ্যতে।

Anti-inflammatory' diet

খাবারের মধ্যে যে ফ্যাট থাকে তার নাম ‘ট্রাইগ্লিসারল’, যা তৈরি হয় মূলত তিনটি ফ্যাট অ্যাসিড ও একটি গ্লিসারল মলিকিউলের সমন্বয়ে৷ এই দু’টি মলিকিউল ‘এস্টার’ নামক একটি বিশেষ রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত৷ বন্ধনের প্রকৃতি অনুসারে (‘ডাবল বন্ড ’ বা ‘সিঙ্গল বন্ড’) ফ্যাটকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়৷ এই তিনটি ভাগের নাম -Saturated Fat, মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট৷ ‘Saturated Fat’ রক্তে ‘ব্যাড কোলেস্টরলে’র পরিমাণ বাড়িয়ে জমা হয় হৃত্‌পিন্ডের রক্তবাহী ধমনীতে এবং ধমনীর পথ সংকীর্ণ করে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে৷ এর ফলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন ও এমনকী হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে (Inflammatory Diet)৷ 

inflammatory diet

গবেষণা বলছে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে খারাপ বা এলডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে খারাপ প্রভাব ফেলে। বার্গার, প্রসেসড মাংস, প্রচুর পরিমাণে মাখন খাওয়ার ফলে এলডিএল কোলেস্টেরল ধমনীতে জমা হতে থাকে, যা হার্ট থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। ফলে মস্তিষ্কেরও অক্সিজেন পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যায়। স্মৃতির পাতা ধীরে ধীরে ধূসর হতে থাকে।

ডায়েট কী? ছিপছিপে চেহারাই লক্ষ্য নয়, ভারতীয়দের অনেক ভুল ধারণা আছে

Anti-Inflammatory Diet

টাকার থেকেও বেশি জরুরি মস্তিষ্ককে সচল ও কার্যক্ষম রাখা। ব্রেন বিগড়ে (Stroke Risk) গেলে জগৎ অন্ধকার। বর্তমান বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর চতুর্থ কারণ হিসেবে ব্রেন স্ট্রোককে চিহ্নিত করা হয়। স্ট্রোক হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। বড়সড় ব্রেন-স্ট্রোক হলে রোগীর শরীরের একদিক পক্ষাঘাতগ্রস্থও হয়ে পড়তে পারে। পোস্ট-স্ট্রোক পর্যায়ে দেখা দেয় নানারকম শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা, ঝুঁকি বাড়ে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের। স্ট্রোক নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বজুড়েই নানা ক্য়াম্পেন চলছে।