
বর্ষায় বাড়ে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ভেজা মাটিতে, জল-কাদায় বেশি ঘুরলেই মুশকিল
গুড হেলথ ডেস্ক
মাঠে-ঘাটে ঘুরে যাঁদের বেশি কাজ করতে হয় তাঁদের বিপদ বেশি। চাষি, রাজমিস্ত্রী, কলকারখানার শ্রমিক, পশু চিকিৎসক, নোংরা ড্রেন পরিষ্কার করতে হয় যাঁদের, তাঁদের মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বেশি হয়। তাছাড়া বৃষ্টিতে ভিজে বেশি জল-কাদায় ঘুরলে, বাচ্চারা যদি কাদার মধ্যে খেলাধূলা করে তাহলেও এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে নানারকম অসুখবিসুখ হয়। দূষিত জল পেটে গেলেও এই রোগ ছড়াতে পারে।
আমাদের দেশে জ্বরঘটিত অসুখ, সারা বছর দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গি, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া, স্ক্রাব টাইফাস, রিকেটসিয়া ইত্যাদি। এর মধ্যেই এক অজানা জ্বরের প্রকোপ বাড়ে শহর, শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলগুলিতে। অজানা জ্বর বলেই দাগিয়ে দেওয়া হয় এইসব রোগকে। আসলে একরকমের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যার প্রকোপে জ্বর, বমি, ডায়েরিয়া, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
এই রোগের নাম লেপ্টোস্পিরোসিস (Leptospirosis)। লেপ্টোস্পিরা ইনটেরোগান্স Leptospira interrogans নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপে এই রোগ হয়।
কাদের হতে পারে (Leptospirosis)?
অপরিশুদ্ধ জল, ভেজা মাটি, নোংরা-আবর্জনা থেকে এই রোগ ছড়ায়। কিছু প্রাণী এই রোগের বাহক। তাদের লিভার ও কিডনিতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। প্রাণীদের মলমূত্র থেকে রোগ ছড়ায় মানুষের মধ্যে। ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে মাটি, কাদা, জমা জলে এই ব্যাকটেরিয়া দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। যাঁদের নোংরা জল পরিষ্কার করতে হয় বা মাঠে চাষ করতে হয় তাঁদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া বর্যার সময় নোংরা জল-কাদায় বেশি ঘুরলে এই রোগ বাড়তে পারে। ইঁদুরের মলমূত্র থেকেও রোগ ছড়ায়। মাংসের দোকানে কাজ করেন যাঁরা বা কাঁচা মাংসে হাত দিতে হয় যাঁদের, তাঁদের ঝুঁকি আরও বেশি (Leptospirosis)।
কী কী উপসর্গ দেখা দেয়
ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই লক্ষণ এই রোগের (Leptospirosis)। মাথাব্যথা, জ্বর, সারা গায়ে যন্ত্রণা।
ধূম জ্বর, সঙ্গে অহস্য মাথা যন্ত্রণা।
পেশিতে ব্যথা।
বমি, ডায়েরিয়া
জন্ডিসের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
সারা শরীরের লাল র্যাশ, ফুসকুড়ি হতে পারে।
কীভাবে সাবধান থাকবেন
এই বর্ষায় জল ফুটিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন। জমা জল এড়িয়ে চলুন। বাচ্চাদের কাদা মাটিতে খেলাধূলা করতে দেবেন না। জমা জল পেরোতে হলে বা বর্ষার সময় রাস্তায় ঘুরে কাজ করতে হয় যাঁদের তাঁরা ঠিকঠাক জুতো ব্যবহার করুন (Leptospirosis)। অপরিচ্ছন্ন জায়গা এড়িয়ে চলুন। হাত ধুয়ে তবে খাবার খাবেন।
বাড়িতে পোষ্য থাকলে তাকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। বাইরে থেকে ঘুরে এলে আগে পরিচ্ছন্ন হয়ে তারপর আপনার সন্তানের কাছে যাবেন। এই জীবাণু আপনার থেকে আপনার শিশুর কাছেও পৌঁছে যেতে পারে।