
Liver Transplant: লিভার প্রতিস্থাপন এখন অনেক নিরাপদ, রক্তের গ্রুপ না মিললেও ক্ষতি নেই
গুড হেলথ ডেস্ক:
সারা দেশ জুড়ে প্রায় হাজার হাজার মানুষ লিভার বা যকৃতের সমস্যায় ভোগেন। মূলত লিভার সিরোসিস বা অ্যাকিউট লিভার ফেলিওরের ক্ষেত্রে একমাত্র আশার আলো হতে পারে লিভার প্রতিস্থাপন (Liver Transplant)। যে কোনও অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রেই জটিলতা হতে পারে। দাতার অঙ্গ গ্রহীতার শরীর গ্রহণ করবে কিনা সেটা সবচেয়ে বড় ব্যাপার। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সময় রক্তের গ্রুপ ম্যাচ হওয়া একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল এতদিন। দাতার রক্তের গ্রুপের সঙ্গে গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ না মিললে প্রতিস্থাপনে জটিলতা হত। এখন এই সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
গুরুগ্রামের মেদান্ত হাসপাতালের সার্জনরা সম্প্রতি লিভার প্রতিস্থাপন করেছেন রক্তের গ্রুপের মিলমিশ ছাড়াই। হাসপাতালের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট (Liver Transplant) বিভাগের চেয়ারম্যান ডক্টর অরবিন্দ সয়েন বলেছেন, জুয়ানা নামে একটি মেয়ের লিভার প্রতিস্থাপন করতে হত। মেয়েটির ঠাকুমার থেকে লিভারের অংশ নেওয়া হয়েছিল যা মেয়েটির শরীরে সঠিকভাবে খাপ খাপে। শুধু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল রক্তের গ্রুপ। ঠাকুমার সঙ্গে মেয়েটির রক্তের গ্রুপের মিল ছিল না। ফলে সার্জারি থমকে গিয়েছিল। কিন্তু পরে এমন বিশেষ পদ্ধতিতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয় যে মেয়েটির শরীর নতুন অঙ্গ ভালভাবে গ্রহণ করতে পারে। ভারতে প্রথম এমন সার্জারি সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তারবাবু।
রক্তের গ্রুপের মিল ছাড়াই লিভার প্রতিস্থাপন সফল
এবিও ব্লাড গ্রুপের মিল না হলে প্রতিস্থাপনে সমস্যা হয়। ডাক্তারবাবু বলছেন, হাসপাতালের ডেটাবেস যদি অনেক বড় হয় তাহলে সঠিক ম্যাচের ডোনার খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। তার জন্য উন্নত পরিকাঠামো, অভিজ্ঞ মেডিক্যাল টিমের দরকার হয়। তা না হলে এবিও-ইনকমপ্যাটিবল ডোনার দিয়েই কাজ চালাতে হয়।
লিভার প্রতিস্থাপন (Liver Transplant) দু’রকমের হয়। প্রথমত, জীবিত দাতার শরীর থেকে লিভারের একটা অংশ নিয়ে গ্রহীতার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। লিভিং ডোনার কিংবা জীবিত ব্যক্তির দ্বারা লিভার প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে পরিবারের কোনও সদস্য যেমন স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, ছেলে, মেয়ে বা কাছের কোনও আত্মীয়ই এগিয়ে আসেন লিভার প্রতিস্থাপন করানোর জন্য। দ্বিতীয়টি হল, কোনও সদ্য মৃত ব্যক্তির লিভার নিয়ে সার্জারির মাধ্যমে গ্রহীতার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। উভয়ক্ষেত্রেই মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দাতা ও গ্রহীতা দুজনেরই লিভার স্বাভাবিক আকৃতিতে ফিরে আসে। তবে এর জন্য রক্তের গ্রুপের মিল হলে ট্রান্সপ্লান্ট ভাল হয়।
Root Canal: দাঁতের ক্যাভিটির ভেতর থেকে ময়লা বের করবে, ক্ষত সারাবে রোবট, দুরন্ত আবিষ্কার আইআইএসসি-র
যদি রক্তের গ্রুপের মিল না হয় দাতার অঙ্গ গ্রহীতার শরীরে ঢোকার পরেই রক্তের উপাদানগুলো ভাঙতে থাকে। ব্লাড ক্লট করে যেতে পারে। ক্ষতি হতে পারে হার্ট, কিডনির। সেক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতির প্রয়োগ করছেন ডাক্তারবাবুরা। একে বলা হচ্ছে ইমিউনোমডিউলেশন প্রোটোকল। ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারির তিন সপ্তাহ আগে এমন ওষুধ দেওয়া হচ্ছে রোগীকে যা রক্তের বি-কোষগুলোকে নষ্ট করবে। এই বি-কোষই শরীরে নতুন কিছু দেখলে তার প্রতিরোধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। দাতার শরীর থেকে যে রক্ত ঢুকছে গ্রহীতার শরীরে বি-কোষ সেই রক্তের উপাদানগুলিকে ভেঙে দেয়। বি-কোষকে ঠেকানোর জন্যই প্রাথমিক পর্যায়ে ড্রাগ থেরাপি করছেন ডাক্তারবাবুরা। দ্বিতীয়, প্লাজমাফেরেসিস। দাতার রক্তে গ্রহীতার শরীরে ঢোকার আগেই রক্তের উপাদানগুলিকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে। আগে থেকেই রক্তে অ্যান্টিবডি থাকলে তা ছেঁকে বের করে দেওয়া হবে এই পদ্ধতিতে। ফলে দাতার শরীর থেকে নেওয়া অঙ্গ সহজেই প্রতিস্থাপন করা যাবে গ্রহীতার শরীরে।