
ঠোঁটে ঠোঁট ব্যারিকেড…এখন থেকে চুমুও খেতে হবে বুঝেশুনে!
ছোঁয়াচে চুম্বন রোগ ছড়াচ্ছে। চুমু থেকে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস। এই অসুখকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ‘মনোনিউক্লিওসিস (Mononucleosis ) বা গ্ল্যান্ডুলার ফিভার’। এপস্টাইন বার ভাইরাসের (Epstein-Barr virus) সংক্রমণে এই অসুখ ছড়াচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
আমেরিকায় এই চুম্বন-রোগ বা কিসিস ডিজিজ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে বাচ্চা ও কমবয়সীদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি। বড়দের থেকে ভাইরাস ঢুকেছে ছোটদের শরীরেও। ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, ৮৫-৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষ ও মহিলাদের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে।
কিসিং ডিজিজ কী? কীভাবে ছড়ায়?
থুতু-লালার মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। আক্রান্তের হাঁচি-কাশি, লালারস থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ঢুকতে পারে ভাইরাস। ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
আক্রান্তের দেহরস থেকেও ভাইরাস ছড়াতে পারে। ইবিভি ভাইরাস কাশি, হাঁচি, রক্ত সঞ্চালন, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
সংক্রমিতের সঙ্গে একই থালায় খাবার খেলে, একই চামচ বা একই পানীয় শেয়ার করলেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।
লক্ষণ কী কী?
ইবিভি ভাইরাসের সংক্রমণে ৪-৭ সপ্তাহ অবধি রোগের উপসর্গ থাকতে পারে। খুব দ্রুত এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়াতে পারে ভাইরাস।
রোগের লক্ষণ– ধূম জ্বর, গলা ব্যথা, ক্লান্তি-ঝিমুনি, পেশিতে ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া, লিম্ফ নোড ফুলে যাবে। ঘাড়ে, বগলের লিম্ফ নোড মারাত্মকভাবে ফুলবে। সেই সঙ্গে লিভারে সংক্রমণ হবে। জন্ডিসের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ কমে যেতে পারে, হিমোলাইটিক অ্য়ানিমিয়ার শিকার হতে পারে রোগী। অথবা রক্তকণিকাগুলো আচমকা বেড়ে যেতে পারে, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া হতে পারে রোগীর।
হার্টের রোগ দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কে প্রদাহ হতে পারে। রোগের বাড়াবাড়ি হলে, শরীরে ভাইরাস লোড বেশি থাকলে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।
প্রতিকার কী?
কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) ও অ্যান্টিবডি টেস্টে রোগ ধরা পড়ে। কিসিং ডিজিজ থেকে বাঁচতে সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই ভাল। আক্রান্তকে আইসোলেশনে রাখতে হবে।
বেশি করে জল খেতে হবে, শরীর জলশূন্য হলে চলবে না। এই সময় ডিহাইড্রেশন বিপদ ডেকে আনতে পারে।
মাস্ক পরতেই হবে। সাধারণত রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে বলা হয়। এর ফলে রোগী চট করে ক্লান্ত হয়ে পড়েন না। শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা অটুট থাকে। তাছাড়া জ্বর ও গায়ে ব্যথার ওষুধ দেন ডাক্তাররা। তেমন কোনও অ্য়ান্টিবায়োটিক নেই এই রোগের চিকিৎসায়।
এই রোগের কোনও নির্দিষ্ট ট্রিটমেন্ট নেই। আক্রান্তের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। বড়রা সংক্রমিত হলে বাচ্চাদের কাছে যাবেন না।