
Non-alcoholic fatty liver: লিভারে মেদ জমছে? শরীরই জানান দেবে আপনার হার্ট ভাল নেই
গুড হেলথ ডেস্ক
লিভারে কতটা ফ্যাট জমল তার ওপর নির্ভর করে কোনও ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হবেন কি না। ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার (Non-alcoholic fatty liver) এবং হৃদরোগ পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম বা প্রয়োজনীয় শারীরিক কসরতের অভাবে যে সব অসুখ সহজেই শরীরে বাসা বাঁধে তার অন্যতম ফ্যাটি লিভার। সহজে এই অসুখের লক্ষণ বোঝার উপায়ও থাকে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিভারে যত বেশি মেজ জমবে হৃদরোগের আশঙ্কাও ততটাই বাড়বে।
ফ্যাটি লিভার দুই রকম। অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক (Non-alcoholic fatty liver)। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান থেকে লিভারে চর্বি জমলে তা অ্যালকোহলিক ফ্যাট। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি মূলত খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত তেল, ফ্যাট জাতীয় উপাদান বেড়ে গেলে হয়। কখনও কখনও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার বংশগত কারণেও হতে পারে।
উপসর্গ কী?
ফ্যাটি লিভারের প্রাথমিক লক্ষণগুলি আলাদা করে চেনা সত্যিই খুবই মুশকিল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে বোঝা যায় না। সেক্ষেত্রে অন্য সমস্যার সমাধানের জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করতে গিয়েই সমস্যা ধরা পড়ে। তবে লিভারের অসুখের কিছু সাধারণ উপসর্গ দেখা যায়।
◆ পেটের ডান পাশে ওপরের দিকে ব্যথা
◆ ভার ভার ভাব বা অস্বস্তি
◆ দুর্বলতা বা খুব অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়া
◆ মেদবাহুল্য
মদ খান না, তাও মেদ জমছে লিভারে?
নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ঘরে ঘরে। লিভার আমাদের শরীরের অঙ্গগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড়। আমরা যা খাই, তা হজম করা, খাবার থেকে পাওয়া শক্তি সঞ্চয় করা আর টক্সিন বের করে দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ লিভারই করে থাকে। এই লিভারের কোষে নানা কারণে ফ্যাট জমে। খুব অল্পস্বল্প ফ্যাট জমলে তা স্বাভাবিক। কিন্তু চর্বির পরিমাণ বাড়লেই মুশকিল। অনেকেই বলেন, অ্যালকোহল ছুঁয়েও দেখেন না, তাও ফ্যাটি লিভার ভোগাচ্ছে। এর কারণই হল ট্রান্স ফ্যাট এবং তার থেকে মেদবাহুল্য।
কারও বিএমআই নির্ভর করে তাঁর উচ্চতা ও ওজনের হিসেবের উপরে। সাধারণ ভাবে বিএমআই-এর ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয় ২৫। কিন্তু তা ৩০ ছাড়িয়ে গেলে ‘সিভিয়র ওবিসিটি’ বলে ধরা হয়। ফ্যাটি লিভারের রোগীর বিএমআই স্বভাবতই বেশি থাকে। নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সব থেকে বড় লক্ষণ মেদবাহুল্য। ভুঁড়ির বেড় যত বাড়বে হৃদযন্ত্রের ওপর তার প্রভাবও বেশি হবে।
ফ্যাটি লিভারের হাত ধরেই হানা দিতে পারে লিভার সিরোসিস। লিভার তার নিজস্ব কর্মক্ষমতা হারিয়ে মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দিতে পারে।
Protein Bar: প্রোটিন বারে কি এনার্জি বাড়ে? খাওয়া ভাল না খারাপ
খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর দিন
প্রথমেই নজর দিন খাদ্যাভ্যাসে। কোথায় কোথায় ভুল রয়েছে, খুঁজে বের করুন। যতটা সম্ভব তেল-মশলাযুক্ত খাবার কম খান। সবুজ শাকসবজি ও নিয়মিত ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার যকৃতের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ রাখুন খাদ্যতালিকায়। কাঠবাদাম, ওয়ালনাট, ফ্ল্যাক্সসিড ও অলিভ ওয়েল খেতে পারেন।
প্রতিদিন ১ গ্লাস করে লেবুজল খান। ঈষদুষ্ণ জলে অ্যাপল সিডার ভিনিগার মিশিয়েও খেতে পারেন। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে এটি বেশ সহজ উপায়।
অতিরিক্ত ওজন থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
খুব কম পরিমাণে চিনি, লবণ, রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং সম্পৃক্ত ফ্যাট দাতীয় খাবার খান। তেলে ভাজা বা চর্বিজাতীয় খাবারে রাশ টানুন।
মেটাবলিক সিনড্রোম, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, হেপাটাইটিস ভাইরাসজনিত কোনো সমস্যা থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা করান।