শীতে লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে বেশি ঘুমোচ্ছেন? অতিরিক্ত ঘুম কিন্তু মোটেও ভাল নয়

গুড হেলথ ডেস্ক

শীত পরলে আর বিছানা ছাড়তে ইচ্ছা করে না। লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে দিনভরই ঘুমিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। এই শীতে প্রয়োজনের থেকে একটু বেশিই ঘুমোচ্ছেন (oversleeping ) কি? পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি, কিন্তু তা প্রয়োজনের বেশি হলেই মুশকিল।

ঘুম যাদের একটু বেশি, আলস্যও বেশি, তাঁদের আমরা কথায় কথায় কুম্ভকর্ণ উপাধি দিয়ে ফেলি। ভোঁস ভোঁস করে দিনরাত ঘুমোলে তো কথাই নেই। আত্মীয়-বন্ধু মহলে তাঁর নাম কুম্ভকর্ণ হবেই হবে।

জানেন কি, কম ঘুম যেমন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, তেমনি বেশি ঘুমোনোও কিন্তু একইরকম সমস্যার। যাঁদের দিনে নয়-দশ ঘণ্টা বা তার চেয়েও বেশি ঘুমোনোর অভ্যেস, তাঁদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে অনেকরকম রোগ। ওজন বেড়ে যাওয়া তো আছেই, তার সঙ্গে মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এমনকী শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মতো কঠিন অসুখও। বেশি ঘুমোনোর ফলে ডিপ্রেশনের কবলে পড়েছেন, এমন উদাহরণও অনেক রয়েছে।

Oversleeping Side Effects

বেশি ঘুমের (oversleeping ) কারণ অনেক

কম ঘুম বা অনিদ্রার পিছনে যেমন কয়েকটি নির্দিষ্ট কারণ থাকে, তেমনি অতিরিক্ত ঘুমও শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে হতে পারে।

দিনভর আলস্য, ঘুম ঘুম ভাব, উঠতে ইচ্ছা না করা এসবের পেছনে অনেক কারণ আছে। থাইরয়েডের সমস্যা যেমন একটা কারণ, তেমনই স্লিপিং ডিসঅর্ডারও কারণ হতে পারে।

Hypersomnia

ডাক্তারবাবুরা বলেন, হাইপারসমনিয়া হল নিউরোলজিক্যাল স্লিপিং ডিসঅর্ডার। হাইপারসমনিয়া হলে দিনের বেলাতেও জেগে থাকা বেশ কষ্টসাধ্য। চোখের পাতা সবসময়েই ভারী হয়ে আসে। সারাদিনের বেশিটা সময়েই ঘুমোতে ইচ্ছে করে। এই হারপারসমনিয়া নানা কারণে হতে পারে। স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলে, কিডনির অসুখ হলে, মাথায় কোনওরকম আঘাত লাগলে তার থেকেও হতে পারে।

আবার অতিরিক্ত মদ্যপান, ওবেসিটি, অবসাদ থাকলে তার থেকেও হাইপারসমনিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

দীর্ঘদিন ধরে একটানা ক্লান্তির শিকার হলেও অনেকে বেশি ঘুমিয়ে পড়েন। আবার কোনও শারীরিক কারণ ছাড়াই, শুধুমাত্র অনিয়মিত জীবনশৈলীর কারণেও অনেকে বেশি ঘুমোন।

সময় মেপে ঘুমোন

দিনে কম করেও ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা টানা ঘুম দরকার। তবেই বর্তমান লাইফস্টাইলের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে গুছিয়ে নেওয়া যাবে। ঘুম না হলেই বিপদ আসবে নানা ভাবে। আবার বেশি ঘুম (oversleeping ) হলেও শরীর ভোগাবে, হার্টের রোগ হানা দেবে। অতিরিক্ত চিন্তা, টেনশন থেকে মানসিক রোগে ধরবে, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড একে একে সবই আসবে হুড়মুড়িয়ে।

Oversleeping Effects

ঘুমের তাই নির্দিষ্ট রুটিন করা জরুরি। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোতে যান এবং সকালে একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন। নিয়মিতভাবে এটা বেশ কিছুদিন করতে পারলে শরীর ধাতস্থ হয়ে যাবে, ঘুমের নির্দিষ্ট ছন্দ আসবে।

শরীরচর্চার অভাব সবচেয়ে বড় শত্রু। হাত-পায়ে ঝিমঝিম ভাবটা (fatigue) সে জন্যই হয়। সময় বের করে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট এক্সারসাইজ করুন। কিছু না পারলে হাঁটুন, এর থেকে ভাল ব্যায়াম নেই।

অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা না করাই ভাল, বিশেষত ঘুমনোর সময়। স্ট্রেস ফ্রি হয়ে ঘুমোতে যান।

শরীরের ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ ক্লান্তি, অবসাদ, স্ট্রেস। এর থেকেই শরীরে বাসা বাঁধে গুরুতর সমস্যা। তাই ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চা করে ওজন কমিয়ে ফেলুন। ওজন কমলে আপনা থেকেই শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়বে।