
Piles: কোষ্ঠকাঠিন্যের কষ্ট, তার ওপর পাইলসের জ্বালা, বাথরুমে যাওয়াই যেন আতঙ্ক
গুড হেলথ ডেস্ক
পেট পরিষ্কার হলে তবেই তো মুখে হাসি ফুটবে। সারাদিন মেজাজও থাকবে ফুরফুরে। আর পেটই যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাহলে তো কথাই নেই। তখন পেট খোলসা করতে গেলেই বিপদ (Piles)। কেউ যেন সজোরে চাবুক কষাবে মলদ্বারে। তীব্র যন্ত্রণা। ফিনকি দিয়ে রক্ত। মলদ্বার থেকে ঝুলন্ত মাংসপিণ্ড রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবে। এ যে কী কষ্ট, যার হয় সেই বোঝে।
পাইলস বড় ভয়ঙ্কর, ভীষণ কষ্ট
দীর্ঘকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদের পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ দেশে প্রায় এক কোটি বা তারও বেশি মানুষের কাছে সকালটা কার্যত বিভীষিকা। কারণ প্রাতঃকৃত্য সারার ভয়। এঁদের বেশিরভাগই পাইলসের সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছেন। এ দেশে প্রায় প্রত্যেক পরিবারেই এক জন অর্শ নিয়ে কষ্ট পান। কেউ বলেন, কেউ চেপে যান। হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আরও গোলমাল বাঁধিয়ে বসেন। ছোট বাচ্চাদের মধ্যেও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ইদানীং বেশিই দেখা যাচ্ছে। যার কারণ তাদের খাওয়ার অভ্যাস। ফাইবারের বদলে জাঙ্ক ফুডে আসক্তি বেশি। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন হয়, তারপরই বড় সমস্যার সূূত্রপাত হয়।
সাধারণ রোগীর পক্ষে পাইলস (Piles), ফিসার, ফিসচুলা ইত্যাদির মধ্যে পার্থক্য করা অসম্ভব ব্যাপার। কারণ, প্রতিটিই পায়ুদ্বার সংক্রান্ত। উপসর্গও প্রায় একই ধরনের। প্রতিটির ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। আবার বেড়ে গেলে অস্ত্রোপচারও করাতে হতে পারে। মলদ্বারে ব্যথা বা মলত্যাগের সময়ে কাঁচা রক্ত পড়তে শুরু করলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীর তার নিয়ম মেনেই কাজ করবে। মলদ্বারে বেশি চাপ পড়া মানেই পাইলসের মতো উটকো রোগ এসে হানা দেবে। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে জোর করে চাপ দিয়ে মলত্যাগ করার চেষ্টা করেন অনেকে, এর থেকেও পাইলস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য বড় বালাই
পাইলস হল অ্যানাল ক্যানালের রোগ। পায়ুপথের শিরা ছিঁড়ে গিয়ে এই রোগ হতে পারে। অর্শের ডাক্তারি নাম হেমারয়েড (Hemorrhoids)। এই রোগের অন্যতম প্রধান কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য। মলত্যাগে বাধা এলে, পায়ুপথের শিরায় রক্ত চলাচল বাধা পায়। অনেক সময় চাপ পড়ে শিরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেকের ক্ষেত্রে শিরা ছিঁড়ে গিয়ে বেশি রক্তপাতও হয়, তখন অস্ত্রোপচার করাতে হয়। ক্রনিক ডায়ারিয়া, বেশি ওজন বা ওবেসিটি, জল কম খাওয়া, ডিহাইড্রেশন, লিভারের রোগ বা লিভার সিরোসিস থাকলেও পাইলস হানা দেয়। পেটের টিউমার থেকেও পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়।
Non-alcoholic fatty liver: লিভারে মেদ জমছে? শরীরই জানান দেবে আপনার হার্ট ভাল নেই
গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ৪—চার রকমের পাইলস (Piles) হতে পারে। মাংসপিণ্ড যদি মলদ্বারের রাস্তায় থাকে তাহলে সেটা ফার্স্ট ডিগ্রি হেমারয়েড, যদি কখনও বাইরে আবার কখনও ভেতরে থাকে তাহলে সেকেন্ড ডিগ্রি। যদি সমস্যা আরও বড় হয়, যেমন পায়ুপথের শিরার ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে গেল তাহলে তীব্র যন্ত্রণা হয়, তখন তাকে বলে থ্রম্বোসড হেমারয়েড। আর চতুর্থ ডিগ্রি মানেই মাংসপিণ্ড একেবারে বাইরে বেরিয়ে ঝুলে পড়া, তখন রক্তপাত বন্ধ হয় না অনেকেরই। এ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করাতে হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য সারান, পাইলসের (Piles) ভয় কমবে
প্রথম পর্যায়ে মলম, ইনজেকশন বা রাবার ব্যান্ড লাইগেশনের সাহায্যেই রোগ নিরাময় করা সম্ভব।
বাড়াবাড়ি হলে অস্ত্রোপচার করাতেই হবে।
পাইলস বা পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও অসুখের জন্য পরোক্ষ ভাবে দায়ী অনিয়মিত লাইফস্টাইলও। সেক্ষেত্রে লাইফস্টাইল বদলে ফেলে রোগের মোকাবিলা করা অনেক সহজ। জোর দিন ডায়েটে। ফাইবারযুক্ত ফল, সবুজ আনাজপাতি, তুষযুক্ত দানাশস্য বেশি করে রাখতে হবে, তেমনই জল খাওয়ার অভ্যাসও বাড়াতে হবে।
ক্য়াফেইন আছে এমন খাবার, তেলঝাল মশলাদার খাবার, জাঙ্ক ফুড একেবারেই চলবে না।
পাইলসের রোগীরা ভুলেও শুকনো লঙ্কা খাবেন না। রোজকার খাবারেও ঝাল কম খান।
কনস্টিপেশনের সমস্যায় শাকপাতা, বেল, ইসবগুল খুবই উপযোগী পথ্য। এই সব খাবারে সেলুলোজ থাকে, যেটা আমরা হজম করতে পারি না। এতে স্টুলের পরিমাণও বাড়ে।