
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় ফ্লু ভ্যাকসিন? ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিয়ে বিপদ কেটেছে অনেকের
গুড হেলথ ডেস্ক
ঋতু বদলে জ্বর, সর্দি-কাশির হানায় প্রাণ ওষ্ঠাগত। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো আছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট। আর ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরা পড়লে তো কথাই নেই। আরও এক সংক্রামক ভাইরাস যা শরীরকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে। এতদিন ভাইরাল ফ্লু (Flu Vaccine) নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছিল মানুষজন, এর মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস, মাঙ্কিপক্স। ইনফ্লুয়েঞ্জার সমগোত্রীয় না হলেও রোগের ধরনে মিল আছে। তাই এখন ফ্লু ভ্যাকসিন নিয়ে রাখার পরামর্শই দিচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। আরও একটা ভাল ব্যাপার দেখা গেছে। ফ্লু ভ্যাকসিন নিয়ে রেখেছেন যাঁরা তাঁদের নাকি স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে গেছে।
‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব নিউরোলজি’ মেডিক্যাল জার্নালে মাদ্রিদের গবেষকরা একটি রিসার্চ পেপার প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞানী জে দি অ্যাবাজো এবং তাঁর টিম ফ্লু ভ্যাকসিন (Flu Vaccine) নিয়ে গবেষণা করছেন। বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকায় স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমছে বলে দেখা যাচ্ছে। এমন রোগীকেও দেখা গেছে যিনি স্ট্রোক হওয়ার ১৪ দিন আগে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন এবং ম্যাসিভ অ্যাটাক থেকে বেঁচে গেছেন।
গবেষকরা ১৪, ৩২২ জন রোগীকে আলাদা করে পরীক্ষা করেছেন যাঁদের স্ট্রোক হয়েছে এবং ৭১,৬১০ জনকে আলাদা রেখেছেন যাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ছিল কিন্তু হয়নি। দেখা গেছে, এই ৭১ হাজারের মধ্যে অধিকাংশই ফ্লু ভ্যাকসিন (Flu Vaccine) নিয়েছিলেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শীতের দেশগুলিতে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ খুবই বেশি। ‘আমেরিকান লাঙ অ্যাসোসিয়েশন’ তাদের একটি সমীক্ষায় বলেছিল, প্রতি বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা (Flu Vaccine) ভাইরাসের দাপটে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় আমেরিকায়। বিশ্বজুড়েই ভাইরাল জ্বরের কারণে প্রতি বছর মৃত্যু হয় বহু মানুষের। তাই ডাক্তাররা, ফ্লু ভ্যাকসিন নিয়ে রাখতে বলেন। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস করোনার মতো অত দ্রুত ছড়ায় না। অসুখ ধরা পড়ে ২-৩ দিনের মধ্যে। ১০৩-১০৪ ডিগ্রি জ্বর উঠতে পারে, সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি, পেশীর ব্যথা, খিঁচুনি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। বাড়াবাড়ি হলে নিউমোনিয়ার পর্যায়ে চলে যেতে পারে। ফ্লু ভ্যাকসিন সেক্ষেত্রে সুরক্ষা দেয়।
আরও উপকারিতা আছে ফ্লু ভ্যাকসিনের। গবেষকরা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে পারবে এই ভ্যাকসিন, যা এই সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফ্লু ভ্যাকসিন নেওয়ার ১৪ দিন পর থেকেই রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করে। টিকা রক্তরসে মিশে গিয়ে বি-কোষকে সক্রিয় করে তোলে। মেমরি বি-কোষ জেগে ওঠে। ‘অ্যাডাপটিভ ইমিউন রেসপন্স’ তৈরি হয় শরীরে। যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় রক্তে তার স্থায়িত্বও বেশি। একবার ফ্লু ভ্যাকসিন নিলে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা পাওয়া যায়।