
Silent Stroke: হঠাৎ করেই স্ট্রোক? কীভাবে বুঝবেন, রোগীকে বাঁচাবেন কী করে
দিব্যি সুস্থ মানুষ। আচমকাই হাত-পা অবশ, আটকে যাচ্ছে কথা, বেঁকে যাচ্ছে মুখ (Silent Stroke)। এটাই অ্যালার্মিং। তখনই বুঝতে হবে ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। অনেকের আবার লক্ষণ জানান না দিয়ে অজান্তেই স্ট্রোক হয়ে যায়। মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ করেই অসাড় হয়ে যায় শরীরের একটা দিক। প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে। হাত-পা নড়াচা়ড়া করা ছাড়াও শরীরের এমন অনেক অংশ মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে, যা আমরা চোখে দেখতে পাই না। মস্তিষ্কের তেমন কোনও অংশে যদি রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে স্ট্রোক ধরা পড়া সম্ভব হয় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। তখন একে ডাক্তারি ভাষায় বলে সাইলেন্ট স্ট্রোক (Silent Stroke)।
কী কী লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন
যদি কথা বলতে বলতে আচমকা জিভ অসাড় হয়ে যায় অথবা অল্প সময়ের জন্যে চোখে অন্ধকার দেখেন অর্থাৎ ব্ল্যাক আউট হয় তাহলে সাবধান হতে হবে।
কাজ করতে করতে হাত-পা বা শরীরের কোনও একদিক হঠাৎ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
চোখে দেখতে সমস্যা হয়। ঝাপছা দৃষ্টি বা ডাবল ভিশন হতে পারে।
কথা বলতে অসুবিধে হয় অথবা ঢোক গেলা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
মুখ থেকে লালা বেরতে থাকে।
সম্পূর্ণ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায় রোগী।
সাইলেন্ট স্ট্রোক মারাত্মক, স্মৃতিনাশও হতে পারে
সাইলেন্ট স্ট্রোক জানান দিয়ে আসে না। যদি একসঙ্গে পর পর এমন স্ট্রোক হয় তাহলে স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে রোগীর। ভ্যাস্কুলার ডিমেনশিয়া নামে এক ধরনের ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশ হতে পারে রোগীর। এই ধরনের স্নায়বিক রোগে সব কিছুই অচেনা লাগতে শুরু করে রোগীর। চেনা-পরিচিত জনকেও ভুলে যায়। কোনও স্থান বা মানুষজনকে চিনতে পারে না। অকারণে হাসি বা কান্না পায়।
এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করে ডাক্তারবাবুরা বুঝতে পারেন মস্তিষ্কের কোন অংশে ক্ষতি হয়েছে।
কী কী কারণে হতে পারে সাইলেন্ট স্ট্রোক
ধমনী সরু হয়ে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে
হাইপারটেনশন বা হাই ব্লাড প্রেসার
উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল
ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, কিডনির রোগ
রক্ত জমাট বেঁধেও বিপদ হতে পারে
টাইম ইজ ব্রেন
হাই প্রেশার, সুগার-সহ নানা রিস্ক ফ্যাক্টর মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ আটকে দেয়। এদিকে রক্তের মধ্যে ভেসে বেড়ানো চর্বির ডেলা আচমকা ধমনীতে আটকে গিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। ফলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হতে হতে অকেজো হয়ে যায়। একেই স্ট্রোক বলা হয়।
চোখ দেখে ধরা যাবে স্ট্রোক হবে কিনা! মাথার ব্যামোর পূর্বাভাসও দেবে রেটিনা
কয়েক মিনিট এরকম কথা বলতে না পারা, হাত বা পা অসাড় হয়ে যাওয়া অথবা চোখে অন্ধকার দেখার মতো ঘটনাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘ট্র্যানসিয়েন্ট ইসকিমিক অ্যাটাক’ বা ‘টিআইএ’। সাধারণ ভাবে একে মিনি স্ট্রোক বলা যায়। এই সময়ে দ্রুত চিকিৎসা না হলে বড় ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা থেকে যায়। স্ট্রোকের পর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সঠিক চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া দরকার। না হলে বাঁচার ঝুঁকি ক্রমশ কমে যায় অথবা প্রাণে বাঁচলেও রোগীর প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এখন অস্ত্রোপচারের পরিবর্তে হার্টের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির মতোই মস্তিষ্কের ধমনীর জমাট বাঁধা রক্ত ছাড়িয়ে দেন ডাক্তারবাবুরা।