
কোলেস্টেরল এমন এক খারাপ জিনিস যা শরীরে নানা সমস্যা, অসুখবিসুখ ডেকে আনে। রক্তে বেশি কোলেস্টেরল এলেই শারীরিক নানা সমস্যা শুরু হতে পারে।এর প্রভাব শরীরের বহিরঙ্গেও দেখা দেয়। তাই একটু সচেতন হলেই বুঝে যাওয়া যায় কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ছে কি না।
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে তার নানা লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন–চোখের নীচে বা চোখের পাতায় সাদাটে বা হলদেটে ফোলাভাব দেখা যায়। উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে রক্তনালীতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে হৃদযন্ত্রে চাপ পড়ে বুকে ব্যথা হতে পারে। শরীরে অস্বস্তি, অল্প পরিশ্রমেই হাঁফ ধরে যাওয়া, এই উপসর্গগুলো দেখা দিতে থাকে।
কোলেস্টেরল কমাতে খাওয়াদাওয়ার দিকে আগে নজর দেওয়া দরকার। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ‘থেরাপিউটিক লাইফস্টাইল চেঞ্জেস’ বা সংক্ষেপে টিএলসি ডায়েটে (TLC Diet) আছে সেই সমাধানের রাস্তা। হাই কোলেস্টেরল কমাতে টিএলসি ডায়েট মানার পাশাপাশি শরীরচর্চাও করতে হবে, সেই সঙ্গে লাইফস্টাইল ম্য়ানেজমেন্ট খুব দরকার। নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া, ঘুম, এক্সারসাইজ, নেশা বাদ দেওয়া ইত্যাদি মেনে চললে কোলেস্টেরল অনেকটাই বশে রাখা সম্ভব।
টিএলসি ডায়েট কী?
ঠিক যতটুকু ক্যালোরি শরীরে দরকার, ততটুকুই মেপে খেতে হবে। মোট ক্য়ালরির ২৫ শতাংশ আসবে উপকারি বা ভাল ফ্যাট থেকে (TLC Diet)। দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ফাইবার চলবে না, স্য়াচুরেটেড ফ্যাট যেন ১০ শতাংশের কম থাকে। নানা রকম বাদাম, দানাশস্য, উদ্ভিদের বীজ খেতে হবে। সেই সঙ্গেই অন্তত আধ ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে হবে।
কী কী খাবেন
সবুজ সব্জি, ফল
নানা রকম বাদাম
দানাশস্য যেমন জোয়ার-বাজরা রাগি, ওটস, কিনোয়া, ব্রাউন রাইস
উদ্ভিজ্জ প্রোটিন
লিন মিট—চিকেন, মাছ
কী কী খাবেন না
তেলমশলাদার খাবার
রেড মিট, প্রসেসড মাংস
প্য়াকেটজাত খাবার
জাঙ্ক ফুড, চাউমিন-ম্যাগি, বেক করা খাবার
চিপস, ভাজাভুজি, ডিপ ফ্রায়েড খাবার, সফট ড্রিঙ্কস
অ্য়ালকোহল
কোলেস্টেরল হাই থাকা মানে, সেগুলি হার্টের রক্তনালীর দেওয়ালগুলিতে অশুদ্ধি বা প্ল্যাক জমাতে থাকে। এর ফলে নালী সরু হতে থাকে। নালী সরু হওয়া মানে, হার্টে রক্ত-চলাচল বাধা পায়। যার ফল অবশ্যম্ভাবী হৃদরোগ।
বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিদের হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশের পারিবারিক হাইপার কোলেস্টেরলের ইতিহাস আছে। তাঁরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই নিয়ে সচেতন নন (TLC Diet)। ফলে না হয় পরীক্ষা, না ধরা পড়ে সমস্যা। একেবারে সরাসরি হার্ট অ্যাটাকের মুখে পড়ছেন তাঁরা। এটার প্রবণতা দিনকেদিন বাড়ছে। তাই এখন থেকেই সচেতন হতে হবে।