
ভাইরাল জ্বরে বেশি ভুগছে বাচ্চারা, ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি, কীভাবে সাবধান থাকবেন
গুড হেলথ ডেস্ক
প্রাপ্তবয়স্করা শুধু নয়, ভাইরাল জ্বরে (Viral Fever) ভুগছে বাচ্চারাও। কিছুদিন আগেই বাচ্চাদের মধ্যে টম্যাটো জ্বর ছড়াচ্ছে বলে খবর শোনা গেছিল। এখন ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো ভাইরাল জ্বর, টাইফয়েড, ডায়ারিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। পেট খারাপ, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, পেটে ব্যথার মতো কিছু উপসর্গ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে।
হঠাৎ করেই গরমের মধ্যে পরিবেশের বদল ঘটায় শরীরেও তার প্রভাব পড়ছে। তা ছাড়া বাড়িতে একে অন্যের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ বিশেষ ছিল না। কিন্তু স্কুলে বাচ্চাদের পক্ষে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কঠিন। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তাছাড়া বাচ্চাদের রাস্তার খাবার খাওয়ার প্রবণতাও নানা অসুখবিসুখের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। কোল্ডড্রিঙ্কস, চিপস, আইসক্রিম, রাস্তার আচার, রঙিন শরবত, রোল-চাউমিন ইত্যাদির কারণে পেট ব্যথা, পেট খারাপের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশের জ্বরের (Viral Fever) তাপমাত্রা থাকছে ১০৪ ফারেনহাইট মতো।
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, কখনও ভ্যাপসা গরম, কখনও বৃষ্টি, ঘরে এসি, বাইরে রোদ, গরম থেকে ফিরে ফ্রিজের ঠান্ডা জল খাওয়া — সব মিলিয়ে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে শিশুদের মধ্যে। জ্বরের সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা, দুর্বল লাগা, স্বাদে অরুচি এগুলি অসুখের অন্যতম লক্ষণ।
বাবা-মায়েরা কী কী দিকে খেয়াল রাখবেন
■ পেটের অসুখ এড়াতে পরিশোধিত জল খেতে হবে। ফিল্টার করে বা ফুটিয়ে জল খেতে পারলে ভাল।
■ বর্ষার জমা জল এডিস, অ্যানোফিলিস মশাদের বংশবিস্তারের জন্য আদর্শ। তাই বাড়িতে বা বাড়ির আশপাশে যাতে জল না জমে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
■ শ্বাসনালির সংক্রমণের প্রবণতা যাঁদের রয়েছে (Viral Fever), তাঁদের জরুরি ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন, নিউমোক্কাল ভ্যাকসিন নিয়ে রোগ প্রতিরোধ করতে হবে।
বর্ষা আসতেই ঘরে ঘরে ভাইরাল জ্বর, কী কী লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন
■বাচ্চাদের বাইরের খাবার খেতে দেবেন না। বাড়িতেই হাল্কা, কম তেলে রান্না করা খাবার খাওয়ান।
■ শরবত খেতে চাইলে বাড়িতেই বানিয়ে দিন, নুন-লেবুর শরবত, লস্যি, ফলের রস খাওয়ান।
■ রাস্তার খাবার, জাঙ্ক ফুড, আইসক্রিম, চিপস একদম খাওয়া চলবে না।
■ হলুদ যে কোনও ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ থেকে দ্রুত সুস্থ হতে ভীষণ উপকারী। গরমের দিনে জ্বরে ভুগলে গলা ব্যথা, কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে দিনে দু’ বার এক কাপ গরম দুধে এক চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে দিন।
■ গরমের দিনে ভাইরাল সমক্রমণ হলে গরম জলের ভাপ নিলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে গরম জলের পাত্রে ইউক্যালিপটাস তেল বা মেন্থল তেল দিয়ে দিনে তিন থেকে চার বার ভাপ নিতে হবে। এতেই সংক্রমণ কমবে।
■ মধুও ভাইরাল সংক্রমণ কমাতে বেশ উপকারী। গরমের দিনে ভাইরাল সংক্রমণে কাবু হলে প্রতি দিন সকালে এক চামচ মধু এক চামচ আদার রসে মিশিয়ে খান, বাচ্চাদেরও দিন।
■ হালকা জ্বর, মাথা ব্যাথার মত উপসর্গ থাকলে হুটহাট অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। নিজে ডাক্তারি করবেন না।
■ ২-৩ দিনে জ্বর না কমলে রক্ত পরীক্ষা করানো দরকার।