
সারাক্ষণ মনে হয় খিদে নেই। অভ্যাসে চার বেলা খাওয়া হচ্ছে। পেট ভার, খাবার মুখে তুললেই বিস্বাদ, অরুচি। এমন সমস্যায় ভুগছেন বা ভোগেন অনেকেই ( Loss of Appetite)। বাচ্চাদের মধ্যেও এই সমস্যা হামেশাই দেখা যায়। কিছু খেতে ইচ্ছে করে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা কারণে খাবার ইচ্ছা চলে যেতে পারে বা খাবারে অরুচি হতে পারে। অত্যধিক গ্যাস-অম্বল, লিভারের সমস্যা, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ভিটামিনের অভাব অথবা মানসিক সমস্যা–এইসব কারণে খিদে কমে যাওয়া, খিদে না হওয়া, খাবারে অরুচির মতো সমস্য়া দেখা দেয়।
শরীর সুস্থ রাখার জন্য ভিটামিন এবং মিনারেল প্রয়োজন ( Loss of Appetite)। তার জন্য চাই যথেষ্ট নিয়ম করে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস। পেটে গ্যাস হলে তলপেটে ব্যথা হয় এবং খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। অনেক সময়ে ইরিটেবল বাওয়াল সিন্ড্রোম থাকলেও এমন হতে পারে। সবসময় পেট ভার লাগে।
কেন হচ্ছে এমন? কীভাবে সমস্যা মিটবে?
অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকলে গ্যাস বা অম্বলের প্রকোপটা বেড়ে যায়। তাই, বেশিক্ষণ পেট খালি রাখা ঠিক নয়। প্রতি তিন-চার ঘণ্টা পরপর কিছু না কিছু খেতেই হবে।
লিভারের সমস্যা হলে হঠাৎ করে খিদে কমে যাওয়ার পাশাপাশি ক্লান্তি, মাথা ঘোরা এবং ডায়েরিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। এমন লক্ষণ দেখা গেলে বুঝতে হবে লিভারে কোনো সমস্যা অথবা লিভার রোগাক্রান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
স্বাদ বা গন্ধের অনুভূতি চলে গিয়ে কোনও খাবারই মনের মতো লাগছে না। তার সঙ্গে চরম উদ্বেগ। সব মিলে খাওয়ার ইচ্ছা প্রায় থাকছে না। সবসময় যে করোনার কারণে এমন হচ্ছে তা নয়, শরীরে কোনও রকম অসুখ হলে এমন হতে পারে। তার জন্য পর্যাপ্ত খাওয়াদাওয়া ও বিশ্রাম দরকার।
ভিটামিন সি-এর ঘাটতি থাকলে ক্লান্তি, কনস্টিপেশন, দাঁত থেকে রক্ত পড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। অবসাদের কারণে এবং ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও খাবারে অরুচি হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, পাকস্থলীর ক্যানসার, কোলন ক্যানসার, অগ্ন্য়াশয়ের ক্যানসার এবং জরায়ুমুখের ক্যানসারে মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে খাওয়ার ইচ্ছেটাই থাকে না আর। তবে এটা অনেক পরের ব্যাপার। সাধারণভাবে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হলে ও ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে খাবারে অরুচি হতে পারে।
ভিটামিন সি-র অভাব শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়। তার জেরেই হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যা হতে পারে। ওজন কমে যাওয়া, বুক ধরফর করা, খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এমন হলে ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে ( Loss of Appetite)।
খাবার ইচ্ছে না থাকলে বা বেশি খেতে পারছেন না যাঁরা তাঁরা এমন খাবার বেছে নিন যাতে পুষ্টি সহজেই পাওয়া যায়। ফলমূল, সবুজ শাকসব্জি, ওটস, দানাশস্য, বীজ জাতীয় খাবার, দুধ ও লিন মিট খেতে পারেন। মাছ খাওয়া খুব ভাল, এতে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
ফাস্ট ফুড খাওয়া কমিয়ে দিন। খিদে নেই তাই মুখের স্বাদ ফেরাতে চিপস, রোল-টাউমিন বা ডিপ ফ্রায়েড মাংস খেয়ে ফেললে হিতে বিপরীত হবে ( Loss of Appetite)। এতে সমস্যা আরও বাড়বে।
দুধ খেতে ইচ্ছে না হলে ছানা বানিয়ে খান। লেবুর রস দিয়ে দিন স্বাদ বাড়ানোর জন্য। চিকেন সেদ্ধ করে স্যালাড বানিয়ে খান। এতেও পুষ্টির ঘাটতি মিটবে। কার্বোহাইড্রেট বেশি না খেয়ে ওটস খেতে পারেন। ওটস দিয়ে রুটি, প্যান কেক বানিয়ে খেলেও মুখে ভাল লাগবে।
প্রচুর পরিমাণে সিট্রাস ফল খান যাতে ভিটামিন সি আছে। ফলের রস বানিয়ে খান। ধীরে ধীরে স্বাদ ফিরে আসবে, খাবারে অরুচিও কাটবে।