
World Hypertension Day 2022: হাইপারটেনশনই দুর্বল করে হার্ট, মুঠো মুঠো ওষুধের বদলে সামান্য কিছু নিয়ম মানুন
গুড হেলথ ডেস্ক
বুকের কাছে চিনচিনে ব্যথা? প্রেশার মাপলেই ভিড়মি খাচ্ছেন? নীচের দিকের প্রেসার ৯০ ছাড়িয়েছে, আর ওপরের ১৪০? তাহলেই সতর্ক হতে হবে ঝটপট। গাফিলতি ডেকে আনতে পারে বিপদ। রক্তচাপ ঊর্ধ্বে উঠলে মানসিক চাপ বাড়িয়ে লাভ নেই, বরং সচেতনতাই দাওয়াই (World Hypertension Day 2022)। ‘রক্তচাপ মাপুন সময় মতো, নিয়ন্ত্রণে রাখুন ও দীর্ঘদিন বাঁচুন’, এ বছর বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবসের এটাই থিম।
হাইপারটেনশন মানে হল উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসেবে পৃথিবীর প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ হাইপারটেনশন (World Hypertension Day 2022) নিয়ে বেঁচে আছেন। রক্তচাপ বেড়ে হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোকে প্রতি বছরই ৭০-৮০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। অনেক সময়েই রোগের লক্ষণ বোঝা যায় না। আচমকাই বুকে ব্যথা, হৃদপিণ্ডে ধড়ফড়, তারপর সব শেষ। রক্তচাপ বশে না রাখলে একে একে বিকল হবে হৃদযন্ত্র, কিডনি, মস্তিষ্ক, চোখ-সহ শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশিরভাগ রোগী জানেনই না যে তাঁদের রক্তচাপ বাড়তে বাড়তে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কোনও শারীরিক অসুবিধা না থাকলেও বছরে এক বার হেল্থ চেক আপের সময় ব্লাড প্রেশার মেপে নেওয়া দরকার।
হাইপারটেনশন (World Hypertension Day 2022) মানেই গাদা গাদা ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখব মনে করলে হবে না। তার থেকেও সবচেয়ে ভাল উপায় হলে নিয়ম মেনে চলা ও লাইফস্টাইলে বদল। হাইপারটেনশন লাইফস্টাইল ডিজিজ, এখনকার সেডেন্টারি লাইফে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, শরীরচর্চা না করা, নেশার অভ্যাস বিপদ বাড়াচ্ছে। তাই রোজকার জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চললেই রক্তচাপ বশে থাকবে।
ঘরোয়া উপায়েই নিয়ন্ত্রণে রাখুন উচ্চ রক্তচাপ
১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের ও ৪০ উর্ধ্বদের নিয়ম করে ব্লাড প্রেশার চেক করাতেই হবে। বছরে অন্তত একবার হেলথ চেকআপের সময় প্রেশার মাপিয়ে নেওয়া ভাল।
Mango: ডায়াবেটিসের রোগীও আম খেতে পারবেন, পরিমাণটা জেনে নিন
পরিবারে কারও হাই কোলেস্টেরল বা হাইপারটেনশনের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি আছে। সেক্ষেত্রে লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট জরুরি।
Hypertension: হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের কারণ হাইপারটেনশন! লাইফস্টাইলেই ভাল থাকার চাবিকাঠি
অতিরিক্ত ধূমপান না করাই ভাল, অ্যালকোহলের নেশায় লাগাম টানতে হবে।
জোর দিতে হবে ডায়েটে। ওজন কমাতে এবং এনার্জি বাড়াতে ওটসের কোনও বিকল্প নেই। ডায়েটিশিয়ানরা ব্রেকফাস্টে ওটস খাওয়ারই পরামর্শ দেন। ওটসে সোডিয়ামের মাত্রা খুব কম, তা ছাড়া রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সবচেয়ে আগে নুন খাওয়া কমাতে হবে। কাঁচা নুন একেবারেই চলবে না। রান্নাতেও যতটা সম্ভব নুন কম দিন। অতিরিক্ত নুন রক্তে মিশে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায় এবং শরীরে সোডিয়ামের ব্যালান্স বিগড়ে দেয়।
প্রচুর পরিমাণে সবুজ সবজি খান। শাকপাতা দিয়ে কম মশলার তরকারি বানিয়ে নিন। সবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফোলেট যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। চেষ্টা করু সেদ্ধ সবজি বেশি খাওয়ার।
বেদানার রস খুব উপকারি। বেদানার রস রক্তাল্পতা নিয়ন্ত্রণে রাখে, উচ্চ রক্তচাপও কমায়।
পটাশিয়াম বেশি থাকায় কলা রক্তচাপ কমাতে খুবই কার্যকর। কলা তাই উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম উপকারি দাওয়াই।
বিটের রস খাওয়ার চেষ্টা করুন। বিটের রসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও পটাসিয়াম থাকায় রক্ত তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে।
শরীরচর্চা করুন। হাইপারটেনশনের জন্য কী ধরনের ব্যায়াম উপকারি তা বিশেষজ্ঞের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
ইউরিক অ্যাসিড, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাডের মাত্রা যাদের বেশি তারা হাই রিস্ক গ্রুপে আছেন। সেক্ষেত্রে ওষুধ ও লাইফস্টাইল মডিফিকেশন করে প্রেশার কমিয়ে রাখা উচিত। প্রত্যেক ছয় সপ্তাহ অন্তর ডাক্তারের কাছে চেকআপ করানো দরকার।