
World No-Tobacco Day 2022: সিগারেট ছাড়বেন ভাবছেন, কিন্তু পারছেন কই! চিন্তা নেই উপায় আছে
সিগারেট যে কতটা ক্ষতিকর তা এখন ইন্টারনেটের দৌলতে ছোট বাচ্চাও জানে। কিন্তু সুখটানেই মজে জেন এক্স-জেন ওয়াই। দু’ঠোঁটের ফাঁকে সিগারেট গুঁজে আরাম করে টান না দিলে ঠিক যেন নিজেকে স্মার্ট লাগে না। এখন তো স্টাইল স্টেটমেন্টের অঙ্গই হয়ে উঠেছে স্মোকিং (World No-Tobacco Day 2022)। ছেলেদের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিচ্ছে মেয়েরাও। ফুসফুস পুড়ছে, হার্ট ছাড়খাড় হচ্ছে, শ্বাসনালী জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। বিশ্ব তামাক প্রতিরোধী দিবসে সিগারেট ছাড়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন কার্ডিওলজিস্টরা।
নেশা করা যত সহজ ছাড়া ততটাই কঠিন। ‘ছাড়ব ছাড়ব করছি, কিন্তু ছাড়তে পারছি কই’… এমন অবস্থা যদি আপনারও হয়, তাহলে চিন্তা নেই। উপায় আছে (World No-Tobacco Day 2022)। কিছু নিয়ম মানলেই সিগারেট ছাড়া সহজ হয়ে যাবে। অনেকে আবার ভাবেন এতদিনের নেশা দুম করে ছেড়ে দিলে শরীর খারাপ হবে। কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, একবারে ছাড়ার দরকার নেই। ধীরেসুস্থে ছাড়ুন। শরীরকে যা সওয়ানো হবে তাই সইবে। খারাপ নেশা ছাড়তে শুরু করলে শরীরও নিজেকে ডিটক্স করা শুরু করবে। টক্সিন কমতে থাকবে শরীরে। আগের থেকে অনেক সুস্থ ও তরতাজা বোধ হবে।
সিগারেট ছাড়তে চাইছেন? কী কী করবেন
দিনে যদি পাঁচ প্যাকেট সিগারেট কিনতেন, সেখানে এক প্য়াকেট কিনুন। সারাদিনে বরাদ্দ যদি ১০টা সিগারেট হয়, সেটা কমিয়ে দুটোতে আনুন।
এখন ভাবছেন, কী করে এত কৃচ্ছসাধন করবেন? দিনের যে যে সময়টা সিগারেট খান খেয়াল করুন। ঠিক সেই সময়েই সিগারেট (World No-Tobacco Day 2022) খাওয়ার ইচ্ছা জাগলে মুখে কয়েকটা মৌরির দানা বা লবঙ্গ ফেলে দিন।
নিকোটিনের আসক্তিকে কমিয়ে দেয় মিন্ট। তাই পকেটে রাখুন মিন্ট জাতীয় চিউইং গাম। সেটা আবার গাদাখানেক খেয়ে নেশা ধরিয়ে ফেলবেন না!
অনেকে ভাবেন সিগারেট কমাতে বেশি করে চা-কফি খাবেন। ঠিক যে সময়টা মাথা দপদপ করছে, কাজের চাপ বেশি পড়েছে সেই সময় সিগারেট না খেয়ে বরং কফি বা চা খেয়ে নেবেন। এটা আরও ক্ষতিকর। ক্যাফেইন স্নায়ু ও পেশিকে আরও শুষ্ক করে তোলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার চেয়ে বরং জল খান বেশি করে। সিগারেট কমিয়ে দিলে শরীরে যে অস্থিরতা তৈরি হয় তা কমাতে পারে জলই। শরীর আর্দ্র থাকে, ফলে নেশার ইচ্ছে জাগে না।
ধোঁয়া টানার ইচ্ছে হলে জোয়ান, চিকলেট, আমলকি জাতীয় কিছু মুখে রাখুন। সিগারেট ধরানোর (World No-Tobacco Day 2022) পর পুরোটা না টেনে অর্ধেক ফেলে দেওয়ার অভ্যেস করুন। ক্রমশ তা বাড়িয়ে এক চতুর্থাংশ টেনে ফেলে দিন।
সিগারেট যখন কমিয়ে আবেন তখন ড্রাই ফ্রুটস বা টক জাতীয় ফল পরিমাণ বুঝে খান। কমলালেবু, পাতিলেবুর অ্যান্টিটক্সিন ক্ষমতা শরীরকে সুস্থ রাখে। এতদিন শরীরে নিকোটিন জমে যে ক্ষতি হয়েছে, তা ধীরে ধীরে সারিয়ে তোলে। ড্রাই ফ্রুটসে ক্যালোরি বেশি থাকায় শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরবর্তী পর্যায়ে শরীরকে ডিটক্স করে।
ধূমপান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেই সময়ে হাতের কাছে নোনতা খাবার রাখুন। ধূমপানের জন্য মন ছটফট করলেই নোনতা খাবার খান। দেখবেন এতে ধূমপানের তেষ্টা অনেকটা মিটে যাবে।
আপনার সামনে দাঁড়িয়েই একটার পর একটা সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন যাঁরা তাঁদের দেখলেই আপনারও মন উশখুশ করতে বাধ্য। তাই যদি ধূমপান ছাড়বেন ভেবেই থাকেন, তাহলে চ্যালেঞ্জ পুরো না হওয়া অবধি ধূমপায়ীদের সঙ্গ একটু এড়িয়ে চলুন।
Heart Attack: এ দেশের কমবয়সি, কর্মব্যস্ত জেনারেশনই হার্ট অ্যাটাকের শিকার, কিন্তু কেন?
কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, অর্থাৎ হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে ২৫–৩০%, স্ট্রোকের রিস্ক ২০-৩০%। আপনার সিগারেটের ধোঁয়া ক্ষতি করবে চারপাশের মানুষজনেরও। আপনার পরিবারের যাঁরা সিগারেট খান না, তাঁরাও তামাকজনিত জটিল রোগের শিকার হবেন। সেকেন্ড হ্যান্ড বা প্যাসিভ স্মোকিংয়ে ক্ষতি আরও বেশি। তাই সিগারেটকে বিদায় করে নিজেও সুস্থ থাকুন, কাছের মানুষদের ভাল থাকতে দিন।