Heart Attack: এ দেশের কমবয়সি, কর্মব্যস্ত জেনারেশনই হার্ট অ্যাটাকের শিকার, কিন্তু কেন?

গুড হেলথ ডেস্ক

শেন ওয়ার্নের মৃত্যুর পর আবারও নতুন করে মনে পড়েছিল মুম্বইয়ের অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লর কথা। কম সময়ের ব্যবধানে এমন দু’টি মৃত্যুসংবাদ ‌হতবাক করেছিল অনেককে। এক জন সবে ৫০ পার করেছেন। অন্য জনের বয়স মাত্র ৪০। আর এখন ৯০’র দশকে তরুণ প্রজন্মের হৃদয় কাঁপানো সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র মৃত্যুসংবাদ (Heart Attack) ফের একবার নাড়িয়ে দিয়ে গেল।

আগে মনে করা হত বয়স্করাই বুঝি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতিটা অন্য। হার্টের যে কোনও অসুখ হানা দিতে পারে যে কোনও বয়সে। ইদানীংকালে কমবয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে। কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, এ দেশের কমবয়সি ও কর্মব্যস্ত গোষ্ঠীর মধ্য়েই কার্ডিয়াক অ্য়ারেস্টের সংখ্য়া বেশি। হৃদরোগ এত দ্রুত ও এমনভাবে আসছে যে বাঁচানোর সময়টুকু পাওয়া যাচ্ছে না।

Heart Attack

মোদ্দা কথা, হৃদরোগ (Heart Attack) বয়স বাছবিছার করে আসে না। কোনও মানুষ যখন জন্মায়, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে তার হার্ট কাজ করতে শুরু করে। বলা ভাল, তারও আগে থেকে কাজ করতে শুরু করে। সেই যে শুরু, শরীরের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই অঙ্গের বিশ্রাম নেই। শরীরের অন্য সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই কোনও না কোনও সময় থামে, রেস্ট পায়, সে ঘুমের সময় হোক বা বিশ্রামের সময়। কিন্তু হার্টের ছুটি নেই। তাই এই নিরন্তর ছুটে চলা অঙ্গটিও ততটাই গুরুত্ব দাবি করে।

Heart Attack

আচমকাই ছন্দ হারায় হার্ট (Heart Attack), নেমে আসে নির্মম মৃত্যু

আচমকা হার্টের অন্যান্য দিক থেকে হৃদস্পন্দন একই সঙ্গে তৈরি হয়, ফলে হৃদস্পন্দন অনেক বেড়ে যায়, ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া দেখা যায়। পাম্পিং প্রায় বন্ধ হয়ে যায় যাকে বলে ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন। অক্সিজেনের অভাবে প্রথমে জ্ঞান চলে যায়, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যুও হতে পারে রোগীর। ইস্কিমিয়া হার্ট ডিজিজ হল সাডন ডেথের অন্যতম কারণ। হার্ট অ্যাটাক হয়ে হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা ৩৫ শতাংশের নীচে নেমে গেলে বিপদের আশঙ্কা বেশি৷ সঙ্গে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন (Heart Attack) থাকলে আরও বিপদ। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ দরকার।

কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, কোভিড অতিমহামারী হৃদরোগের আশঙ্কা অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, বিশ্বে যদি চারটি হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে একটি হবে এ দেশে। ইমিউনিটি বা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হেরফেরই কি এর কারণ?

Sudden Cardiac Arrest

ইমিউনিটি যখন বশে নেই

জন্ম থেকেই যে ইমিউনিটি শরীরে তৈরি হয় তাকে বলে ইনেট ইমিউনিটি। বেশিরভাগ মানুষই এই ইমিউনিটি নিয়েই জন্মান। আর প্রকৃতি থেকে যে ইমিউনিটি আমরা অর্জন করি তাকে বলে অ্যাডাপটিভ ইমিউনিটি। এর আবার দু’টি ভাগ– ন্যাচারালি অ্যাকোয়ার্ড ও আর্টিফিশিয়ালি অ্যাকোয়ার্ড। আর্টিফিশিয়াল বা কৃত্রিম ইমিউনিটির দুটি ভাগ অ্যাকটিভ ও প্যাসিভ। প্যাসিভ মানে হলে ইমিউনিটি বুস্টার ডোজ নিয়ে বাড়ানো রোগ প্রতিরোধ শক্তি। এখন কথা হল, এখনকার কর্মব্যস্ত জীবনে সারাক্ষণ ছোটাছুটি, প্রতিযোগিতায় আগে থাকা, দিনভর কাজের পরেও কম বিশ্রাম নিয়ে শরীর সুস্থ রাখার তাগিদে অনেকেই কৃত্রিমভাবে ইমিউনিটি বাড়িয়ে রাখার চেষ্টা করেন। যেমন অনেকেই বেশি পরিমাণে পাতিলেবু, মুসাম্বি, কাঁচা হলুদ খেতে শুরু করেন। আবার কেউ বাজারচলতি ইমিউনিটি বুস্টার, নানারকম এনার্জি ড্রিঙ্ক বা সাপ্লিমেন্ট নেন। এই যে জোর করে ইমিউনিটি বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা তা শরীরের জন্য় ক্ষতিকর। ডাক্তারবাবুরা বলছেন,ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিয়ে অনেকেই ইমিউনিটি বাড়ানোর চেষ্টা করেন, একটা সময় এটা টক্সিক লেভেল ছাড়িয়ে যায়। তখন চাপ পড়ে হার্টে।

Singer K K Death: মঞ্চে দরদর করে ঘাম, বার বার জল খাওয়া, কেকে-র শরীর জানান দিয়েছিল তখনই

মেটাবলিক সিনড্রোমও বড় কারণ

এই ব্যস্ততার সময় লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্টকে বাতিলের খাতাতেই রেখেছি আমরা। সঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়ার বালাই নেই, শরীরচর্চা মানেই একরাশ আলস্য। মানসিক চাপ কমাতে সিগারেটে টান। অ্যালকোহলে আসক্তি। সব মিলিয়ে ওজন বাড়ছে হুড়হুড়িয়ে। রক্তে লাগামছাড়া ট্রাইগ্লিসারাইড। ব্লাড সুগার সপ্তমে, ইউরিক অ্যাসিডও বাড়ছে। সেই সঙ্গে উদ্বেগ, উচ্চ রক্তচাপ তো আছেই। এক কথায় শরীরজুড়েই নানা রোগ, নিত্যদিন অসুস্থতা। রোজকার জীবনযাপনের এই রোগগুলোই যখন জোট বেঁধে বড় আকার নেয়, তখন তাকে বলে মেটাবলিক সিনড্রোম। যার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে হার্টে।