
ট্রেডমিলে বেশিক্ষণ দৌড়ে হার্ট অ্যাটাক? শরীরচর্চা করুন, তবে বুঝেশুনে
গুড হেলথ ডেস্ক
একটানা ট্রেডমিলে হাই স্পিডে দৌড়ে হার্ট অ্যাটাকের উদাহরণ অজস্র। এমনকি ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতেও আচমকা অ্যাটাক এসেছে অনেকের। কমবয়সী হোক বা পঞ্চাশোর্ধ, ট্রেডমিল করুন, ওয়েট ট্রেনিং বা কার্ডিও যাই করুন না কেন, সময় ও শরীর বুঝেই করা উচিত। সিদ্ধার্থ শুক্লর কথা মনে আছে তো?জনপ্রিয় এই টিভি স্টার মাত্র চল্লিশেই হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছিলেন। শোনা গিয়েছিল, মাত্রাতিরিক্ত জিম করাই কাল হয়েছিল তাঁর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনি রোজ নিয়ম করে জিম বা কার্ডিও করছেন মানেই আপনি ফিট তা কিন্তু হয়। আপনার হার্ট দুর্বল কিনা তা হয়ত আপনি নিজেই জানেন না। এর মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেডমিলে স্পিড বাড়িয়ে ছুটলে হিতে বিপরীত হতে বাধ্য।
শরীরচর্চা করুন, তবে নিয়ম মেনে
চল্লিশের বেশি বয়স হলে বছরে অন্তত একবার সবরকম মেডিক্যাল চেকআপ করিয়ে নিন। শরীরে কী কী সমস্যা আছে জেনে জিম প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এক্সারসাইজ শুরু করুন।
নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যায়াম করলে হবে না। প্রশিক্ষক যতক্ষণ বলবেন, যেমন বলবেন তেমনটাই করা ভাল। অনেকে বাড়িতেও ট্রেডমিল কিনে অভ্যাস করেন। সেক্ষেত্রে একবার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রাখা ভাল।
খাওয়াদাওয়ার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। অনেকে ভাবেন, নিয়মিত শরীরচর্চা করলে যা ইচ্ছে খাবার খাওয়া যায়। কিন্তু জাঙ্ক ফুড বা প্রসেস করা খাবার বা বেশি পরিমাণে ভাজাভুজি খেলে শরীরের যে পরিমাণে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়, তা শুধু ব্যায়াম করে সারানো সম্ভব নয়।
অনেকেরই অজান্তে ধমনীতে চর্বিজাতীয় পদার্থ জমতে থাকে। ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্ত সঞ্চালনের সময় ওই জমে থাকা পদার্থের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেখান থেকে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। বিশেষত, অতিরিক্ত পরিশ্রম করার সময় এমন সমস্যা হওয়ার ভয় বেশি থাকে। উত্তেজিত হলে বা বেশি পরিশ্রম করলে স্বাভাবিকের তুলনায় হার্টের স্পন্দন বাড়ে। ফলে হৃদযন্ত্রে রক্তপ্রবাহ বাড়ে। জিমে ঘাম ঝরানোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
৪০ বছর বয়সের পরে জিমে যাওয়া শুরু করলে আগে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করান। মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে ও একটা ইসিজি করিয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা থাকলেও তা ধরা পড়ে যাবে। জিম প্রশিক্ষককে চিকিৎসকের করা প্রেসক্রিপশন দেখাতে হবে বা ডাক্তারবাবুর দেওয়া পরামর্শের কথা বলতে হবে। তাহলে সংশ্লিষ্ট ফিটনেস বিশেষজ্ঞ রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে ব্যায়াম করতে দেবেন।
দীর্ঘক্ষণ কার্ডিও করা হার্টের পক্ষে ভাল নয়। যাঁরা সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা করে দৌড়ন, তাঁদের শারীরিক ফিটনেস ভাল হলেও হার্টের চার পাশের পেশিগুলি সঙ্কুচিত হতে থাকে। তাতে ঝুঁকি বাড়ে।
ব্লাড প্রেশার খুব বেশি হলে হাল্কা থেকে মাঝারি কার্ডিও বা অ্যারোবিক এক্সারসাইজ এবং সঙ্গে ওয়েট ট্রেনিং করা সবচেয়ে ভাল।