
সারাদিন টিভি চালিয়ে রাখেন (Heart Disease)?
সন্ধেবেলা ফিরেই আগে টিভি চালিয়ে সোফায় বসে পড়েন? তারস্বরে দিনভর টিভি চলছে বাড়িতে? দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টার বেশি টিভি দেখছেন? সবকটা প্রশ্নের উত্তরই যদি হ্য়াঁ হয়, তাহলে ঘোর বিপদ। কারণ সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, টিভি বেশি দেখলে হার্টের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দিনে যাঁরা ৪-৬ ঘণ্টা বা তার বেশি টিভি দেখেন, তাঁদের হৃদরোগের (Heart Disease) ঝুঁকি অনেক বেশি।
হংকং ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই তথ্য সামনে এনেছেন। তাঁরা বলছেন, টিভি দেখার সঙ্গে হার্টের রোগের একটা সম্পর্ক আছে। মানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখে যান যাঁরা তাঁদের হার্টের অসুখের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হাই ভলিউমে টিভি দেখলে তো কথাই নেই।
লকডাউনের সময় থেকেই বাড়ি বসে টিভি দেখার ঝোঁক বেড়েছিল মানুষজনের। সেই সময়ে এই সমীক্ষা চালিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, টিভিতে কোনও সিরিয়াল বা সিরিজের একটি এপিসোড দেখেই পরবর্তী এপিসোড দেখার জন্য আসক্তি জন্মায়। তাছাড়া ভলিউম জোরে করে সারাদিন টিভি দেখলে তা শরীরের ক্ষতি করে। হার্ট দুর্বল যাঁদের তাঁদের জন্য এই আসক্তি একেবারেই ভাল কথা নয়।
দেশ-বিদেশের খবর, চলচ্চিত্র, সিরিজ কিংবা সিরিয়াল দেখার জন্য সমস্ত বয়সের মানুষই টিভির সামনে ব্যয় করেন অনেকখানি সময়। বাচ্চারা ভালবাসে অ্যানিমেশন দেখতে, আবার বয়স্ক মানুষেরা সময় কাটান সিরিয়াল দেখে বা দেশ-বিদেশের খবর শুনে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখে সময় কাটিয়েছেন যাঁরা তাঁদের হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে তাড়াতাড়ি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে গত কয়েক বছরে। যাঁরা দু’ঘণ্টার কম টিভি দেখেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা দিনে চার ঘণ্টার বেশি সময় টিভির সামনের সামনে বসে থাকেন তাঁদের হৃদরোগ এবং ধমনী সংক্রান্ত রোগের কারণে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে।
টেলিভিশন দেখার অভ্যাস স্বাস্থ্যের উপরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এমনও দেখা গেছে, টিভি দেখার অভ্যাস মানুষের ক্যানসারে মৃত্যুর ঝুঁকি ৯ শতাংশ এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। এছাড়াও বহু ক্ষণ বসে বসে টিভি দেখার ফলে মেদ বৃদ্ধি পায়, বাড়ে অবসাদও।
কাজেউ টিভিতে আসক্তি কমিয়ে যোগাভ্যাস, শরীরচর্চা, মানুষজনের সঙ্গে মেলামেশায় বেশি সময় দিতে বলছেন গবেষকরা। দিনে মিনিট ২০ যোগা, প্রাণায়াম, ধ্যান করলে হার্টও ভাল থাকে। নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল। দেখা গেছে, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা অ্যারিদমিয়ার রোগীরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো সপ্তাহে মাত্র ৩০ মিনিট হালকা যোগা করলে ১২ সপ্তাহের মাথায় তাঁদের হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ অনেক স্থিতিশীল হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই টিভি দেখা কমিয়ে ফেলুন, বাচ্চাদের টিভির সামনে বেশিক্ষম বসে থাকতে দেবেন না।