হার্টে ইঞ্জেকশন দিলে আর অ্যাটাক হবে না? নতুন গবেষণার পথে বিজ্ঞানীরা

গুড হেলথ ডেস্ক

আচমকা বুকে ব্যথা, হাত-পা অবশ, বিনবিনে ঘাম শরীরজুড়ে, তারপরেই এক ঝটকায় সব শেষ হয়ে যেতে পারে। হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack ) বলে কয়ে আসে না। দীর্ঘদিন ধরে হার্টের ওপর নানা অত্যাচারের প্রতিফলন হার্টে অ্যাটাক বা হৃদগতির ছন্দ বিগড়ে যাওয়া। হার্টে আচমকা ধাক্কা লাগলে বা ম্যাসিভ অ্যাটাক হলে অনেক সময়েই রোগীকে বাঁচানো যায় না। হার্টের কোষে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, মৃত্যু হয় রোগীর। এই মৃত্যু ঠেকাতেই এবার নতুন আবিষ্কারের পথে বিজ্ঞানীরা।

লন্ডনের কিংস কলেজের হার্ট স্পেশালিস্টরা একটা বিশেষ গবেষণা করছেন। বিজ্ঞানীদের দাবি, এমন এক ধরনের ইঞ্জেকশন তৈরি হয়েছে যা হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে পারে অথবা হার্ট ফেলিওরের রোগীকে সঠিক সময়ের মধ্যে এই ইঞ্জেকশন দিলে প্রাণ বাঁচতে পারে। মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসনের ঝুঁকি কমিয়ে পারে বেল দাবি গবেষকদের।

Heart Disease Risk

কী ওষুধ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে?

গবেষকরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack )  ঝুঁকি কমাতে পারে এমন তিন ধরনের প্রোটিনের খোঁজ মিলেছে।  এই তিন প্রোটিন হৃদপেশিতে থাকলে অ্যাটাকের সময় রক্ত সরবরাহ বন্ধ হবে না। হার্টের কোষে অক্সিজেন পৌঁছবে ফলে মৃত্যুর সম্ভাবনা কমবে। এই তিন প্রোটিন দিয়েই তৈরি হয়েছে এমন ওষুধের ডোজ যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমিয়ে দিতে পারে বলে দাবি গবেষকদের।

এই তিন প্রোটিনের নাম– Chrdl1, Fam3c এবং Fam3b। গবেষকরা বলছেন মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসনের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে এই ওষুধের ডোজ। জীবনযাপনে অসংযম, অস্বাস্থ্য়কর খাওয়া, নেশায় আসক্তি, মেন্টাল স্ট্রেস, ডায়াবেটিস-কিডনি অসুখ থাকলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসনের ঝুঁকি বাড়ে।  সেডেন্টারি লাইফস্টাইলে এত অনিয়ম, মানসিক চাপ, নেশা করার প্রবণতা কমবয়সীদের হার্টের রোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। যাঁর শরীরে অন্য কোনও রোগ নেই, নিয়ম মেনেই খাওয়াদাওয়া করেন কিন্তু চূড়ান্ত মানসিক চাপ বা টেনসনে ভোগেন তাঁরাও বিপদের বাইরে নন।

new injection

মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশনে হার্ট মাসল বা হৃদপেশিতে প্রদাহ হয় (Heart Attack ) । হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ বাধা পেলে হৃদপেশীতে প্রদাহ শুরু হয়। হার্ট মাসল বা হৃদপেশীতে প্রদাহ তথা ইনফ্ল্যামেশন হলে তাকেই বলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়, হৃদগতির ছন্দ বিগড়ে যায়। বাড়াবাড়ি হলে ধমনীর মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে ব্লক হয়ে যায় (Heart Attack ) । তখন বুকে ব্যথা অনুভব করে রোগী। হঠাৎ করেই বুকে অসহ্য ব্যথা, সেই সঙ্গে ঘাম আর শরীরে নানাবিধ অস্বস্তি, এই উপসর্গগুলোই জানান দেয় হার্ট অ্যাটাকের শঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে এই ইঞ্জেকশন কাজে আসবে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।

তবে গবেষণা এখনও চলছে। ল্যাবরেটরিতে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন গবেষকরা। মানুষের শরীরে এর ক্লিনিকাল ট্রায়াল কবে শুরু হবে সেই অপেক্ষাই চলছে।