
Singer K K Death: প্রচণ্ড গরমই কি প্রাণ কাড়ল? হিট স্ট্রোকের চেয়েও বড় ভয় হার্ট অ্যাটাক
গুড হেলথ ডেস্ক
বহু মানুষের ভিড়, প্রচণ্ড গরম, এসি বন্ধ, তার মধ্যেই একটানা মঞ্চ কাঁপিয়ে সেরা পারফরম্যান্স দিয়ে গেলেন নব্বইয়ের দশক কাঁপানো কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে (Singer K K Death)। মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগে অবধি বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন শিল্পীরা বিশ্রাম নেন না। হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র এমনটাই বলছেন অভিজ্ঞ কার্ডিওলজিস্টরা। মঞ্চে তাঁর শারীরিক অভিব্যক্তিই জানান দিয়েছিল অনেক কিছু। নিয়মিত ট্রেডমিলে হাঁটতেন, কার্ডিও করতেন, ডায়েট মেনে পরিমিতি ও পুষ্টিকর খাবার খেতেন, তাও কেন আচমকা হার্ট অ্যাটাকের শিকার হলেন কেকে?
কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে–এক, আগে থেকেই শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছিল গায়কের, তা চেপেই তিনি পারফর্ম করে যাচ্ছিলেন (Singer K K Death)। দুই, প্রচণ্ড গরম, মানুষজনের ভিড়-ধাক্কাধাক্কি, তার ওপরে এসি বন্ধ–গরমেই হার্টের ছন্দ ওঠানামা করছিল, তিন, আচমকা রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে বিপদ হয়েছে।
ভ্যাপসা গরমে হিট স্ট্রোকের থেকেও হার্ট অ্যাটাকের ভয় বেশি, এমনটাই বলছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। গ্রীষ্মকালের দাবদাহের সঙ্গে হার্টের রোগের যোগসূত্র আছে। অতিরিক্ত ঘামও বিপদের কারণ হতে পারে।
প্রচণ্ড গরমে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার তিন প্রধান কারণ
কোলেস্টেরল খুব বেড়ে গেলে
ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে না থাকলে
রক্তচাপ আচমকা বেড়ে গেলে
Heart Attack: এ দেশের কমবয়সি, কর্মব্যস্ত জেনারেশনই হার্ট অ্যাটাকের শিকার, কিন্তু কেন?
চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীর ধমনী ব্লক হয়ে গেলে অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত হৃৎপিণ্ডে পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যায়। তখনই হয় হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack)। দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হলে হার্ট অকেজো হয়ে যায়। গরমকালে এই ধরণের হৃদরোগ হতে পারে রাতের দিকে। দরদর করে ঘাম হওয়া একেবারেই ভাল নয়। এতে শরীর থেকে জল ও প্রয়োজনীয় খনিজ বেরিয়ে গিয়ে বিপদ ডেকে আনবে। কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, গরমে হজমের গোলমাল বেশি হয়। বদহজমও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। গরমের দিনে সামান্য কিছু খেলেই হজম করতে বেশ অসুবিধা হয়। বদহজম হলে হার্টের উপর তার প্রভাব পড়ে। তাছাড়া কর্মব্যস্ত জীবনে কম ঘুম, বিশ্রামের অভাব, বাড়তে থাকা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
Singer K K Death: মঞ্চে দরদর করে ঘাম, বার বার জল খাওয়া, কেকে-র শরীর জানান দিয়েছিল তখনই
গরমে হার্ট অ্যাটাক থেকে সাবধান থাকুন
হার্টের কোনও রোগ নেই, তাও আচমকাই বিকল হয়ে গেল হৃদযন্ত্র, এমন উদাহরণ অনেক। সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র মৃত্যুই বুঝিয়ে দিল বিপদ হানা দিতে পারে যখন তখন। ভাল খাবার খাওয়া, নিয়ম মেনে চললেও ঝুঁকি সবসময় এড়ানো যায় না। তাই সামান্য লক্ষণ দেখা দিলেও তা এড়িয়ে না যাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তারবাবুরা। সময় থাকতে চিকিৎসা শুরু হলে বিদ এড়ানো সম্ভব।
কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, এই প্রচণ্ড গরমে হাল্কা এক্সারসাইজ করুন। আসলে আপনি এক্সারসাইজ করার সময় শরীরে তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। এছাড়া বেশি এক্সারসাইজ করতে গিয়ে হার্টের রক্ত পাম্প করার গতিও বাড়ে। ফলে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দিনভর গরম থাকলে এবং রাতেও তাপমাত্রা না কমলে, হাল্কা খাবার খান। এই সময় জাঙ্ক ফুড বা স্ট্রিট ফুড বেশি খেলেই হজমের গোলমাল দেখা দেবে। কোলেস্টেরল বা ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে গিয়ে বিপদ হতে পারে।
হার্ট দুর্বল হলে বেশি ভারী কাজ, দৌড়োদৌড়ি না করাই ভাল। বিশেষ করে রাতের দিকে বেশি ভিড়-জমায়েত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
এই সময় ডিহাইড্রেশন বেশি হয়, পরিমাণমতো জল খান।
বুকে-পিঠে ব্যথা, হাতে একটানা ব্যথা হলেও সাবধান হতে হবে। একটানা অনেক দিন ধরে চিনচিনে ব্যথা হলেও সাবধান। এই সব ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখাবেন তই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
রাতের বেলা আচমকা ঘুম ভেঙে দেখলে সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে, বুকে চাপ লাগছে, শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছে, তাহলে একদম দেরি না করে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
কর্মব্যস্ত জীবনে বিশ্রামের সময় অনেক কমে এসেছে। কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, পর্যাপ্ত মাত্রায় ঘুম না হলে কিন্তু হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। শরীর যদি সঠিক পরিমাণে বিশ্রাম না পায়, তা হলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। সে ক্ষেত্রে স্ট্রেস হরমোন নিঃবের হতে থাকে যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা, মানসিক ক্লান্তি থাকলে মেডিটেশন করুন। মন হাল্কা থাকলে হার্টও ফুরফুরে থাকবে।