
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। গরম যত বাড়বে ততই লিভারের নানা অসুখ জাঁকিয়ে বসবে। হাসপাতালেও তত বাড়বে হেপাটাইটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে প্রতি বছর এই গরমের সময়ে ‘হেপাটাইটিস সি’ (Hepatitis)-তে আক্রান্ত হন প্রায় ১০-১২ লক্ষ মানুষ। এনসিবিআই-এর রিপোর্ট বলছে, আমাদের দেশেই গরমে হেপাটাইটিস রোগীর সংখ্যা ০.৫ থেকে ১.৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চিন্তার ব্যাপার হল, লিভারের অসুখ ধরা পড়ে দেরিতে। তাই রোগীদের অনেকেই জানেন না যে তাঁরা শরীরে মারণ ভাইরাস বয়ে নিয়ে চলেছেন (World Liver Day 2022)।
কীভাবে ছড়ায় হেপাটাইটিস (Hepatitis) সি?
মূলত পাঁচ ধরনের হেপাটাইটিস (Hepatitis) রয়েছে। এগুলি হল হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইনজেকশনের সিরিঞ্জ থেকে শুরু করে সূচ, ইঞ্জেকশন, টুথব্রাশ এবং দাড়ি কাটার সরঞ্জাম থেকে হেপাটাইটিসের ভাইরাস শরীরে ঢোকার সম্ভাবনা থাকে। তবে হেপাটাইটিসের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হল জল ও রাস্তার খাবার। এই গরমে, রাস্তার কাটা ফল, সরবত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। জল না ফুটিয়েও খান অনেকে। সেখান থেকেও লিভারের অসুখের (Liver Disease) সম্ভাবনা বাড়ে।
হেপাটাইটিস সি হল ভাইরাল ইনফেকশন। সংক্রামিত রক্ত থেকেই হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস ছড়ানোর ভয় থাকে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। বহু থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোফিলিয়া রোগী এর শিকার হন। দীর্ঘদিন হেপাটাইটিস-সি চিকিৎসা না করিয়ে রেখে দিলে তার জের হতে পারে মারাত্মক। সিরোসিস বা লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। হেপাটাইসি সি ভাইরাস ছড়াতে পারে সংস্পর্শ থেকে। বডি ফ্লুইড বা দেহরসের ট্রান্সমিশন থেকেও ভাইরাস ছড়ায়। তাই অনেক বেশি সাবধান থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
Liver disease: সিরোসিস মানেই সব শেষ নয়, লিভার সঙ্কেত দেয় আগে থেকেই
হেপাটাইটিস থেকে বাঁচুন, এই গরমে সতর্ক থাকুন
লিভারকে ভাল রাখতে শুধু খাবার নয়, জলের দিকেও নজর দিন। হেপাটাইটিস ঠেকাতে জল খুব কার্যকর ভূমিকা নেয়।
দরকারে এমন কোনও ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, যাঁরা হেপাটাইটিস সি (Hepatitis C) স্ক্রিনিং করেন। ইঞ্জেকশন নিলে সিরিঞ্জ যাতে নতুন ও জীবাণুমুক্ত থাকে সে দিকে খেয়াল রাখুন।
রাস্তার জল নৈব নৈব চ। বাড়িতে ফোটানো জল অথবা দোকান থেকে কেনা বোতলবন্দি জল ব্যবহার করুন।
ভুলেও রাস্তার কাটা ফল বা ফ্রুট স্যালাড খাবেন না। বাড়িতেই জুশ বানিয়ে নিন, রাস্তায় তৈরি ফলের রস এই সময় এড়িয়ে চলাই ভাল। স্ট্রিট ফুড খাওয়া বন্ধ করুন।
অন্যের ব্যবহৃত চিরুনি, লিপস্টিক, আইলাইনার, কানের দুল না ব্যবহার করাই উচিত। নিরাপদ যৌনজীবনেরও পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তারবাবুরা।