
Hepatitis: নীরবে শরীরে ছড়ায় হেপাটাইটিস, গোড়ায় ধরা পড়লে রোগ সারে সহজেই
গুড হেলথ ডেস্ক
লিভারের মারাত্মক অসুখই হল হেপাটাইটিস (Hepatitis)। মূলত লিভারের প্রদাহজনিত অসুখ। হেপাটাইটিসের কারণ ভাইরাল ইনফেকশন। এর নানা ধরন। হেপাটাইটিস-এ এবং ই সংক্রমিত হয় দূষিত খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে। আর হেপাটাইটিস-বি, সি এবং ডি সংক্রমিত হয় রক্তের মাধ্যমে। হেপাটাইটিসের নাম শুনলেই আতঙ্ক দানা বাঁধে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অসুখ গোড়ায় ধরা পড়লে সহজেই সারে।
হেপাটাইটিস এ (Hepatitis) হল ছোঁয়াচে লিভার সংক্রমণ, যার মূল কারণ হল হেপাটাইটিস এ ভাইরাস। এই সংক্রমণের ফলে খুব জটিল শারীরিক অসুস্থতার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত শরীর অসুস্থ থাকতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু -এর তথ্য বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর মোট ১০ কোটিরও বেশি মানুষ হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হন। কিশোর-কিশোরী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে, এই সংক্রমণের উপসর্গ অনেক বেশি মারাত্মক হতে পারে। এর মধ্যে ৭০% এর চেয়ে বেশি ক্ষেত্রে জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হেপাটাইটিস সি হল ভাইরাল ইনফেকশন। সংক্রামিত রক্ত থেকেই হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস ছড়ানোর ভয় থাকে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। বহু থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোফিলিয়া রোগী এর শিকার হন। দীর্ঘদিন হেপাটাইটিস-সি চিকিৎসা না করিয়ে রেখে দিলে তার জের হতে পারে মারাত্মক। সিরোসিস বা লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিই বেশি। হেপাটাইসি সি ভাইরাস ছড়াতে পারে সংস্পর্শ থেকে। বডি ফ্লুইডের ট্রান্সমিশন থেকে ভাইরাস ছড়ায়। তাই সাবধানতা বেশি দরকার হয়।
এই রোগ (Hepatitis) কীভাবে ছড়ায়?
হেপাটাইটিস এ রোগ মূলত ছড়ায় এমন জল এবং খাবারের মাধ্যমে যার মধ্যে হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে। এই রোগ প্রাথমিক ভাবে এক জনের শরীর থেকে অন্যজনের মধ্যে ফেসিয়াল-ওরাল যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়াতে পারে কিংবা যদি কেউ দূষিত জল, দুধ, বা এমনকী এমন খাবার খান, যা সঠিক ভাবে তৈরি করা বা স্টোর করা, কিংবা পরিচ্ছন্ন ভাবে পরিবেশন করা হয়নি, তাহলেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিন্তার কারণ হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি। কারণ এই দুই ভাইরাসই ছড়াতে পারে ‘ক্লোজ কনট্যাক্ট’-এ। রক্ত, দেহরস যেমন বীর্য, ভ্যাজাইনাল সিক্রেশনে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই পরিবারের কেউ হেপাটাইটিস বি পজিটিভ হলে সচেতন থাকার প্রয়োজন। যেহেতু বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে তাই আক্রান্তের সঙ্গে কোনও রকম শারীরিক সম্পর্ক সেই সময় চলবে না, গভীর চুম্বন বা যৌন সম্পর্ক এড়িয়ে চলাই ভাল। আক্রান্তের সঙ্গে যাতে রক্তের সংযোগ না হয় সে দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। ধরা যাক, পরিবারের কেউ হেপাটাইটিস বি পজিটিভ। এবার কোনও কারণে তাঁর শরীরে ক্ষত তৈরি হল বা কেটে গিয়ে রক্তপাত হল, এবার সেই রক্ত বা ক্ষত থেকে বের হওয়া পুঁজ বা রস যদি সুস্থ মানুষের শরীরে ঢোকে তাহলে তিনিও হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হবেন। তার মানে এই নয় যে আক্রান্তের দেখাশোনা করা যাবে না, সবই করা যাবে শুধু সতর্ক থাকতে হবে।
হেপাটাইটিস বি করোনা সংক্রমণের মতো থুতু-লালার জলকণা বা ড্রপলেটে ছড়ায় না। আক্রান্তের দেহরস যদি শরীরে ঢোকে তবেই সংক্রমণ ছড়াবার সম্ভাবনা থাকে। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, স্বামী, সন্তান বা পরিবারের খুব কাছের মানুষ যদি হেপাটাইটিস বি পজিটিভ হন তাহলে কী তাঁকে আইসোলেশনে রাখতে হবে? আমি বলব, তেমন কোনও ব্যাপার নেই। একসঙ্গেই থাকা যেতে পারে তবে সতর্ক হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, কোনওভাবেই যাতে আক্রান্তের রক্ত, বডি ফ্লুইড বা দেহরস শরীরের সংস্পর্শে না আসে। এই সময় যৌন মিলন এড়িয়ে চলাই ভাল। বেশি ঘনিষ্ঠতাও বিপদের কারণ হতে পারে।