
গত পাঁচ বছরে কিডনির অসুখ মারাত্মকভাবে বেড়েছে, সুস্থ থাকতে কী কী করবেন
গুড হেলথ ডেস্ক
আধুনিক জীবনযাত্রা, পেশাগত চাপ নানা কারণে যে সব রোগের প্রকোপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম কিডনিতে স্টোন। অনিয়ন্ত্রিত জীবন, অনিয়ম ইত্যাদি নানা কারণ এর নেপথ্যে রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, এই সব অসুখ নিয়ে সচেতনতাও কমছে দিনকে দিন। কিডনিতে পাথর জমা হওয়ার সমস্যাকে অনেকেই ততটা গুরুত্ব দেন না, কিন্তু উপযুক্ত সময়ে চিকিৎসা না পেলে এই অসুখ মারণরোগে পরিণত হতে পারে।
আমাদের রেচন অঙ্গ বৃক্ক বা কিডনিতে ক্যালসিয়াম জমে তৈরি হয় কিডনির স্টোন। এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বের ১-৫% মানুষ কিডনি স্টোনের শিকার। সংখ্যাটা উন্নত দেশে ২-৩% এবং উন্নয়নশীল দেশে ০.৫-১%। সমীক্ষা বলছে, মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের কিডনি স্টোনের ঝুঁকি ২-৩ গুণ বেশি। অন্য দিকে বয়স্ক ও শিশুদের তুলনায় মধ্যবয়সীদের এ রোগ বেশি হয়। তবে কিডনি স্টোন ছোট হলে অনেক সময় তা মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু বড় স্টোন বের করতে অপারেশন করার দরকার পড়ে।
কিডনির স্টোনের বেড়ে যাওয়া কিন্তু রুখে দেওয়া যায়, তার জন্য এইসব নিয়ম মানতেই হবে–
বেশি বেশি জল খান
কিডনির কাজ শরীরের বর্জ্য ছেঁকে শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিনকে সরানো। তাই শরীরের চাহিদা অনুযায়ী জল না খেলে কিডনির পক্ষে সে কাজ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। পর্যাপ্ত তরল কিডনি স্টোন রুখে দিতে পারে। যতটা জল আমাদের প্রয়োজন, সেটুকু জল যাতে শরীর পায়, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ান।
প্রতিদিন এক চামচ লেবুর রস খান
প্রতিদিন অল্প করে লেবুর রস মূত্রের সাইট্রেটের মাত্রা বাড়িয়ে ক্যালসিয়াম স্টোন তৈরির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। তাই রোজের ডায়েটে এক চামচ লেবুর রস রাখুন। গরম জলে মিশিয়ে খেতে পারেন। ভাল ফল পাবেন।
কোল্ড ড্রিংক্স, মদ এড়িয়ে চলুন
নরম ঠান্ডা পানীয় মূত্রের সাইট্রেট মাত্রা সাঙ্ঘাতিকভাবে কমিয়ে দেয়। তাই এদের এড়িয়ে চলা ভাল। এ ছাড়া এ সব পানীয়তে থাকা ফসফোরিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। বিয়ার ও অন্যান্য মদেও কিন্তু কিডনির জন্য ক্ষতিকর পিউরিন থাকে। তাই মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
কম নুন খান
বেশি নুন খেলে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম বাড়ে। তাই খাদ্যে নুন তথা সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
দুধ, মাংসে দাড়ি টানুন
কিডনির রোগীদের কাছে দুধ কিন্তু বিষের সমান। পাশাপাশি মাংসও ক্ষতিকর। প্রাণিজ প্রোটিন মূত্রে ইউরিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট মাত্রা বাড়ায় এবং সাইট্রেট মাত্রা কমায়। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের তুলনায় প্রাণিজ প্রোটিনে বেশি সালফার থাকে, তাই এরা বেশি অ্যাসিড তৈরি করে। দুধে কিডনি পাথরের পক্ষে অনুকূল উপাদান প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে। তাই কিডনি স্টোনের ঝুঁকি থাকলে প্রাণীজ প্রোটিন খাওয়া ছাড়ুন।
প্রস্রাব চেপে না রাখা
কিডনির অসুখের অন্যতম কারণ প্রস্রাব চেপে রাখা। এতে সংক্রমণ হওয়ার ভয়ও থাকে।