
শরীরের এই দু’টি অঙ্গ যদি কাজে ইস্তফা দেয়, তাহলে শত সাধ্যসাধনাতেও জীবনের গাড়ি আর সরসরিয়ে চলবে না। কথায় বলে মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না। কিডনির (Kidney Stones) ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা অনেকটা সেরকমই। দূষিত রেচন পদার্থ যদি শরীর থেকে বেরিয়ে না যায়, তা হলে তা জমা হয় ভেতরেই। আর একে একে শরীরের বাকি অঙ্গগুলিতে বিকল করতে শুরু করে।
এটি লাইফস্টাইল ডিজিজ, রোজকার জীবনে অভ্যাসগত সমস্যা এই রোগ ডেকে আনে। তাছাড়া জিনগত কারণও আছে। কারও পরিবারে হয়তো বংশপরম্পরায় উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। তা অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চারাও বহন করে। আবার কেউ স্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে জাঙ্ক ফুড খান। কিংবা হাঁটাচলা কম করেন, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসে থাকেন, দুশ্চিন্তা করেন। তাঁদেরও এই সমস্যা হয়। দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে থাকলে এবং সঠিক ডায়াগনসিস না হলে তার থেকে আরও মারাত্মক সব অসুখ হতে পারে। ক্রনিক কিডনির রোগও তার মধ্যে একটি।
রোজকার জীবনে আমরা এমন কিছু ভুল করি যাতে কিডনির সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
জেনে নিন কী কী ভুল অভ্যাসে কিডনির অসুখ বাড়ে?
ভিটামিনের অভাবে কিডনির রোগ হতে পারে। যদি ভিটামিন ডি-এর অভাব হয় তাহলে কিডনির সমস্যা হতে পারে। অত্যধিক জাঙ্ক ফুড, তেলমশলাদার খাবার ও পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার অভ্যাস ভিটামিনের ঘাটতির কারণ হতে পারে। ভিটামিন বি৬ রয়েছে এমন খাবার খাওয়া জরুরি।
মুঠো মুঠো পেইন কিলার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া জরুরি।
দীর্ঘ সময় খাবার না খেয়ে থাকা, প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস কিডনির অসুখের কারণ হতে পারে।
হাইপারটেনশন হলে এমন কিছু হরমোন বের হয় যা রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিতে এর প্রভাব পড়তে থাকে।
আগে থেকেই ডায়াবেটিস বা কোনও ক্রনিক রোগ আছে য়াঁদের, তাঁদের প্রতি ছ’মাস অন্তর নিয়ম করে ব্লাড প্রেসার ও সুগার টেস্ট করাতে হবে। সেই সঙ্গেই ইউরিক অ্যাসিড, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাডের মাত্রাবেশি আছে কিনা তাও পরীক্ষা করাতে হবে। এগুলো বাড়লে কিডনির অসুখের আশঙ্কা বেড়ে যায়। লাইফস্টাইলে অনিয়মই কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়িয়ে দিতে পারে।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সারাদিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস জল খাওয়া দরকার। জল পর্যাপ্ত পরিমাণে না খেলেই ক্ষতি হতে পারে কিডনির।
রান্নায় অত্যধিক নুন ব্যবহার করছেন? তাহলে এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ, অত্যধিক নুনেই কিন্তু খারাপ হচ্ছে কিডনি।
অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান কিডনির রোগের বড় কারণ। নেশায় লাগাম না টানলে কিডনির অসুখ ক্রমেই ক্রনিক হতে শুরু করবে। ক্ষতি হবে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের।