
লিভারের রোগ সারে না, এমন ভুল ধারণা আছে অনেকেরই। সঠিক সময় রোগ (liver Disease) চিহ্নিত করে ট্রিটমেন্ট শুরু করলে লিভারের অসুখ সারিয়ে তোলা সম্ভব। দীর্ঘ দিনের লিভারের কোনও অসুখ থাকলে, জন্ডিস হয়ে থাকলে কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপান করলে লিভারের ক্ষত বাড়তে থাকে। এক সময় জটিল লিভার সিরোসিস রোগ বাসা বাঁধতে থাকে। সময়ে ধরা পড়লে এই রোগটির জটিলতা থেকে অনেকখানিই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগটি ধরতেই এত দেরি হয়ে যায়, তখন আর কিছু করা সম্ভব হয় না।
লিভার ফ্যাট তৈরি করে। রক্তের মধ্যে দিয়ে তা পেশিতে পৌঁছয়। লিভার যতটা ফ্যাট তৈরি করছে, আর যতটা খরচ করছে তার মধ্যে যদি ভারসাম্য না থাকে, অর্থাৎ ফ্যাট বেশি হয়ে গেলে, সেটা লিভারে জমে। এটাই ফ্যাটি লিভার। সঠিক ডায়েট ও শরীরচর্চা করে ফ্যাটি লিভারকে (liver Disease) বশে রাখা যায়।চিকিৎসকরা বলেন, অতিরিক্ত তেলমশলাদার খাবার, অ্যালকোহল থেকে চড়চড়িয়ে বাড়ে কোলেস্টেরল। ট্রাইগ্লিসারাইড ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের সমস্যা দেখা দেয় যাকে বলে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’ বলে। এই সিনড্রোম একটু একটু করে সিরোসিসের জন্ম দেয়।
জন্মগত কোনও ত্রুটি ও কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য লিভারের অসুখ হতে পারে। মদ্যপানে রাশ টানতে এবং পেটের ব্যথা কমাতে অনেকে নানারকম ওষুধ খেয়ে থাকেন। এই সব ওষুধ সাময়িক ভাবে যন্ত্রণা কমালেও, পাকাপাকিভাবে লিভারের কার্যক্ষমতা (liver Disease) নষ্ট করে দেয়। বাসা বাঁধে অসুখ।
লিভার সঙ্কেত দেয় অনেক আগেই, কী কী উপসর্গ চিনবেন?
লিভার পুরনো ও ক্ষতিগ্রস্ত রক্তের কোষগুলির ভাঙনেও সহায়তা করে। লিভারে যদি ক্ষত বাড়তে থাকে তাহলে তা ঠিকমতো প্রোটিন তৈরি করতে পারে না। তখন ঘন ঘন কালশিটে পড়ে সারা শরীরে।
দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্ত পড়া লিভারের রোগের (liver Disease) লক্ষণ।
পেটের ডান পাশে ব্যথা হওয়াও এর উপসর্গ।
জ্বর জ্বর ভাব, দুর্বলতা, প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগতে পারে সবসময়।
ঘন ঘন পেট খারাপ হতে পারে।
লিভারে ক্ষয় হতে থাকলে অ্যালবুমিন প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায়, তখন পা ও গোড়ালিতে জ্বালাভাব হয়। এটিও একটি লক্ষণ।
দীর্ঘ দিনের লিভারের অসুখ থাকলে পেটের তলদেশে তরল জমা হয়ে পেট ফাঁপার সমস্যার দেখা দিতে পারে। দেখে মনে হবে পেট ফুলে আছে। খিদে কমে যাবে, ওজন কমতে পারে। তখন সাবধান হতে হবে।
লিভার দ্রুত রিজেনারেট করে, কিন্তু সিরোসিস হলে ক্ষতের পরিমাণ বেড়ে যায়। লিভারের অনেক কোষ নষ্ট হয়ে যায়। তখন অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে। কিন্তু গোড়াতেই যদি রোগ ধরা পড়ে তাহলে বিপদের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।