
এখনকার দিনে ভুলে যাওয়া যেন একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। সবকিছুই ভুলে যাচ্ছি। কিছুই যেন থাকে না মনে। ছোট ছোট ভুলে যাওয়াগুলোই একদিন বড়সড় অসুখের চেহারা নেবে সেটা বলাই বাহুল্য। কিছুক্ষণ আগে শোনা কথা ভুলতে শুরু করতে পারেন, কিছুদিন আগের ঘটনাও স্মৃতি থেকে বেমালুম উবে যেতে পারে। নামধাম তো বটেই, গুরুত্বপূর্ণ যে কোনও বিষয়ই যদি স্মৃতির পাতা থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে তাহলে মুশকিল। এই ভুলে যাওয়ার প্রবণতাকেই ডাক্তারি ভাষায় বলে ডিমেনশিয়া (Dementia) বা স্মৃতিনাশ।
ডিমেনশিয়া (Dementia) নিয়ে এখন বিস্তর গবেষণা, লেখালিখি চলছে। সচেতনতার প্রচারও হচ্ছে নানা জায়গায়। কীভাবে ডিমেনশিয়া ঠেকানো যায় সে নিয়ে নানা গবেষণা হচ্ছে। ডক্টর ফক্স অনলাইন ফার্মাসির একটি গবেষণা দাবি করেছে, কফি খেলে নাকি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৬৫ শতাংশ কমে যেতে পারে। তবে অবশ্যই চিনি-দুধ ছাড়া ব্ল্যাক কফি খেতে হবে।
ডিমেনশিয়ার (Dementia) রিস্ক ফ্যাক্টর কী কী ?
শারীরিক নানা কারণ আছে যার জন্য় মানুষ ভুলতে (Dementia) শুরু করে। এর মধ্য়ে প্রথমেই আছে থাইরয়েডের সমস্য়া। হাইপোথাইরয়েড বা হাইপারথাইরয়েড থাকলে স্মৃতির পাতা কিছুটা ধূসর হয়ে যায়। দ্বিতীয় কারণ ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস থাকলে রক্তজালকগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হতে শুরু করে, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা তো বাড়েই, হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। মানসিক চাপ, অ্য়াংজাইটি, ডিজিটাল মাল্টিটাস্কিং, ক্রনিক ইনসমনিয়া –ডিমেনশিয়ার রিস্ক ফ্যাক্টর অনেক। টুকটাক ভুলে যাওয়া নয়, ডিমেনশিয়ার রোগীরা নিজেদের নাম-পরিচয় অবধি ভুলতে বসেন। এই অসুখটাই বড় ভয়ঙ্কর।
Hypertension: হাইপারটেনশন ‘সাইলেন্ট কিলার’, আপনার উচ্চ রক্তচাপই বাড়াবে হৃদরোগ, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি
কফি কীভাবে ডিমেনশিয়া ঠেকাতে পারে?
গবেষক ডক্টর দেবোরা লি দাবি করেছেন, দিনে তিন কাপ ব্ল্যাক কফি খেলে স্মৃতিনাশের ঝুঁকি অনেকটাই কমতে পারে। ৬৫ থেকে ৭১ বছর বয়সি ২ হাজার মানুষের ওপর দীর্ঘ বছর ধরে গবেষণা করে ডক্টর লি দাবি করেছেন, দিনে তিন কাপ দুধ-চিনি ছাড়া কফি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৬৫ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।
কফিতে থাকে ক্য়াফেইন যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। পলিফেনল এক ধরনের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা শরীরের জন্য় ভাল। গবেষক বলছেন ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগের কারণ হল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস যা ব্রেনের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। বি অ্যামাইলয়েড ও কিছু প্রোটিন এর জন্য দায়ী। কফির ক্য়াফেইন এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে প্রশমিত করে ব্রেনের কোষগুলিকে সক্রিয় রাখতে পারে। এর ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড মস্তিষ্কের কোষগুলিকে সতেজ রাখে দীর্ঘসময়।
তবে কফি ডিমেনশিয়ার (Dementia) ঝুঁকি কমাতে কতটা কার্যকরী হতে পারে সে নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।