
ট্রু-ক্রাইমের প্রতি অস্বাভাবিক আগ্রহ? তাহলে অবশ্যই জেনে রাখুন জরুরি কিছু তথ্য
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্রাইম-থ্রিলার অনেকেরই ভীষন প্রিয় বিষয়। তাই জন্য রহস্য-রোমাঞ্চ-অপরাধ নিয়ে বই, চলচ্চিত্রের আলাদা রকমের চাহিদা রয়েছে। তবে এ সব কিছু ছাপিয়ে নির্দিষ্ট কিছু দর্শকের যেন সত্য ঘটনা অবলম্বনে ক্রাইম ধারাবাহিক, পডকাস্ট , নন-ফিকশন বই বা তথ্যচিত্রের প্রতিই অমোঘ আকর্ষণ।
কেন এমনটা হয়!

দুঃস্বপ্নের মতো ভয়ংকর অপরাধের দৃশ্য, ঘটনা দেখে মনে কি কুপ্রভাব পড়তে পারে? সামান্য কৌতূহল থেকে জন্ম নেওয়া এমন শো দেখার শখ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আদৌ ভাল? কেন সত্যিকারের অপরাধের প্রতি এমন আকর্ষণ?প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, নন-ফিকশন ট্রু ক্রাইমের প্রতি ভালবাসা কখনই অপরাধমূলক আচরণের প্রবণতা নির্দেশ করে না। এমনকি সত্যিকারের অপরাধ দেখার প্রবণতার জন্য কেউ হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করতেও শুরু করেন না। আসলে অনুসন্ধানী হওয়া মানুষের স্বভাব। সত্যিকারের অপরাধগুলো আমাদের সেই অনুসন্ধিৎসু মনকেই উস্কে দেয়। আমরা জানার চেষ্টা করি, অপরাধীদের মনস্তত্ব। এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

দেখা যায়, পুরুষদের থেকে মহিলারাই সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি ক্রাইম দেখতে বা জানতে বেশি উৎসাহী। বিশ্বের নিরিখে দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের প্রতি অপরাধও বেশি হয়। তাই মহিলারা ভাবেন, এমনটা তার সঙ্গেও ঘটতে পারে। তার জন্য এমন ধরণের ঘটনা দেখে তারা নিজেদের অপরাধের শিকার হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য আগেভাগেই প্রস্তুত থাকার শিক্ষা নেন। সজাগ এবং সচেতন হন।তবে খুন এবং ধর্ষণের উপর ফোকাস করে এমন টিভি-শো বারবার দেখলে মনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। অবচেতন মনে এমন ভয়ও কাজ করতে পারে, যার জন্য সমাজে সহজভাবে মেশা দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়।

তবে শুধু যে সত্যি অপরাধের গল্প মানসিকতাকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন নয়। অপরাধের কাল্পনিক চিত্রণও একই রকম প্রভাব ফেলতে পারে। আপনারও যদি এমনটা হয়, তাহলে মনের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক হওয়া জরুরি। প্রয়োজনে ক্রাইম শো দেখা বন্ধ করতেও হতে পারে!ক্রাইম শো যদি আপনার ব্যবহার, মানসিকতার পরিবর্তন না ঘটায় বা কুপ্রভাব না ফেলে, তবে এর থেকে দূরে থাকার তেমন কোনও প্রয়োজন নেই। তবে সাবধান হওয়া দরকার বা প্রয়োজনে এর থেকে বিরতি নিতেও হতে পারে, এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে।
- এগুলো নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে শুরু করলে
- অ্যাংজাইটিতে ভুগলে
- ঘুমের সমস্যা হলে
- বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়লে
- কাউকে বিশ্বাস করতে না পারলে
- অপরাধের ভয়ে নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে নিলে
- বাইরে বেরোতে ভয় পেলে
- নিজের ঘরেই নিজেকে নিরাপদ মনে না করলে
- সকলকেই সন্দেহের চোখে দেখলে
- সবসময় অপরাধজনিত ভাবনার জন্য অসংলগ্ন ও অস্বাভাবিক কথা বললে
- অপরাধের ভয় স্বাভাবিক জীবনের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ালে

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রাইম শো দেখতে গিয়ে কেউ কোনও সমস্যায় পড়ছেন কিনা, তা নিজেই যাচাই করে দেখতে পারেন।অপরাধের গল্প দেখা বা শোনার সময়ে কেমন অনুভব করেন একজন, সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে। পাঠক বা দর্শক কি উৎসাহী হয়ে অপরাধের আরও গভীরে জানতে চান নাকি ভীত, সন্তস্ত্র ও বিষণ্ণ হয়ে পড়েন? যদি দ্বিতীয়টা হয়, তাহলে বুঝতে হবে ট্রু ক্রাইম দেখার অভ্যাস নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এভাবে নিজেকে, নিজের মনকে যাচাই করলেই একজন বুঝতে পারবেন সাধারণ কোনও মানুষ এ ধরনের ঘটনা ঠিক কতটা নিতে পারেন। সাবধান হতে হবে সেটা বুঝে।