
Mental Health: মুড ঠিক নেই? চূড়ান্ত অবসাদ, হতাশা থেকেই এই রোগের শুরু
গুড হেলথ ডেস্ক
Mental Health
অফিসে কাজের চাপ, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপের দিকে যাচ্ছে, পরিবারে অশান্তি, তলে তলে চরম অবসাদে ভুগছিলেন তৃষ্ণা (Mental Health)। হতাশা গ্রাস করছিল। সবসময়েই মনে হত মুড ভাল নেই। রাতে ঘুম নেই, দিনে টেনশন। শেষ পর্যন্ত কাউন্সেলিং করাতে গিয়ে ধরা পড়ে মুড ডিসঅর্ডার (Mood Disorder)।
মড সুয়িং বলে একটা কথাই আছে। মুড এই ভাল, তো এই খারাপ। মুড মাঝেমধ্যে খারাপ হতেই পারে, আবার নিজে থেকে সেরেও যায়। এগুলো স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সবসময়েই যদি মনখারাপ হতে থাকে এবং তা ক্রনিক হয়ে যায়, তাহলেই সমস্যা শুরু হয়। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে মুড ডিসঅর্ডার (Mood Disorder)।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবসাদ দিয়ে শুরু হয়, শেষে তা রোগে পরিণত হয়। চরম অবসাদ, স্ট্রেস, অ্য়াংজাইটি মুড ডিসঅর্ডারের (Mood Disorder) কারণ। রোগের বাড়াবাড়ি হলে এবং জটিল পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছলে তাকে ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারও বলা হয়।
মুড ভাল নেই (Mental Health)
অবসাদই এই রোগের সবচেয়ে বড় লক্ষণ। নিজের ওপর আস্থা হারাতে থাকে। মনোবল কমে যায়। একই মানুষের মধ্যে যদি কখনও ডিপ্রেশন, আবার কখনও হাইপোম্যানিয়ার পর্ব চলতে থাকে, তাকে বলা হয় বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার । মন ও মেজাজ সবসময় দুই চরম স্থিতিতে থাকে। হয় প্রচণ্ড উচ্ছ্বাস না হলে একেবারে ভগ্ন, বিষাদগ্রস্ত, অবসাদে আচ্ছন্ন। মনের এই অসুখ যে কতটা মারাত্মক হতে পারে সেটা টের পান কাছে থাকা মানুষজনই।
First Aids: বাচ্চার জন্য ফার্স্ট এইড বক্সে কী কী গুছিয়ে রাখবেন, বাবা-মায়েরা জেনে নিন
রোগী বহুজনের মাঝে থাকলেও নিজেকে একা মনে করবে, একাকীত্বে ভুগবে। বাইরের লোকজনের সঙ্গে ব্যবহারে বদল আসবে। মেজাজ খিটখিটে হবে, সবসময়েই বিরক্তি লাগবে। কথা বলতে ইচ্ছে না করা, একই জায়গায় নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকাও অবসাদের লক্ষণ, এর থেকেই মুড ডিসঅর্ডারের মতো রোগ হানা দেয়। মানসিক অবস্থা জটিল হয়ে উঠলে তখন রেকারেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার বা বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মতো সমস্যা দেখা দেয়। আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা দিতে পারে।
ওজন কমবে, খিদে কম, ঘুম হবে না
একটানা অবসাদ, হতাশা থেকে কাজে উৎসাহ হারাবে। এর সঙ্গে ঘুম কমে যাওয়া, খিদে চলে যাওয়ার কারণে ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণও দেখা দেবে। অনেকে আবার বেশি কথা বলা শুরু করে, নিজেকে বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করে। ইনসমনিয়া এই রোগের একটা বড় লক্ষণ।
আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যেমন, নিজের ওপর ভরসা আচমকা বেড়ে যায়, একই কাজ বেশি বেশি করে করতে শুরু করে রোগী। মনোসংযোগে সমস্যা দেখা দেয়। সেক্সুয়াল আর্জও বেড়ে যেতে পারে এই সময়ে।
সারবে কিসে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময় রোগীর মানসিক অবস্থা এতটাই স্পর্শকাতর থাকে যে সামান্য চাপ বা উদ্বেগও ক্ষতি করতে পারে। তাই খুব নরম ব্যবহার করতে হয় রোগীর সঙ্গে, আগলে রাখতে হয় সবসময়। রোগী এই সময় এককীত্বে ভুগতে থাকে। তাই বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা বা কাউন্সেলিং করতে হয়। বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা হাইপোম্যানিয়ায় ভোগা রোগীদের মনের জোর বাড়ানোটা সবচেয়ে আগে জরুরি।
ডিপ্রেশন হলে এক রকম ওষুধ, আবার বাইপোলারের ক্ষেত্রে অন্য চিকিৎসা। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে এক বার দেখেই রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। চিকিৎসককে একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। তাঁর পুরনো রোগগুলো সম্পর্কে জানতে হয়। এই রোগীদের ক্ষেত্রে রিস্ক ফ্যাক্টর অনেক বেশি থাকে। অনেকেই নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তাই সঠিক কাউন্সেলিং দরকার।
নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে ডাক্তারের পরামর্শে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর কাউন্সেলিং করিয়ে ডাক্তারই ওষুধ বদলে দেবেন। রোগীর পরিবারের লোকজনকেও ভূমিকা নিতে হবে। রোগীর মনোবল বাড়াতে হবে, একই সঙ্গে ডাক্তারের গাইডলাইনে থাকতে হবে।