বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ালে উপকার মায়েরও, স্তন্যপান জীবনদায়ী

গুড হেলথ ডেস্ক

জন্মের পর যে কোনও সন্তানেরই প্রথম খাদ্য ও পথ্য হল মায়ের বুকের দুধ। বড় হলে হয়তো আরও অনেক পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে শিশুর পরিচয় ঘটে, কিন্তু সদ্যোজাতর পুষ্টির জন্য মাতৃদুগ্ধের কোনও বিকল্প হয় না।

সদ্যোজাতের জন্য কেন মাতৃদুগ্ধই সেরা?

◆ শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, প্রোটিন ও ফ্যাটের সহজপাচ্য জোগান দেয় মাতৃদুগ্ধ
◆ শিশুকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে বুকের দুধে থাকা অ্যান্টিবডি
◆ জন্মের পরেই শিশুর অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকে সর্বাধিক। সেই ঝুঁকিকে কমিয়ে দিতে পারে স্তন্যপান
◆ জন্মের প্রথম ৬ মাস শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে বিভিন্ন সংক্রমণ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়েরিয়া ইত্যাদির সম্ভাবনা কমে
◆ মাতৃদুগ্ধে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে, যা পরবর্তিকালে আই কিউ বাড়াতে সাহায্য করে
◆ বাচ্চার সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে ও ওজন বাড়াতে মায়ের বুকের দুধের বিশাল ভূমিকা রয়েছে
◆ মায়ের বুকের দুধ টেনে খাওয়ার ফলে সন্তানের চোয়াল শক্ত হয়, মুখের পেশীগুলোর বিকাশ ঠিকমতো হওয়ার সুযোগ পায়

baby care

স্তন্যপানে শুধু যে শিশুর উপকার হয়, এমনটা নয়। স্তন্যপান করালে মায়েরও অনেক স্বাস্থ্যগত উপকার হয়। এখন অনেক নতুন মায়েরাই শারীরিক গঠন নষ্ট হওয়ার ভয়ে সন্তানকে স্তন্যপান করাতে চান না।  তবে স্তন্যপানের উপকারিতাগুলো জানলে সেই ধারণা থেকে সরে আসা যায়। জন্মের পরে প্রথম ছ’মাস শুধু স্তন্যপান করালে শিশুর যথাযথ পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধি তো বটেই, মায়ের ওজন বাড়া বা ফিগার নষ্ট হওয়ার বদলে বরং তাঁদেরও ফ্যাট ঝরে অনেক তাড়াতাড়ি। এ নিয়ে প্রচারও হয়েছে নিয়মিত। গত ২২ বছর ধরে বিশ্ব জুড়ে ফি বছর অগস্ট মাসের ১ থেকে ৭ তারিখ সপ্তাহভর সচেতনতা শিবির, আলোচনাচক্র। কিন্তু বোঝানো আর সচেতনতায় মিলমিশ হচ্ছিল না সে ভাবে। ফলে ছ’মাসের ঢের আগেই শিশুকে কৃত্রিম দুধ, বাজারচলতি শিশুখাদ্য বা অন্য খাবারে অভ্যস্ত করিয়ে ফেলতেন বহু মা-ই।

এখন পুরনো ধারণাগুলো ভাঙার সময় এসেছে।

● বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়েরও কিছুটা ক্যালরি ক্ষয় হয়, ফলে প্রসবকালীন বাড়তি ওজন কমে
● বুকের দুধ খাওয়ালে নিঃসৃত হয় অক্সিটোসিন হরমোন, যা জরায়ুকে গর্ভধারণের আগের আকারে ফেরাতে সাহায্য করে
● শিশুকে স্তন্যপান করালে স্তন এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে কমে
● কমে অস্টিওপোরেসিসের সম্ভাবনাও
● সর্বোপরি, স্তন্যপান করানোর মধ্য দিয়ে সদ্যোজাতের সঙ্গে মায়ের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়, যা অমূল্য ও তুলনাহীন।