
দিনভর অফিসের ব্যস্ততা, ঘর-বাইরে সামলে মেয়েরা শরীরের যত্ন নেবেন কী করে?
গুড হেলথ ডেস্ক
মেয়েরা সত্যিই দশভূজা। ঘরে-বাইরে দু’দিকেই সমান করে দায়িত্ব সামলাতে হয় (Women Health)। কেউ অফিস সামলে, কেউ ব্যবসা দেখে আবার বাড়ি ফিরে সংসারের হাজারো কাজে মন দিতে হয়। পরিবার-পরিজনের দেখাশোনার দায়িত্ব, সন্তান সামলানো সব করে আর নিজের শরীরের দিকে তাকানোর সময় হয় না বেশিরভাগ মেয়েরই। ফলে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, পর্যাপ্ত জল না খাওয়া, শরীরচর্চার অভাবে শরীরের অবনতি হতে থাকে দ্রুত। হাতে সময় নেই, কাজেই সব কাজ সামলে নিজের জন্য জাঙ্ক ফুড বা রাস্তা থেকে কিছু একটা কিনে খেয়ে নেওয়া অনেক সহজ। আর তাতেই ফ্যাট, কোলেস্টেরল বেড়ে যায় চড়চড় করে।
এমনিতেই মেয়েদের শরীরে (Women Health) পেশীর তুলনায় ফ্যাট বেশি থাকে৷ সেই পেশীও যদি ক্ষইতে শুরু করে, ক্যালোরি খরচের হার কমে যায়৷ টানটান ভাব কমে শরীরের৷ চর্বি জমে থলথলে হতে শুরু করে৷ পেটে–কোমরে জমে বেশি৷ জমে শরীরের ভিতরের প্রত্যঙ্গে৷ তার হাত ধরে বাড়ে ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, ফ্যাটি লিভার, অস্টিওপোরোসিস ইত্যাদি লাইফস্টাইল ডিজিজের আশঙ্কা। তাছাড়া দিনভর স্ট্রেস, টেনশন, কাজের চাপের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনের নানা সমস্যা মানসিক উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়। শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনের ওপরেও চাপ বাড়ে, যার প্রভাব পড়ে বহিরঙ্গে। অল্প বয়সেই বলিরেখা, শরীর ভেঙে পড়া, আরও নানা অসুখ বাসা বাঁধতে থাকে। মেনোপজের সময় চলে এলে বাড়তি সতর্কতা দরকার হয়। সে সময়েও মেয়েরা নিজেদের যত্ন না নিলে বিপদ বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়েরা যদি নিজের দিকে একটু খেয়াল রাখে তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হয়। কিছু জিনিস মাথায় রেখে চললে সহজেই সুস্থ থাকা যায় (Women Health)।
ব্যস্তাতার মধ্যেও সারাদিন যা যা মেনে চলবেন–
১) প্রথমেই আসবে জল। পর্যাপ্ত জল খাওয়ার উপকারিতা অবিশ্বাস্য। খেয়াল করে কিছু ক্ষণ অন্তর খেতে হবে জল, যাতে ডিহাইড্রেশন না হয় কোনওভাবেই। দিনে ৩-৪ লিটার জল খেতেই হবে।
মেয়েদের কিডনির অসুখের ঝুঁকি বেশি। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ মহিলাদেরই বেশি হয়। কাজেই শরীর হাইড্রেটেড রাখতে হবে সব সময়।
চশমা ছেড়ে লেন্স পরছেন? ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম না জানলে চোখের ক্ষতি
২) ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেলে আমরা অনেকেই কাজের চাপে তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই। ব্রেকফাস্ট স্কিপ করেই। প্রাতরাশ হল দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এটি বাদ দিলে চলবে না। সকালে রাখতে হবে ফাইবার জাতীয় খাবার ও ভাল পরিমাণ গ্লুকোজ। এ ছাড়াও থাকা চাই প্রোটিন, ভিটামিন ও ক্যালশিয়াম (Women Health)।

৪) শরীরের সঙ্গে মনও ভাল রাখা দরকার (Women Health)। তার জন্য নিয়ম করে অন্তত ১৫ মিনিট মেডিটেশন করুন। সারাদিনে চেষ্টা করুন নিজের পছন্দের কিছু কাজ করার। ছবি আঁকা, বই পড়া, বাগান করা, সেলাই বা হাতের নানা কাজ যা পছন্দ সেটাই করুন। এতে অবসাদ প্রবণতা কমবে। মেন্টাল স্ট্রেসও দূর হবে।
৫) শরীর সুস্থ রাখতে এক জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে এই ব্যস্ত জীবনে ঘুমের বড়ই অভাব থেকে যায়। ঘুমের ঘাটতি নানা শারীরিক সমস্যার অন্যতম কারণ। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৬) মধু,ভাত, চকোলেট ও কুকিজের মতো কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার মহিলারা এড়িয়ে চললেই ভাল। এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
৭) বিভিন্ন ধরনের বাদামে ‘গুড ফ্যাট’ এবং প্রোটিন থাকে। আমন্ড, পেস্তা, ওয়ালনাট, কাজু বাদাম, চিনে বাদাম— সবই স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে পারেন। কিছু বাদাম রাতে ভিজিয়ে রাখলে সকালে ঘুম থেকে উঠে জলখাবারের আগে খেয়ে নিন। অনেক বেশি উপকার পাবেন। সকালের ব্যস্ততায় চটজলদি খাওয়াও হয়ে যাবে।
৮) দিনে বার ছয়েক খাবেন৷ প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাবার৷ ডিনার করবেন আর্লি৷
৯) বাইরের খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন (Women Health)। জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড, ডিপ ফ্রায়েড মাংস কম খাওয়াই ভাল। যে কোনও রকম নরম পানীয় ও অ্য়ালকোহলের মাত্রা কমিয়ে দিন। ধূমপান করলে তাতে লাগাম টানুন।