
হৃদরোগ বা হার্টের অসুখের বিষয়টি আগে একচেটিয়া ছিল বয়স্কদেরই। কিন্তু সময় যত এগোচ্ছে, ততই ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে সমস্ত হিসেবনিকেশ। শুধু কি বয়সকালেই? এখন হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারাচ্ছেন ৩০-এরও কম বয়সীরাও। এমনকি হার্টের ব্যামোতে এতদিন আমরা বেশি ভুগতে দেখেছি পুরুষদের। কিন্তু এখন অন্য সব কিছুর মতো এ বিষয়েও মহিলারা (Women Health) বেশ এগিয়ে গেছেন।
আসলে হৃদরোগ অত্যন্ত জটিল একটি শারীরিক সমস্যা। হার্টের মতো এমন সংবেদনশীল অঙ্গের কাজে সামান্য কোনও বিচ্যুতি হলেই বিশাল অঘটন ঘটে যেতে পারে। হতে পারে প্রাণ সংশয়। সত্যি বলতে, পুরুষ ও মহিলাদের (Women Health) হার্টের মধ্যে গঠনগত ও কার্যগত কোনও তফাৎ তেমন নেই। তবে বেশ কিছু আনুসঙ্গিক ফ্যাক্টরস ইদানীং মহিলাদের হার্টের অসুখ দিনে দিনে বাড়িয়ে তুলছে।
কী কী কারণে মহিলাদের হৃদরোগের প্রবণতা বাড়ছে?
◆ মেদাধিক্য বা ওবেসিটি হার্টের অসুখের অন্যতম রিস্ক ফ্যাক্টর। আর এদিকে ভারতীয় মহিলাদের সিংহভাগই ঝুঁকে মেদাধিক্যের দিকে। প্রযুক্তির উন্নতিতে আমাদের শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রম কমে গিয়েছে, অথচ বেড়েছে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। এতে মহিলারা আরও বেশি মুটিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বাড়ছে হৃদরোগের প্রবণতা।
◆ বিগত কয়েক দশক ধরে অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিকের সমস্যা বহুগুণে বেড়েছে মহিলাদের মধ্যে। দেখা যাচ্ছে, প্রচুর মহিলাদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মেনোপজ হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে মেনোপজ হলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়, যা পরোক্ষভাবে হৃদয়ের ওপর কুপ্রভাব ফেলে।
◆ পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেক মহিলারাও এখন ধূমপানে আসক্ত (Women Health) । ধূমপান শরীরের জন্য কোনও ভাবেই সুস্বাস্থ্যের ইঙ্গিতবাহী নয়। এতে হার্টের ওপর চাপ তো পড়েই। পাশাপাশি, ধূমপানের কারণেও মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কম হয়।
◆ পুরুষদের মতোই এখন ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মহিলা রোগীরা রয়েছেন। এই সমস্ত লাইফস্টাইল ডিজিজগুলোর সূচনা কিন্তু হয় অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়ার অভ্যেস থেকে। এই অসুখগুলোও হার্টের অসুখের রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। তাই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সঠিক ডায়েট মেনে চলা একান্ত কাম্য।