
যোনি নেই জন্ম থেকে, গঠন অসম্পূর্ণ, ভ্যাজাইনোপ্লাস্টিতে অসাধ্য সাধন করছেন ডাক্তাররা
যোনি ছিল না। জরায়ুর গঠনও অসম্পূর্ণ। বয়স বাড়লেও ঋতুস্রাব হত না তরুণীর। স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণের ক্ষমতাও ছিল না। প্রচণ্ড পেটব্যথায় কাতর তরুণীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরেই সমস্যাটা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা দেখেন, মেয়েটির যোনিদ্বার নেই। ডিম্বাশয়-ফ্য়ালোপিয়ান টিউব থাকলেও জরায়ু নেই। কৃত্রিম ভাবে যোনি ও জরায়ু তৈরি করে মেয়েটিকে নতুন জীবন দেন ডাক্তারবাবুরা। যে পদ্ধতিতে এই সার্জারি হয় তার নাম ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি (vaginoplasty)। সহজ করে বলতে গেলে ভ্যাজাইনা বা যোনির প্লাস্টিক সার্জারি।
ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি (vaginoplasty) কী?
ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি মানে হল ভ্যাজাইনা বা যোনির প্লাস্টিক সার্জারি। একে ভ্যাজাইনাল ক্যানালের প্লাস্টিক সার্জারিও বলা হয়। অপরিণত যোনি বা ক্যানেলের গঠনের খামতি থাকলে সার্জারি করে সেই ঘাটতি মেটানো হয়। আর জন্ম থেকেই যাঁদের যোনি নেই, কখনও ঋতুস্রাব হয়নি, ইন্টারকোর্স কোনও ভাবেই সম্ভব নয়, ডাক্তারি পরিভাষায় তাকে বলে ‘ব্লাইন্ড ভ্যাজাইনা’। এমন অবস্থা থাকলে তখন কৃত্রিমভাবে যোনি তৈরি করে দেন ডাক্তাররা।
কারা এই সার্জারি করান?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশিরভাগই মেডিক্যাল, কসমেটিস সার্জারি তেমনভাবে হয় না। যোনি নেই, যোনির গঠন অসম্পূর্ণ বা সন্তান হওয়ার পরে যোনির গঠন আলগা হয়ে ঝুলে গেছে, তেমন পরিস্থিতিতেই ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি (vaginoplasty) করাতে যান মহিলারা। এই সার্জারি করালে ভ্যাজাইনাল ক্যানালের গঠনও শক্তপোক্ত হয়।
তাছাড়া বায়োলজিক্যালি পুরুষ অথচ মহিলা হতে চাইছেন এমন অনেকেই ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি করান।
আবার জন্মগতভাবে যোনি নেই, মায়ার-রকিটানস্কি-কাস্টার-হোজার সিনড্রোমে আক্রান্ত মহিলাদের এই সার্জারি করাতে হয়। যে মহিলাদের যোনি থাকে না এবং জরায়ুর গঠন অসম্পূর্ণ তাদের এই সিনড্রোম হতে দেখা যায়। রকিটানস্কি সিনড্রোম থাকলে ঋতুস্রাব হয় না, যৌন মিলন করা অসম্ভব ব্যাপার। একে বলা হয় Congenital Malformation। জরায়ু যেখান থেকে তৈরি হয় সেই মুলেরিয়ান চ্যানেল বা ডাক্ট এ ক্ষেত্রে তৈরি হয় না। ফলে যৌনাঙ্গের গঠনও থাকে অসম্পূর্ণ থাকে। তখন কৃত্রিম উপায় যোনি তৈরি করার দরকার পড়ে। এই সার্জারিও অত্যন্ত জটিল। ল্যাপরোস্কোপিক ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি (Vaginoplasty )-র সাহায্যে নতুন করে যৌনাঙ্গ ও জরায়ু তৈরি করে দেন ডাক্তারবাবুরা।
কতটা নিরাপদ ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি?
সার্জিক্যাল রিস্ক যে কোনও অস্ত্রোপচারেই থাকে। এক্ষেত্রেও রয়েছে। তবে সাফল্যের (vaginoplasty) হার বেশি।
পোস্ট-সার্জারি পর্বে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। তবে ডাক্তারের পরামর্শে চললে এই ভয় থাকে না।
অপারেশনের তিন দিনের মধ্যে নর্মাল লাইফে ফিরতে পারেন রোগী, সাত দিনের মধ্যে স্বাভাবিক যৌনজীবনেও ফেরাটাও সমস্যার নয়।
আগে থেকে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কিডনির অসুখ বা কোনও রকম কোমর্বিডিটি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।