
Heart Attack: জেল দিয়েই হার্টের ক্ষত সারবে! অ্যাটাকের পরে দুর্বল হৃৎপিণ্ড চাঙ্গা হবে
গুড হেলথ ডেস্ক
গোটা বিশ্বে মৃত্যুর পরিসংখ্যান বের করতে গেলে সবথেকে বেশি যে কারণে নজর পড়ে, তা হল হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack)। প্রতি দিন কত মানুষের যে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ চলে যায়, তার কোনও হিসেব নেই। হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack) রোগীকে পোস্ট-সার্জারি পর্বে অনেক নিয়ম মানতে হয়। ডাক্তারের কথা মেনে নিয়মে চলতে হয়। অ্য়াটাকের কারণে হার্টের কোষগুলির যে ক্ষতি হয় তা সারিয়ে তোলার জন্য নানা রকম ওষুধ দেন ডাক্তাররা। সারতে সময়ও লাগে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন এমন এক রকমের জেল তৈরি করেছেন যা হার্টে সরাসরি ইনজেক্ট করলে এই ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব।
ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা এই জেল নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁরা বলছেন, হৃদরোগ একদিনে আসে না। ধীরে ধীরে হার্টের স্পন্দন ও রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে। হার্টের কোষে মেদ জমেও সাজন অ্যাটাক আসতে পারে। হৃদরোগের পরে হার্টের কোষ-কলাতে যে ক্ষতি হয় দ্রুত মেরামত করার জন্যই এই জেল তৈরি করা হয়েছে। স্পন্দিত হার্টেই এই জেল ইনজেক্ট করা যাবে। ঠিক যে যে জায়গায় কোষের ক্ষতি হয়েছে সেখানে নতুন কোষ তৈরি করবে এই জেল। হৃদপেশির ক্ষতও সারিয়ে তুলবে।
অনবরত স্পন্দিত হয় হার্ট, সামান্য অযত্নেই বড় ক্ষতি হয়
হৃদরোগ (Heart Attack) বয়স বাছবিছার করে আসে না। কোনও মানুষ যখন জন্মায়, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে তার হার্ট কাজ করতে শুরু করে। বলা ভাল, তারও আগে থেকে কাজ করতে শুরু করে। সেই যে শুরু, শরীরের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই অঙ্গের বিশ্রাম নেই। শরীরের অন্য সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই কোনও না কোনও সময় থামে, রেস্ট পায়, সে ঘুমের সময় হোক বা বিশ্রামের সময়। কিন্তু হার্টের ছুটি নেই।
কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, জীবনযাত্রায় অসংযম, খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব ও নেশার প্রকোপ হৃদরোগের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বে যদি চারটি হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে একটি হবে এ দেশে। আচমকা হার্টের অন্যান্য দিক থেকে হৃদস্পন্দন একই সঙ্গে তৈরি হয়, ফলে হৃদস্পন্দন অনেক বেড়ে যায়, ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া দেখা যায়। পাম্পিং প্রায় বন্ধ হয়ে যায় যাকে বলে ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন। অক্সিজেনের অভাবে প্রথমে জ্ঞান চলে যায়, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যুও হতে পারে রোগীর। হার্ট অ্যাটাক হয়ে হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা ৩৫ শতাংশের নীচে নেমে গেলে বিপদের আশঙ্কা বেশি৷ সঙ্গে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন (Heart Attack) থাকলে আরও বিপদ। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ দরকার।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীর দ্রুত চিকিসা দরকার
হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় সামান্য দেরি মানেই চিকিৎসাকে অবহেলা করা। হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack) লক্ষণ দেওয়ার পর থেকে ১ ঘণ্টা অবধি সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকেই বলে ‘গোল্ডেন আওয়ার’। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে রোগীকে পরীক্ষা করা হয়, ইসিজি, ইকো-কার্ডিয়াম শুরু করেন ডাক্তাররা।
হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে দ্রুত সুস্থ করতে সবচেয়ে ভাল ও কার্যকরি চিকিৎসা হল প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করে হার্টের আর্টারির কোথায়, কতটা ব্লক আছে সেটা দেখার পর প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়। করোনারিতে জমা রক্তের ক্লট গলানোর জন্য সরাসরি ভেন–এ ইঞ্জেকশন (থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি) দেওয়া হয়।
Glaucoma: অন্ধত্ব সারানো যাবে? গ্লুকোমার জন্য দায়ী জিনের বিন্যাস খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা
হার্ট অ্যাটাকের রোগী যদি দেরি করে ডাক্তারের কাছে যান, হার্টের অবস্থা বেশি খারাপ থাকে, তাহলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে কিছুটা হার্ট-ফাংশন ঠিক করা হয়। তবে তখনও রোগীর হার্ট দুর্বলই থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমনটাই দেখা যায়। যদি দেখা যায় সার্জারির পরে হার্ট ৪০-৪৫ শতাংশ কাজ করছে, তাহলে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরে সেইমতো ওষুধপত্র, এক্সারসাইজ দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দুর্বল হার্টকে ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতেই এই জেল তৈরি করা হয়েছে যা অ্যামাইনো অ্যাসিড চেইন দিয়ে তৈরি। এই অ্য়ামাইনো অ্যাসিড চেইনকে বলে পেপটাইড যা দুটি প্রোটিনের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করে। এই জেল ইনজেক্ট করে হার্টের রোগীকে ফের তরতাজা করে তোলা সম্ভব।