
একদিকে করোনার ভয়, তার মধ্যেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া বাড়ছে। ভাইরাসের সংক্রমণ এখন চেনা আতঙ্ক। সর্দি-কাশি-জ্বর, ডায়ারিয়া, পেটের হাজারো সমস্যা তো আছেই (Street Food)। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, প্রেশার, কোলেস্টেরল। কমবয়সিরা ভুগছে হার্টের রোগে। কম ঘুম, মানসিক সমস্যাও বাড়ছে। এই সবকিছুই কোনও না কোনওভাবে জড়িত আমাদের খাদ্যাভাসের সঙ্গে। যে সময়টা স্ট্রিড ফুডের এত রমরমা ছিল না, বাড়িতে রান্না করা খাবারেই বেশি রুচি রাখত মানুষজন, সেই সময় অসুখবিসুখ হলেও এত রকম সংক্রমণজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল না। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বেশি ছিল মানুষের। এখন সেখানে প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক দুর্বল। অল্পেই জাঁকিয়ে বসছে জীবাণু ঘটিত নানা রোগ।
স্ট্রিড ফুড থেকে দূরে থাকুন, শরীর সারবে প্রাকৃতিকভাবেই
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। পেটের রোগ যতই নাজেহাল করুক, ফুটপাথের ফুডে আবেগের কমতি নেই এতটুকুও (Street Food)।
বিরিয়ানি থেকে পোলাও, ফিশফ্রাই, মোমো, রোল-চাউমিন, নানা ধরনের তেলেভাজা, মোগলাই থেকে দক্ষিণী খাবার এখন সবই সস্তায় রাস্তাতেই পাওয়া যায়। খিদের মুখে তাই খেয়ে নিচ্ছেন লোকজন, বাচ্চাদেরও খাওয়াচ্ছেন। বাড়ি থেকে শরবত বানিয়ে সঙ্গে রাখার ঝক্কিটুকুও কেউ নিতে চান না। তেষ্টা মেটাতে তাই ভরসা রাস্তার শরবত, লস্যি, নানা রকম ঠান্ডা পানীয়। সেই সঙ্গে কাটা ফলের ঢালাও বিক্রি তো আছেই। এই স্ট্রিড ফুড শরীরের জন্য যে কতটা মারাত্মক হতে পারে তা জেনেবুঝেও সচেতনতা আসে না। একদিকে ডায়েরিয়া, অজানা জ্বর নিয়ে হূলস্থূল চলছে, কিন্তু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার খাওয়ার বিরাম নেই (Street Food)। ফলে নানারকম জীবাণু খাবার ও পানীয় থেকেই হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ছে শরীরে।
সেদ্ধ খাবার ভাজাভুজির তুলনায় কম ক্ষতি করে এমনটা ভেবে মোমো অনেকেই খান, কিন্তু ব্যাপারটা হল সস্তায় মোমো বানাতে যে ময়দা ব্যবহার করা হয় তাতে মেশানো হয় বেঞ্জাইল পারক্সাইড। শুধু তাই নয়, মোমোর গায়ে তেলা ভাব আনতে মেশানো হয় অ্যালোক্সেনের মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক, লিভারের জন্য মারাত্মক বিষ, কৃমির সমস্যা বাড়ায়।
ফুচকায় যে জল মেশানো হয় তার সঙ্গে কতরকম যে ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢোকে তার ইয়ত্তা নেই। দোকানদার নিজে কতবার হাত পরিষ্কার করেন তা বলাই বাহুল্য, আর এই নোংরা হাতেই খাবারে মিশে যায় সালমোনেল্লা, ই কোলাই, এস অরিয়াসের মতো ব্যাকটেরিয়া। জলবাহিত হয়ে শরীরে ঢোকে সালমোনেল্লা, ভিব্রিও কলেরি, যে মারাত্মক ডায়েরিয়ার জন্য দায়ী।
রাস্তার রোল, চাউমিন, কাটলেট থেকে নানারকম প্রসেসড ফুডের রঙ ও তাতে থাকা রাসায়নিক উপাদান ক্যানসারের কারণ হয়ে উঠছে (Street Food)। এখন তাই ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ক্যানসার।
ফাস্ট ফুডের প্যাকেজিং এবং সংরক্ষণের জন্য যে প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয় তা এককথায় ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এই সব খাবারের প্যাকেজিংয়ে ব্যবহার করা হয় গ্রিজ প্রুফ পেপার। যার মধ্যে থাকা ফ্লোরিনেটেড যৌগ বাড়িয়ে দেয় ক্যানসারের ঝুঁকি।
তাই সতর্কতা জরুরি এখন থেকেই। স্ট্রিট ফুডের গ্ল্যামারে ভুলে আর বিপদ বাড়াবেন না। খাদ্যাভ্যাস বদলান, নিয়ম মানুন, রোগ নিজে থেকেই দূরে পালাবে।