
রোগ যতটা না শরীরে, তার চেয়ে অনেক বেশি মনে। স্ট্রেসের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে নানা লাইফস্টাইল ডিজিজ। রোজকার ছোটাছুটির জীবনে ক্লান্তি, মানসিক চাপ আর শরীরচর্চার অনীহা, সব মিলিয়ে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে গেছে। একদিকে কোমরে-পেটে মেদ জমছে, অন্যদিকে প্রেশার, সুগার, অনিদ্রার মতো রোগ ডালপালা মেলছে। শরীর তো ভাঙছেই, মনেও শান্তি নেই। অথচ শরীর-মন একসঙ্গে তরতাজা রাখতে যোগাসনের (Weight Loss) চেয়ে ভাল উপায় আর নেই। যোগব্যায়াম করতে হবে শুনলেই পিছিয়ে যান অনেকেই। কিন্তু সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি রয়েছে ভারতীয় যোগেই।
শরীরে চর্বি জমলে কিছু দিন জোরদার হাঁটাহাঁটি, ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া আর পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে কিছুটা মেদ কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন অনেকেই। এতে শরীরের সার্বিক ওজন কমলেও পেটের মেদ সব সময় এতে কব্জায় আসে না। এমনিতেই ভুঁড়ি কমাতে সময় ও পরিশ্রম দুই-ই বেশি লাগে।
কোন কোন ব্যায়ামে দ্রুত মেদ ঝরবে জেনে নিন–
১) ক্যাট-কাউ পোজ়
মেরুদণ্ডের খুব ভাল ব্যায়াম। স্পাইনের স্ট্রেচিং হয় এই আসনে। একই সঙ্গে পেটে পেশির ব্যায়াম হয়। তলপেটের মেদ ঝরাতে খুব ভাল এই আসন (Weight Loss)।
কীভাবে করতে হবে: দুই হাত মাটিতে রেখে হাঁটু মুড়ে সোজা হয়ে বসতে হবে। অনেকটা হামাগুড়ি দেওয়ার সময় যেভাবে বসা হয়। হাতের কব্জি ও কাঁধ যেন সমান্তরালে থাকে, আবার দুই হাঁটু ও হিপ যেন সমান্তরাল ভাবে থাকে। এটা হল কাউ পোজ়। এই পোজ়ে শরীর টানটান থাকবে, মাথা ঝুঁকে থাকবে মাটির দিকে। হাল্কা করে শ্বাস নিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। পেটের পেশিতে টান পড়বে।
কাউ পোজ়ের সঙ্গেই ক্যাট পোজ় করতে গেলে মাথা তুলতে হবে। কাউ পোজ়ে যেমন পেট ও মাথা ঝুঁকে থাকবে মাটির দিকে, ক্যাট পোজ়ে আবার পিঠ উঁচু করতে হবে। কোমর ও পেট টানটান থাকবে। ১৫-২০ মিনিট এই দুই পোজ় পাল্টাপাল্টি করে করতে হবে।
২) সূর্য নমস্কার: মেদ ঝরানোর (Weight Loss) জন্য আদর্শ। মোট ১২ রকম ভঙ্গির সহযোগে এই ব্যায়ামটি নিয়মিত করতে পারলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই আসনটি করার সময়ে শরীরের সব ক’টি অঙ্গের সঞ্চালন হয়। ওজন ঝরানোর পাশাপাশি শরীরের নমনীয়তা বজায় রাখতেও এই আসন করতে পারেন।
২) টেবিল-টপ ক্রাঞ্চেস
পেটের খুব ভাল ব্যায়াম। একই সঙ্গে পা ও হাতের স্ট্রেচিংও হয়। কোমর, পেট, মেরুদণ্ড টানটান থাকে। যে কোনও ব্যথা দূর হয়। মেদ তো কমেই। পিঠের অতিরিক্ত চর্বি কমে গিয়ে শরীর টানটান হয়।
কী করে করতে হবে: চিৎ হয়ে শুয়ে পিঠের উপর ভর দিয়ে দুই পা ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে তুলতে হবে। হাঁটু ভাঁজ করা থাকবে। এরপর পেটের পেশির উপর চাপ দিয়ে ধীরে ধীরে মাথা তুলতে হবে যতটা সম্ভব। মাথার পিছনে দুই হাত থাকবে। কনুই থাকবে ছড়ানো টানটান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেটের পেশিতে চাপ দিয়ে যতটা মাথা-বুক তোলা যাবে ততই ভাল (Weight Loss)। তবে হাতে ভর দিয়ে মাথা তোলা একেবারেই ঠিক নয়।
৪) প্লাঙ্ক: পেটের পেশিতে টান পড়ায় এই ব্যায়ামে ভুঁড়ি কমবেই, পেট ভিতরে টেনে রাখলে ফলাফল আরও ভাল পাবেন। প্রতি তিনটে প্লাঙ্কে একটা করে সেট হয়। চেষ্টা করুন তিনটে সেট অভ্যাস করতে।
৫) লেগ কিক: পেটের মেদ কমাতে প্লাঙ্কের মতোই আর এক উপকারী ব্যায়াম লেগ কিক। উপুর হয়ে শুয়ে দুই পা ভাঁজ করে পিঠের কাছে আনুন। এ বার দুই হাত দিয়ে পায়ের পাতা ছোঁওয়ার চেষ্টা করুন। এই সময় বুক থেকে মাথা ম্যাট ছেড়ে উপরের দিকে উঠবে। দশ সেকেন্ড ধরে রেখে শরীর স্বাভাবিক করুন।